অনলাইন ডেস্ক : এডমন্টনে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করার ঘটনা তদন্তকারি কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে সেক্স ট্রাফিকারেরা এখন যুবকদের আকৃষ্ট করতে অনলাইনে নানা প্রলোভন ও বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে তারা তাদের ব্যবসাকে অনলাইনে স¤প্রসারণ করেছে।
এডমন্টনে এক দম্পতির বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগে বিচার চলছে। এই দম্পতির বিরুদ্ধে অসংখ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসববের মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের একটি মেয়েকে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা। ওই মেয়েটি তার স্কুল কাউন্সেলরকে বলেছে, তাকে কৌশলে ‘যৌন শিল্পে’ নিয়োগ করা হয়েছে এবং কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে অভিযুক্ত দম্পতি যৌন পরিষেবা বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে মেয়েটিকে পাচার করেছিল।
আলবার্টা ল এনফোর্সমেন্ট রেসপন্স টিমের (এ এল ই আর টি) মানব পাচার ইউনিটের সুপার ভাইজার ফ্রাঙ্ক পেগ বলেন, যৌন পাচারকারিরা তরুনদের টার্গেট করে ফাঁদে ফেলতে ক্রমবর্ধমান হারে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তাদের চটকদার বিজ্ঞাপনে কম বয়সী মেয়েরা ফাঁদে পা দিচ্ছে। পাচারকারিরা এসব মেয়েদের এক সময় ‘বিক্রি’ করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এটি একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতা। তরুনদের এই শিল্পে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। নানান কারসাজির মাধ্যমে অল্প বয়সী মেয়েদের পাচার করা হচ্ছে। এই প্রবণতা বৃদ্ধির হার উদ্বেগজনক। এই অস্বাভাবিক বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সাথে সাথে অভিভাবকদেরও ভাবতে হবে।’ তদন্তকারিরা বলছেন, ‘অভিযুক্ত আলেকজান্ডার বাসারবা (২০) ও জোবার সাদারল্যান্ডকে (১৯) গত মাসে তাদের এডমন্টনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১০ মার্চ তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে সেগুলো হল- অপরাধমূলক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করা, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের পাচার করা এবং শিশুদের যৌন হয়রানী ও নির্যাতন করা। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি, ধারণ ও বিতরনের অভিযোগও রয়েছে। ফ্রঙ্ক পেগ অভিযোগকারি ভুক্তভোগি মেয়েটির সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন, ভয় ও লজ্জার কারণে অনেক ভুক্তভোগি এসব অপরাধের কোন অভিযোগ করেন না। ফলে এসবের প্রবনতা বাড়তেই থাকে। ওই মেয়েটির সাহসিকতার ফলে এখন অপরাধীরা ধরা পড়েছে। তাদের ছবি সবার কাছে প্রকাশ হয়ে পড়েছে এখন অন্য ভুক্তভোগিরাও ন্যায় বিচারের আশায় এগিয়ে আসবে।
কানাডিয়ান সেন্টার টু ইন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া ড্রাইডিক বলেন, অনলাইনে এসব বিষয়ে বিজ্ঞাপনের সংখ্যা হতবাক করার মতো। এর কারণ তরুণদের যৌন বানিজ্য শিল্পে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই তাদের বাজারজাত করা সহজ। কিন্তু এই প্রবণতাগুলো সমাজের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক।