অনলাইন ডেস্ক : মাত্র কয়েক মাস আগেও করোনার টিকা নিয়ে কানাডায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছিল। নানা অব্যবস্থাপনায় টিকা কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ায় রাজনীতিবিদ সুশীলসমাজ সরকারের কঠোর সমালোচনায় লিপ্ত হয়েছিল। টিকার জন্য কানাডিয়ানদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ফেরত যেতে হয়েছিল। কিন্তু এখন বলা যায় কানাডিয়ানরা ভাগ্যবান। বিপর্যয় কে জয় করেছে দেশটি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের ৩৮ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে ২৩ মিলিয়ন টিকার ১ম ডোজ গ্রহণ করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সবাই টিকার আওতায় চলে আসবে। ১ম ডোজ নেয়ার চার মাস পর শুরু হবে দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার কার্যক্রম।

কয়েক সপ্তাহ আগেও টিকা প্রদানের হার হিসেবে বিশ্বে কানাডার অবস্থান ছিল ৬০ তম। কিন্তু চলতি সপ্তাহে দেশটি ১ম ডোজ গ্রহণকারীদের এই হারে যুক্তরাষ্ট্রকে ছুঁয়ে ফেলেছে। মোট জনসংখ্যার মধ্য থেকে টিকা গ্রহণকারীদের সংখ্যার হারে কানাডা এখন জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে ৩য় স্থানে অবস্থান করছে। আর ৩৭ টি ওইসিডি দেশের মধ্যে এই হারে কানাডার অবস্থান ৭ম। অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগরির অর্থনীতিবিদ ব্ল্যাক শেফারের মতে ১ম ডোজ টিকা গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বে কানাডার অবস্থান এখন ১৩ তম।
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রফেসর অনন্যা টিনা ব্যানার্জি বলেন, কানাডার টিকা কর্মসূচি শুরু থেকেই ছিল আমদানি নির্ভর। এর মধ্যে বেলজিয়ামে একটি টীকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় কানাডা। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমরা টিকা বিপর্যয় জয় করতে পেরেছি। সত্যিই আমরা ভাগ্যবান।

মহাদেশ ভিত্তিক টিকাদানের হিসেব করলে প্রকট বৈষম্য দেখা যায়। যেমন উত্তর আমেরিকায় করোনার ১ম ডোজ গ্রহণকারীর হার ৫৬.৪%, ইউরোপে এই হার ৪১.৪%, দক্ষিণ আমেরিকায় ২৩.২%, এশিয়ায় ১৭.৬% এবং আফ্রিকায় মাত্র ১.৯৭%। রিসার্চ কানাডার পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি বিভাগের পরিচালক রবিন ক্রিস্টিয়ান ওয়েইট বলেন, মহাদেশ ভিত্তিক এই বৈষম্যের চাইতে অনেক বেশি প্রকট ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য। উন্নত দেশগুলোতে এই হার যেখানে ৫২.৩%। সেখানে দরিদ্র দেশগুলোতে মাত্র ০.৬৪%। সূত্র : সিবিসি নিউজ