Home সাহিত্য অবাক সূর্যোদয়

অবাক সূর্যোদয়

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>শিউলী জাহান &colon;<&sol;strong> হালকা শীতল বাতাসে শরীরে কাঁপুনি খেলে গেল। দুধশাদা ভারী কাশ্মীরি শালটি ভালো করে টেনে নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে উবু হয়ে তাকাতেই দেখলেন বর্ণ গাড়ি থেকে নামছে। একা। বুকের ভেতর থেকে ছোট্ট একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস নেমে এলো।<br &sol;>&NewLine;থরে থরে জমে থাকা বরফের আলোয় অন্ধকারেও কেমন উজ্জ্বল লাগছে চারিপাশ। বেশ অদ্ভুত এক নীরবতা। কোথাও পাখির কুজন নেই।<br &sol;>&NewLine;কোনো পলাশ নেই&comma; শিমুল ফুলের বুনো গন্ধ নেই। মনটা কেমন আনচান করে ওঠে।<br &sol;>&NewLine;মনে মনে ঠিক করে ফেলেন সামনের বছর ফেব্রুয়ারিতে দেশে যাবেন। হেলেন খুব আপত্তি না করলে দু’মাস থাকবেন।<&sol;p>&NewLine;<p>প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর&comma; রমনা পার্ক&comma; সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়াবেন।<br &sol;>&NewLine;একবার গ্রামের বাড়িতেও যাবেন। কালিগঙ্গা নদীর পাড় ধরে খালি পায়ে খুব করে হাঁটবেন। মজা পাটের গন্ধ তাকে আজও ভীষণ টানে।<br &sol;>&NewLine;প্রতিটা গ্রামেরই একটি নিজস্ব গন্ধ আছে। কাছে গেলেই টের পাওয়া যায়।<br &sol;>&NewLine;ঘরের ভেতর থেকে মা-ছেলের টুকরো কথা কানে আসছে &&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;&colon; আম্মা বুঝতে চেষ্টা করো&comma; বাবার বয়স হয়েছে। শরীরও আজকাল ভালো যাচ্ছে না। এই ঠান্ডায় বাইরে গেলে আরও খারাপ হতে পারে।<&sol;p>&NewLine;<p>&colon; বর্ণ&comma; তোর বাবা যাবেই&comma; অযথা কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। তুই খেয়ে নে। আজ ভাঁপা ইলিশ করেছি আর নারিকেল দিয়ে মুরগির মাংস। একটু দুধপুলিও করেছি।<br &sol;>&NewLine;&colon; আজ আমি খেয়ে এসেছি মা। কাজ থেকে ফিরে খুব খিদে পেয়ে গিয়েছিল। আর ওরাও এই ঠান্ডায় আসতে চাইলো না। তাই একসাথে খেয়ে নিলাম।<br &sol;>&NewLine;&colon; আচ্ছা&comma; তাহলে শুধু একটু দুধপুলি খা। ওরা আসেনি দেখলে তোর বাবা কষ্ট পাবে&comma; জানিস তো।<br &sol;>&NewLine;&colon; ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে&comma; এখন জোর তো করা যায় না।<br &sol;>&NewLine;হেলেন চুপ করে থাকেন। মনে মনে নিজেদের ব্যর্থতাকেই দোষারোপ করেন। রান্নাঘর থেকে দুটো শাদা কাপড়ের ব্যাগ এনে খাবার টেবিলে রাখেন।<&sol;p>&NewLine;<p>সেখানে প্লাস্টিকের বাক্সে খাবার ভরা। সেদিকে তাকিয়ে বর্ণ জিজ্ঞেস করে&comma;<br &sol;>&NewLine;&colon; ফাল্গুনী কি আসবে মা&quest; ওকে ফোন দিয়েছিলাম সাড়া পাইনি।<br &sol;>&NewLine;&colon; হুম&comma; ছোট করে উত্তর দিয়ে চকিতে বারান্দার দিকে তাকান হেলেন। এগিয়ে যান।<br &sol;>&NewLine;&colon; তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছ&quest; ভেতরে এসে কাপড় পরে নাও। বর্ণ এসেছে।<br &sol;>&NewLine;রায়হান ঘরে ঢুকতেই বর্ণ বলে ওঠে&comma; বাবা&comma; আপনার এখন বয়স হয়েছে। বাইরে কী ঠান্ডা বাতাস&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>আর আপনি এই একটি শাল গায়ে এতোক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন&quest;<br &sol;>&NewLine;ছেলের শাসন দেখে হাসেন তিনি। বর্ণের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন&comma; ওরা বুঝি এবারও যাবে না&quest;<br &sol;>&NewLine;&colon; মিলির একটু ঠান্ডা লেগেছে। আর প্রীতম আর প্রেমাও&&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;রায়হান হাত তুলে ছেলেকে থামিয়ে দিলেন। বুকের ভেতর থেকে যদি ভালোবাসা জমাট না বাঁধে&comma; একটু উত্তপ্ত হাওয়াতেই তা গলে যায়।<br &sol;>&NewLine;জোর করে হয় না। ওদের ভেতর নিজে থেকেই জমাট বাঁধতে দাও। তোমারও যদি আজকাল ইচ্ছে না হয়&&num;8230&semi; তোমার মা আর আমিই&&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;&colon; আমি তো আমার দায়িত্ব পালন করছি বাবা।<&sol;p>&NewLine;<p>একঝলক দমকা বাতাসের মতো রায়হান বলে ওঠেন&comma; এ শুধু দায়িত্বের বিষয় নয় রে বাপ্&comma; আরও অনেক বেশি কিছু&&num;8230&semi;আরও গভীর কিছু&&num;8230&semi;এ আমাদের প্রথম পরিচয়।<br &sol;>&NewLine;গাড়িতে যেতে যেতে তার সমস্ত শরীর ও মনে কেমন বিষাদের কালো ডানা মেলে দিলো। লোহাতে যেমন মরচে ধরে এবং ক্ষয়ে ক্ষয়ে একসময় ভেঙে পড়ে&comma;<br &sol;>&NewLine;তার ভেতরের কঠিন মনটিও আর একভাবে থাকছে না। মেয়েটির মুখখানা বন্ধ চোখের পাতায় বার বার ভেসে উঠছে।<br &sol;>&NewLine;বড় আদরের মেয়ে&comma; অথচ আজ পাঁচটি বছর হয়ে গেল ওদের সাথে দেখা করেননি। তার কষ্টটা কোথায় মেয়েটি কেন বুঝতে পারলো না&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>এতো বুদ্ধিমতী মেয়ে আমার&excl; শেষে কিনা একজন পাকিস্তানি ছেলেকেই পছন্দ করে বসলো&excl; তার সামনে বসে উর্দুতে তাকে ডাকবে&comma;<br &sol;>&NewLine;পাকিস্তান সরকার নিয়ে কথা বলবে&comma; তার জয়গান গাইবে&period;&period;&excl; কী করে মেনে নেবেন&quest;<br &sol;>&NewLine;ভুলটা কোথায়&quest; কার ভুল&quest; কালিগঙ্গা নদীতে লাশের মিছিল&comma; দাউ দাউ আগুনে জ্বলছে গ্রামের পর গ্রাম&comma; ভয়ার্ত মানুষের আর্তনাদ&comma; পাকিস্তানি সৈন্যদের নারকীয় চিৎকার&comma; কাদাজলে মেখে হাতে অস্ত্র নিয়ে ভয়ানক সেইসব দিন-রাত্রি&&num;8230&semi;একটি যুদ্ধ। কী করে ভুলবেন এইসব স্মৃতি&excl;<br &sol;>&NewLine;বুকে তীব্র ব্যথায় তার শ্বাস ফেলতে কষ্ট হয়&comma; গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে দেন। শীতল বাতাসে চোখ ভিজে আসে। রাস্তার দু’পাশের জমিয়ে রাখা বরফের উঁচু উঁচু ঢিবি। গাড়ির সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে বলেন&comma;<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;বাংলা মায়ের স্নিগ্ধ কোলে&comma;<br &sol;>&NewLine;ঘুমিয়ে রব আমি&excl;<br &sol;>&NewLine;বাংলা আমার মাতৃভাষা<br &sol;>&NewLine;বাংলা জন্মভূমি&excl;”<br &sol;>&NewLine;হেলেন রায়হানের অস্থিরতা টের পান। তিনি রায়হানের বাম হাতটি তার হাতে নিয়ে আলতো করে জড়িয়ে রাখেন।<br &sol;>&NewLine;&colon; বাবা&comma; ফয়সাল ছেলেটি কিন্তু ভালো। হি ইজ ব্রিলিয়ান্ট এন্ড এ পোলাইট জেন্টলম্যান। ওর কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।<br &sol;>&NewLine;ড্রাইভিং সিট থেকে মাথা ঘুরিয়ে বাবার মুখের দিকে একটু তাকিয়ে বর্ণ আবার বলে&comma; আম্মা&comma; তুমি কি বাবাকে বলেছ&comma; ফয়সাল আমেরিকা থেকে ফিরে ইউএফটি-তে জয়েন করেছে&quest;<br &sol;>&NewLine;হেলেন কিছু না বলে আরেক হাতে খুব নীরবে চোখ মুছে নেন।<&sol;p>&NewLine;<p>ড্যানফোর্থ এলাকায় আসতেই গাড়ির ভিড় বেড়ে গেল। দূরত্ব যত কমে আসছে&comma; সম্মিলিত কণ্ঠস্বর তত জোড়ালো হচ্ছে- &OpenCurlyDoubleQuote;আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রæà§Ÿà¦¾à¦°à¦¿”<br &sol;>&NewLine;হালকাভাবে তুষার পড়ছে। ঠান্ডা বাতাসে নাকের ডগায় জ্বলছে। খুব দুর্বল বোধ করছেন। তবুও হেলেনের দেওয়া ফুলের তোড়াটি শক্ত করে চেপে ধরে সবার মাঝেই লাইন ধরে দাঁড়িয়েছেন। পাশে হেলেনের দিকে তাকান। কালো শালে ঘিরে রাখা মুখটি কী শান্ত ও দৃঢ়&excl; তিনি হাত বাড়িয়ে<br &sol;>&NewLine;হেলেনকে আরেকটু কাছে টেনে নেন। একটু অবাক হয়ে হেলেন রায়হানের মুখের দিকে তাকায়&excl;<br &sol;>&NewLine;সামনের দলটি গেলেই তারা যাবেন শহীদ মিনার চত্বরে। চারিপাশে সব পরিচিতজন। সমবেত কণ্ঠে কেউ গাইছে&comma; কেউ শ্লোগান দিচ্ছে। এই সময়ে সবার জ্বলজ্বলে চোখ-মুখ দেখে রায়হানের ভেতরে পদ্মার স্রোতের মতো উত্তেজনা বয়ে যায়। ভালো লাগে খুব। সবাইকে বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে।<&sol;p>&NewLine;<p>হঠাৎ কাঁধে একটু চাপ পড়ে।<br &sol;>&NewLine;&colon; বাবা&comma; আমি&comma; ফয়সাল। আমাদের&&num;8230&semi; ক্ষমা করে দিন।<br &sol;>&NewLine;চমকে তাকাতেই দেখতে পান ঠান্ডায় লাল হয়ে যাওয়া সুদর্শন একটি মুখ তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তার আরেক হাতে একগুচ্ছ ফুল। ফাল্গুনী দু’বছরের অক্ষরকে কোলে নিয়ে হেলেনকে জড়িয়ে ধরে আছে। অক্ষর তার দিকে হাতের ফুলটি এগিয়ে দিয়ে বলে&comma; না না&comma; নাও&&num;8230&semi; যেন একটি অবাক সূর্য জ্বলছে অক্ষরের কচিহাতের মুঠোয়।<&sol;p>&NewLine;<p>রায়হানের চোখ আর কোনো বাঁধন মানে না। প্রচণ্ড ঝড়ের আঘাতে দুলে ওঠা বটবৃক্ষের মত টলে ওঠেন তিনি। ফয়সাল শ্বশুরকে দু’হাতে ধরে ফেলে।<br &sol;>&NewLine;পেছন থেকে তাড়া আসে এগিয়ে যাবার। ওরা ছয়জন ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় শহীদ মিনারের পাদদেশে।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version