অনলাইন ডেস্ক : কুইবেকে বিলাসবহুল বাড়ির চাহিদা বাড়ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব বাড়ির দাম। খুব শিগগিরই মন্ট্রিলে আকাশচুম্বি দামে বিক্রি হতে যাচ্ছে বিলাসবহুল একটি বাড়ি। বাড়িটি হাতবদল হলে এটি হবে কুইবেকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মূল্যে বাড়ি বিক্রির রেকর্ড। অতি অভিযাত গোল্ডেন স্কয়ার মাইল এলাকার প্রাণকেন্দ্র অ্যাভেনিউ দ্য পিনসের মাউন্ট রয়ালের কাছে অবস্থিত বাড়িটির দাম হাঁকা হয়েছে রেকর্ড ২৯.৯ মিলিয়ন ডলার। কুইবেকের একটি রিয়েল এস্টেট অ্যাজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা ও বাড়িটির বিক্রয় এজেন্ট লিজা কাউফম্যান বলেছেন, যদি আমাদের প্রস্তাবিত দাম বা এর কাছাকাছি দামেও বাড়িটি বিক্রি করতে পারি তাহলে এটি হবে কুইবেকের সবচেয়ে দামে বাড়ি বিক্রির রেকর্ড। এতদিন গত বছরে বিক্রি হওয়া রিডেপম ক্রিসেন্ট স্ট্রিটে বাড়িটি ছিল সর্বোচ্চ মূল্যের। এবার এটি তার থেকে প্রায় ১৮ মিলিয়ন ডলার বেশি মূল্যে বিক্রি হতে চলেছে। উভয় ক্ষেত্রেই বিক্রয় এজেন্টের দায়িত্বে আছেন লিজা।
৩১ হাজার বর্গ ফুটের বাড়িটিতে আছে ৬৭টি কক্ষ। এরমধ্যে ১২টি বেডরুম, ৮টি বাথরুমসহ আছে নানান বিলাসী উপকরণ। বাড়িটি মোট ৮ হাজার বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে নির্মিত। বর্তমান মালিক এটি বিক্রি করে দেয়ার কারণ হিসেবে বলেছেন, তার সন্তানেরা বড় হয়ে নিজেদের পছন্দমত বিভিন্ন এলাকায় বসবাস শুরু করেছে। এই বাড়িটি এখন তার একার জন্য অনেক বড় মনে হচ্ছে। তাই তিনি এটি বিক্রি করে দিতে চাইছেন। এরই মধ্যে অনেকে বাড়িটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩ জনের সাথে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে। বিক্রয় এজেন্ট লিজা জানিয়েছেন, ফ্রান্স এবং ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ২ জন ক্রেতা যোগাযোগ করেছেন। এছাড়া স্থানীয় একজন ক্রেতার সাথেও আলোচনা চলছে।
১৯২৬ সালে নির্মিত বিলাসবহুল এই বাড়িটি আসলে একটি মিউজিয়ামের মতো। ইতালি থেকে কারিগর এনে বাড়িটিকে সাজানো হয়েছিল। এর মধ্যে দুর্লভ-চিত্রসহ বিভিন্ন মূল্যবান আসবাবপত্র রয়েছে। তখন এটির মালিক ছিলেন জন ম্যাককোনেল নামে এক শিল্পপতি। তিনি চিনি শিল্পে অর্থ বিনিয়োগ করে প্রচুর লাভ করেছিলেন। সেসময় বাড়িটির ডিজাইন করার জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিখ্যাত আর্কিটেক্ট চার্লস প্লেটকে ডেকে এনেছিলেন, যিনি রকফেলার ভবনের নকসা করেছিলেন। শুধু তাই নয় বাড়িটি নির্মাণে বিভিন্ন সামগ্রি তিনি আনিয়েছিলেন ইতালি থেকে। এজন্য তাকে প্রচুর অর্থ ব্যায় করতে হয়েছিল।
বাড়ি নির্মাণের ১০ বছর পর মারা যান মালিক জন ম্যাককোনেল। মৃত্যুর আগে তিনি এটি বিক্রি না করে জন হিতকর কাজের জন্য দান করে যান। পরবর্তীতে এটি উপাসনালয়, চিকিৎসালয়সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি এক সময় এটি সরকারি রেস্টহাউজ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে রানি ২য় এলিজাবেথ, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের মতো ভিআইপি অতিথিরা রাত্রিযাপন করেছেন।
পরবর্তীতে সরকার এটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলে ২০ বছর আগে বর্তমান মালিক এটি কিনে নেন। সূত্র : রেডিও কানাডা