অনলাইন ডেস্ক : অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনা ও একটি আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হলো আবৃত্তি সংগঠন অন্যস্বর টরন্টো আয়োজিত আবৃত্তিচর্চা, শুদ্ধ ও প্রমিত উচ্চারণ কর্মশালাÑ ‘কথা অমৃত সমান’। গত ১৮ই জুন, ২০২২, শনিবার, টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র গোল্ডেন এইজ সেন্টারে এই সারাদিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যস্বর টরন্টো’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক আহমেদ হোসেন সময়ানুবর্তিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে কর্মশালা শুরু করেন। আমাদের সমাজে ‘বাঙালি টাইম’ বলে যে দুটি শব্দের ব্যবহার আছে সে বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জীবনের যে কোনো কাজে সফলতার প্রধান পদক্ষেপ হচ্ছে নির্ধারিত সময়কে অবশ্যই মেনে চলা। কর্মশালার প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরু হয় হালকা ব্যায়াম ও সরগম অনুশীলন দিয়ে। পরবর্তীতে কথোপকথনের বিভিন্ন ধাপ, কনণ্ঠস্বরের নিয়ন্ত্রণ, ঘোষণা ও উপস্থাপনার পার্থক্য, আবৃত্তি ও অভিনয়, বেগ ও আবেগের প্রকাশ, স্বর প্রক্ষেপণ, ধ্বনি বিশ্লেষণ, বাংলা বর্ণের প্রমিত উচ্চারণরীতি, বাকপ্রত্যঙ্গের পরিচিতি ও ব্যবহার, বাকজড়তা দূরীকরণ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রশিক্ষক আহমেদ হোসেন বলেন, কবিতা আবৃত্তি বা পাঠ যেটাই করি না কেন, কবিতা বুঝে নেয়াটা খুব জরুরি। কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন সেই অনুভূতিটাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ।
কর্মশালার দ্বিতীয় পর্যায়ে, আবৃত্তিশিল্পী হাসি রহমান কবিতার ছন্দ ও আবৃত্তি নির্মাণের ওপর আলোকপাত করেন এবং শিল্পী রনি মজুমদার আবৃত্তির তাল ও লয় সম্পর্কে আলোচনা করেন।
প্রশিক্ষণার্থীরা অন্যস্বর টরন্টো’র আবৃত্তি কর্মশালার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এই ধরনের কর্মশালা আরও ঘন ঘন হবার প্রয়োজনীয়তার কথা তাদের মতামতে উল্লেখ করেন। আইনুন আফরোজা যিনি পেশাগত জীবনে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। প্রবাসজীবনের হাজার ব্যস্ততার মাঝেও তিনি এই কর্মশালায় যুক্ত হয়ে আনন্দিত। তিনি জানান, কবিতা আবৃত্তির জন্য যে প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা দরকার সেটা তিনি এই কর্মশালা থেকে কিছুটা পেয়েছেন। তবে সংগঠনের সবার মেধার সমন্বয়ে এই কর্মশালার আরও উৎকর্ষ বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ডালিয়া আহমেদ। তিনি সংগঠন ও কর্মশালার প্রশংসা করে বলেন, প্রবাসের কর্মব্যস্ততার মাঝেও যে প্রবাসের এই সংগঠনগুলো এভাবে বাংলা সংষ্কৃতিকে ধারণ ও চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। একজন অভিজ্ঞ আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কবিতাটিকে আগে মুখস্থ করতে হবে। ভালভাবে বুঝতে হবে। অনুভূতির সঠিক প্রকাশের জন্য এটা জরুরি। আর তখনি সেটা আবৃত্তি হয়ে উঠবে, নচেৎ শুধু পাঠ করা হবে।
কর্মশালার সার্বিক আয়োজনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন আবৃত্তিশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী হাসি রহমান ও রনি মজুমদার এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী ফারিহা রহমান।






