অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন কমাতেও পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমপলিটিকো-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইউরোপের দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেন, ক্ষয়িষ্ণু ইউরোপ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ থামাতে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভকে ‘শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার’ পথে ঠেলে দিচ্ছে এবং রাশিয়া এখন ‘সুবিধাজনক অবস্থানে’ রয়েছে। তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মস্কোর কাছে কিছু ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে ‘সমঝোতায় আসতে’ হবে।
তার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, ইউরোপ কোনোভাবেই নিষ্ক্রিয় ছিল না। যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রচেষ্টায় সমর্থন অব্যাহত রেখেছে বলে লন্ডনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আদর্শিক বিভাজন ওয়াশিংটনের জোটগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। ‘দুর্বল’ মনে হওয়া নেতারা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্ভর করে। তারা দুর্বল এবং অতিরিক্ত রাজনৈতিক শুদ্ধতার পেছনে ছুটছে। তারা কী করবে, তা জানে না।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন ইউরোপীয় নেতারা লন্ডনে একত্র হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তির প্রচেষ্টায় তাদের যৌথ অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা আশঙ্কা করছে যে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সমাধানের পথে গেলে তা মহাদেশের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপ সহায়তা করতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, তারা কথা বলে, কিন্তু ফল আনে না। আর যুদ্ধ চলছে, চলছেই।
এদিকে ইউক্রেন হোয়াইট হাউজে সংশোধিত শান্তি পরিকল্পনা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জেলেনস্কি আবারও জানিয়েছেন, কোনও ভূখণ্ড ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি ইউরোপীয় ও ন্যাটো নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন কোনও সমঝোতা সমর্থন করা থেকে বিরত রাখতে, যা ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে নতুন ৩৩ পাতার জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল, যাতে ইউরোপের সম্ভাব্য ‘সভ্যতাগত বিলুপ্তি’র সতর্কতা দেওয়া হয়েছে এবং কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্য মিত্র হিসেবে থাকতে পারবে কি না, তা প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
রাশিয়া এই কৌশলগত নথিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এটি মস্কোর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে ‘মূলত সামঞ্জস্যপূর্ণ’। একই সঙ্গে নথিটি জাতিসংঘে ট্রাম্পের দেওয়া সেই বক্তব্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যেখানে তিনি পশ্চিম ইউরোপের অভিবাসন ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতির কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
