অনলাইন ডেস্ক : উত্তাপহীন রংপুর সদর-৩ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পুত্র রাহগির আলম মাহী সাদ এরশাদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৮৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র রিটা রহমান (ধানের শীষ) পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৪৭ ভোট।জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯৮৪ ভোট। এর আগে আমেজহীনভাবে সম্পন্ন হলো রংপুর সদর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন। গতকাল সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও অনেক কেন্দ্রে ১০টার পর থেকে দু-একজনকে আসতে দেখা গেছে। রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ, আরসিসিআই স্কুল এন্ড কলেজ, খাসবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরেজমিন পরির্দশনে দেখা গেছে, ভোটশূন্য কেন্দ্র। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ আনসার বাহিনী থাকলেও তাদেরকে খোশ গল্প করতে দেখা গেছে। রংপুর আরসিসিআই স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে দুপুর ২টায় ২হাজার ৯৬৪ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ২১১টি।

এ ব্যাপারে প্রিজাইডিং অফিসার উত্তম কুমার সরকার বলেন, ভোট প্রদানে হার ৭ দশমিক ১২। বিকেল পর্যন্ত অন্যান্য কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা জানান প্রায় ২০ থেকে ২৫ ভাগ ভোট প্রদান হয়েছে। এদিকে গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ (মাছ) ১ হাজার ৬৬২ ভোট, এনপিপি’র শফিউল আলম (আম) ৬১১ ভোট ও খেলাফত মজলিসের মো. তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) ৯২৪ ভোট পেয়েছেন।

এদিকে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ দিয়ে অভিযান পরিচালনা ও পোস্টার ছিঁড়ে দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র প্রার্থী রিটা রহমান। তিনি গতকাল শনিবার রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের জানান, ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারণায় থাকায় কারমাইকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। ভোটের আগের রাতে সদর উপজেলার সকল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে। আওয়ামী লীগের উপজেলার সভাপতি বিএনপি নেতাকর্মীদের ফোন করে বাড়ি থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলেছে। এতে করেই পরিষ্কার হওয়া যায়, পুলিশ দিয়ে নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা উঠে গেছে। গত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে মানুষ দেখেছে নির্বাচনে কি ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। গোটা বিশ্বের মানুষ এটার স্বাক্ষী। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের পক্ষপাতমূলক আচরণ দেশের নাগরিক ও রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক। মানুষের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা না থাকলেও একই নির্বাচন কমিশন, একইভাবে নির্বাচন করছে। আমাদের উপর ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ইভিএমে নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনে বারবার অভিযোগ দিলেও আমরা কোন ফল পাইনি। আমরা নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছি না। ইউনিয়নগুলোতে আমাদের পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি সামসুজ্জামান সামু, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম জীমসহ অন্যরা।