অনলাইন ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি বলেছেন, কানাডা এবং বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিরাজমান। ১৯৭২ সালে এ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরপরই স্বীকৃতি প্রদান দেয় কানাডা। কানাডা বাংলাদেশের ভালো বন্ধুপ্রতিম দেশ।

গত সোমবার কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে তাকে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অটোয়ার হাইকমিশনার ডা.খলিলুর রহমানসহ হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুই দেশেই গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিরাজমান। গণতন্ত্র,স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের প্রয়োগ ইত্যাদি মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত এ দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক মূলত বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, উন্নয়নমূলক সহযোগিতা, অভিবাসন প্রভৃতি বিষয়ের উপর বিশেষ লক্ষ্য রাখে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে কানাডার উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে ছিল পুনর্নির্মাণ এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমে উল্লেখ্যযোগ্য সহযোগিতা করে। গণতন্ত্র ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের উদ্যোগ ও স্পৃহাকে বরাবরই কানাডা প্রশংসা করে এসেছে।
ডা. মুরাদ হাসান বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে হবে ও দেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ এখন নিরাপদ দেশ। যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজমান, দেশে এখন একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে, যেখানে যে কোনো ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিবেশ রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার সর্বাত্বক সহযোগিতা করছে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের সাথে কানাডার বাণিজ্য সম্ভাবনার খাতগুলো চিহ্নিত করে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে হবে। তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করতে হবে। দুই দেশের মাঝে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও দৃঢ়করণের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে হাইকমিশনকে। কানাডায় হিমায়িত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদা রয়েছে; আর বাংলাদেশের এই দুটি খাতেই রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কানাডা বাংলাদেশে শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশের সাথে যৌথ অংশিদারিত্বে কাজ করতে ইতোমধ্যে আগ্রহব্যক্ত করেছেন।

বাংলাদেশের সাথে কানাডার সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ, যার গভীরতা গত পঁয়তাল্লিশ বছরে আরো বেড়েছে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালাভের সময় রাজনৈতিক সম্পর্ক যাত্রা শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কানাডা সরকার, জনগণ এবং মিডিয়া বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছিল। কানাডা সেই সকল দেশের মধ্যে একটি যারা বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরপরই (১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৭২) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। এর পরেই ১৯৭২ সালে মে মাসে বাংলাদেশ কানাডায় রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে এবং কানাডা বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয় ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে ধীরে ধীরে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। রাজনৈতিক সম্পর্কও কমনওয়েলথ এবং নানাবিধ ইউএন কর্মকাণ্ডে বরাবরের মতই সহযোগিতামূলক ছিল।