আকতার হোসেন
মোটামুটি ছিমছাম পরিচিতি ছিল তোমার। জল সাঁতার দিতে পারতে। গাছে চড়ে নারকেল পানি খেতে। সাইকেল চালিয়ে যে ছবি পোস্ট করেছিলেন তাতে ৯৯৯টা লাইক পেয়েছিলে।
এখন আছে নানান ভ্রুকুটি। তোমার নামে দু’চারটা প্যারডি। তবুও প্রতিদিন তুমি রাজপথে আসো। আগে আগে তুমি হাঁটো, পশ্চাতে কিছু অনুরাগী।
সাঁকো বেয়ে প্রতিদিন যাদের কাছে যাও কিংবা কলাই ক্ষেতের পাশে বসে যাদের সাথে ‘মাদুর মিটিং’ কর। সেই মানুষগুলো তোমার লুডুর গুটি।
কিছু ইঁদুর প্রকৃতির লোক লাগিয়ে দিয়েছ চারিদিকে। নূপুরের মত তাদের পায়ে বাজে তোমার সাফল্য।
তা তা থৈ থৈ।
তা তা থৈ থৈ।
রাজমহল থেকে তাজমহল সব যায়গায় সেলফি তুলেছ। তুমি জনপ্রতিনিধি হতে চাও। খোঁজ নির্বাচনে জয়ী হবার ফন্দি। তোমার নিজস্ব কোন দল নেই।
তুমি দল চাও।
বল চাও।
পিপি দলের সদস্য পদ চাও।
স¤প্রতি তুমি বক্তৃতা দিয়েছে কোন ক্যাসিনোর মালিক মহিলা এমন প্রমাণ দিতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিব। অথবা বাংলাদেশে কোন মহিলা রাজাকার নেই। নারী অধিকারের কথা অনেকই বলছে। অনেকে বলতে বলতে বলা ছেড়ে দিয়েছে। প্রচার ওঠেনি তুঙ্গে। তোমাকে নতুন পথ বেছে নিতে হবে। তুমি বল, নারীদের সাথে সাথে পুরুষদেরও সমান সুযোগ দিতে হবে। অথবা নাটক কর।
তোমার প্রতিদ্ব›দ্বী পেটুক পার্টির এমপি। প্রতিপক্ষ ঐ এমপি তোমার নাম দিয়েছে ‘চিকনি চামেলি’। বলেছে সময় এলে সবকিছু দেখতে পাবেন। কিছু সাংবাদিক তাতেই আগ্রহী।
বেশ বুঝতে পারছ লড়াই করে টিকতে হবে। রাজনীতির ‘নীতি’ বুঝতে হবে চট জলদি। তোমার মাথায় একবার ফন্দি এলো তুমি তসলিমা নাসরিনকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি তুলবে। সেট ভাল ছিল। সে জন্য গেলে রওশন এরশাদের কাছে। জেলখানায় যাবার অনুমতি পেলে না। ভবনগুলোর দেওয়াল খুব উঁচু, তাই টপকাতে পারলে না। এরপর গেলে হুজুরের কাছে। আসলে গিয়েছিলে দোয়া চাইতে কিন্তু বললে, কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা হয়েছে হুজুরের সাথে।
হয়ে গেল কাজ। প্রশ্ন আপনা থেকেই জন্ম নিলো।
‘হুজুর কি আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তসলিমা নাসরিনের সাথে কথা বলতে’? তসলিমা নাসরিনের কোন বইতে হুজুরের আপত্তি? দু’একটা বইয়ের নাম বলবেন ম্যাডাম?
এটাই তুমি চেয়েছিলে। ম্যাডাম ডাকে নাকি আসক্তি আছে। মনে করলে চারিদিকে আতশবাজি ফুটতে শুরু করেছ। কোন প্রশ্নের এখন সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলছ, সময় এলে সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পাবেন। যে তোমাকে চিকনি চামেলি বলেছিল সে টাস্কি খেল।
সাবাস! তুমি রাজনীতি শিখে গেছ। এতেও যদি কাজ না হয়। ভ্যানিটিব্যাগে রেখে দিয়েছ ট্রাম কার্ড। যেমন; চরিত্রহীন মুরুব্বির সাথে আমারও চরিত্র নিয়ে কিছু কথা আছে। আমার চরিত্রের সাথে তার চরিত্রের বেশ মিল আছে। আমিও তুলসী ধোয়া না। সময় হলে সব জানতে পারবেন।
আমি বলবো, তুমি একদিন অবশ্যই জনপ্রিয় নেতা হবে।
যদি সত্যি সত্যি তাই চাও
ভুলে যাও দেশ
ভুলে যাও জনগণ
শুধু ফন্দিফিকির কর। লেগে থাক। হাঁটু গেড়ে অন্যের পায়ে গরম তেল মাখ।
রাজনীতির নিজস্ব কিছু নীতি থাকে। আগে সেসব মোটেই জানতে না,আস্তে আস্তে তুমি সব জানতে পারবে। আমাদের দেশে মহিলা নেতৃত্ব হাতে গোনা যায়। কোটা করেও লাভ হচ্ছে না। কেউ প্লট চায়, কেউ বিদেশ যাবার টিকিট পায়। সুযোগ পেলে কেউ ঢুকে যায় ট্রাম্প হাউজে। কেউ আবার অন্যকে দিয়ে খাতা লিখিয়ে সার্টিফিকেট পাবার প্রত্যাশী হয়।
তোমাকে রাজনীতিতে মানাবে ভালো। এতটুকু বিদ্যা দিয়েই শুরু করতে পার। স্বাগতম স্বাগতম। ফুলের মালা গলায় দিলে লাগবে শ্রীমতী গান্ধীর মতন।
না রে বোকা বলিউডের নায়িকা নয়। অনেকগুলো গুলি লেগেছিল তাঁর শরীরে।
আচ্ছা বাদ দাও, পারলে মালালা হও। নাহ সে উগান্ডার লোক হতে যাবে কেন?
ঠিক আছে যার মত হতে ইচ্ছে করে তার মতই হও। তুমি মাথায় ওড়না দাও।