অনলাইন ডেস্ক : যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টেইন তাঁর এক সহযোগী এবং একজন লেখকের কাছে পাঠানো ইমেইলগুলোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম একাধিকবার উল্লেখ করেছেন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রকাশিত নতুন কিছু ইমেইলে এই তথ্য দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের ‘ওভারসাইট কমিটির’ ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এই ইমেইলগুলো প্রকাশ করেছেন। তবে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে ইমেইলগুলোকে ‘ভুয়া বয়ান তৈরির মাধ্যমে ট্রাম্পকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা’ বলে উল্লেখ করেছে। দোষী সাব্যস্ত এই যৌন অপরাধী এপস্টেইন ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কারাবন্দী অবস্থায় আত্মহত্যা করেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এপস্টেইনের সাবেক প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করার অভিযোগে বর্তমানে ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। এপস্টেইন তার সহযোগী ম্যাক্সওয়েল এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লেখক মাইকেল ওলফকে প্রায় ১৫ বছর ধরে এসব ইমেইল লিখেছিলেন।

নতুন প্রকাশিত ইমেইলগুলোতে এমন একটি বার্তা রয়েছে, যেখানে এপস্টেইন দাবি করেছেন যে, ট্রাম্প ‘একজন নারীর সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন।’ ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাটরা এই নারীকে এপস্টেইনের ‘যৌন পাচারের শিকার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আরেকটি ইমেইলে এপস্টেইন বলেছেন যে, ট্রাম্প ‘ওই নারীদের সম্পর্কে জানতেন।’ এখানে যেসব নারীর কথা বলা হয়েছে, তারা সম্ভবত ট্রাম্পের মালিকানাধীন মার-এ-লাগো অবকাশযাপনকেন্দ্রে কাজ করতেন।

ট্রাম্প অবশ্য এর আগে বলেছিলেন, তিনি এপস্টেইনকে মার-আ-লাগো থেকে বের করে দিয়েছিলেন, কারণ এপস্টেইন সেখানে কর্মরত কমবয়সী নারীদের ‘কদর্যভাবে প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন।’

তবে এপস্টেইনের ওই ইমেইলগুলোর কোনোটিই ট্রাম্পের কাছে পাঠানো হয়নি বা এর কোনোটি ট্রাম্প অন্য কারও কাছে পাঠাননি। এই ইমেইলগুলোর বেশির ভাগই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগের। এছাড়া, এপস্টেইন বা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ট্রাম্পকে এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত করা হয়নি।

বুধবার ওভারসাইট কমিটি এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এপস্টেইন এস্টেটের হস্তান্তর করা মোট ২৩ হাজার নথি প্রকাশ করেছে এবং এসব নথি বর্তমানে পর্যালোচনা করে দেখছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০-এর দশক থেকে ২০০০-এর দশকের শুরুর কয়েক বছর পর্যন্ত এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের যোগাযোগ ছিল, তবে ২০০৪ সালের দিকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।

ট্রাম্প সম্প্রতি বারবার বলেছেন, এপস্টেইনের অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তিনি কিছু জানতেন না। নতুন ইমেইলগুলো সম্পর্কে জানতে সিএনএন হোয়াইট হাউস এবং মাইকেল ওলফের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সূত্র: সিএনএন