Home কলাম টেবিলে গো-মাংসঃ বিব্রত অতিথি

টেবিলে গো-মাংসঃ বিব্রত অতিথি

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;&NewLine;<p><strong>সাজ্জাদ আলী<&sol;strong><br>দাদা ব্যস্ত নাকি&quest; দুচার মিনিট সময় হবে&quest; প্রশ্নটা করলেন বটে&comma; তবে জবাবের অপেক্ষা না করেই তিনি কথা জুড়ে দিলেন। আচ্ছা&comma; লোকজনের সমস্যাটা কি বলেন তো&quest; এতটুকু সচেতনাও কি মানুষের থাকবে না&quest; বলি আক্কেল&comma; বুদ্ধি&comma; সাধারণ জ্ঞান&comma; সব কি তবে উবে গেল&quest; এক বেলা গরু না খেলে জীবনের কি ক্ষতিবৃদ্ধি হয়&quest; মানুষের সাথে সামাজিক সম্পর্কগুলো তাহলে কি খরচের খাতায় লিখে ফেলবো&quest; বনবাসে যাওয়া ছাড়াতো আর কোন উপায় দেখছি না&quest;<br> গত মঙ্গলবার সকাল সকাল টেলিফোন করে এত্তগুলো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো এক উকিল বন্ধু। আরো প্রশ্ন রাখতে যাচ্ছিলো। থামিয়ে দিয়ে বললাম&comma; তা ব্যারিষ্টারবাবু বন-বাঁদাড়ে যাওয়ার আগে বলে তো যাবেন&comma; কোন গরুটার গুতো খাইলেন&quest; বলি হয়েছেটা কি&quest; এত উত্তেজনা নিয়ে গতরাতে ঘুমুলেন কি করে&quest; না দাদা&comma; ঘুমুতে পারিনি তো&excl; আপনাদের যন্ত্রনায় নিদ্রাদেবী গতরাতে আর বাড়ীমুখো হননি। আমি মনে মনে ভাবলাম&comma; আহারে&excl; এ তো একেবারে নীদ্রাকাতর সংক্ষুব্ধি&quest;<br> এই মানুষটি সারাদিন&comma; প্রতিদিন&comma; আইনের বিপণন করে। আর সন্ধ্যায় টাকা গোনে। আপাত&colon; দৃষ্টিতে কারো মনে হতেই পারে যে সে খুব কাঠখোট্টা হিসেবি মানুষ। কিন্তু বাস্তবতা উল্টো। ভেতরে ভেতরে সে সারল্যে ভরা অনুভূতিপ্রবণ একজন মানুষ। আত্মমর্যাদা বোধে ঠাসা। দেশ ও সমাজ নিয়ে তাঁর ভাবনা আছে। সামাজিক কোন অসঙ্গতি অথবা রাজনৈতিক শৃঙ্খলাহীনতা তাঁকে পীড়িত করে। আর সে পীড়নের ঝাপটা মাঝে মধ্যে আমার উপরে আছড়ে পড়ে। সাক্ষাতে বা ফোনে অন্যেরকৃত অসমকর্মের জবাবদিহিতা উকিলবাবু আমার মুখ দিয়ে শুনতে চান। আজও নিশ্চয়ই তাঁর মনোজগত কোন কারণে আলোড়িত হয়ে থাকবে&excl;<br> তো মন-আহত এই মানুষটিকে খানিকটা শান্ত করার প্রয়াসে বললাম&comma; আবার কি ঘটেছে বলুনতো&quest; সে বললো দাদা&comma; ঘটনা পরশু রাতের। এবারের বিষয়টা সামাজিক আপ্যায়ণের সাথে ধম্মকম্ম মিলেমিশে একবারে একাকার। জানিনা এ বিষয়ে অপনার চিন্তাগত অবস্থান কি&quest; তবুও আপনাকে বলতে পারলেই একটু হালকা হবো। বললাম&comma; বলুন বলুন&comma; অত ভূমিকার দরকার নাই। কষ্টের কথাগুলো মনোমাঝে যেভাবে আছে অবিকল তা উগরে দিন তো শুনি।<br> হয়েছে কি দাদা&comma; দূরাগত এক বন্ধুর বাড়ীতে পরিবারসহ নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলাম। বাড়িওয়ালা আমাদের সহ মোট ৩টি পরিবারকে ডিনারে ডেকেছেন। অতিথিদের মধ্যে জামসেদ ও তার বউ আমিনা আমার সহপাঠি। অন্য অভ্যাগত গফফার ভাইও পূর্ব পরিচিত&comma; আমার ক্লায়েন্ট তিনি। ডিনারের আগে আমরা বসবার ঘরে বসে ক্ষুধাবর্ধক কিছু হালকা খাবার খেতে খেতে নানা বিষয়ে কথাবার্তা বলছিলাম। বেশ চলছিলো। বিপত্তিটা বাঁধলো ডাইনিং টেবিলে গিয়ে&quest; ১০খানা চেয়ার ফেলার উপযুক্ত বিশাল ডাইনিং টেবিলের পুরোটাই খাবারে ঠাসা। অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে বাটিতে বাটিতে তরকারীগুলো সাজানো। প্রতিটি আইটেমে ছোট্ট শলাকার উপরে কাগজ গেঁথে তরকারীর আত্মপরিচয় লেখা। ঢেঁড়স ভর্তা&comma; পাবদা’র ঝোল&comma; সরষে ইলিশ&comma; কঁচু বাটা&comma; চিংড়ি মালাই&comma; মুরগী কারী&comma; চিতল কোপ্তা&comma; কচি গরু ভোনা&comma; সাদাভাত&comma; পোলাও&comma; ইত্যাদি ইত্যাদি।<br> বলে চলেছেন ব্যারিষ্টার। আমার স্ত্রী খাবারের আইটেমগুলো পরখ করে তাকালেন আমার দিকে। ঐ মুহুর্তে তাঁর দৃষ্টিপাত আর যাই হোক প্রেমময় মনে হলো না কিছুতেই। ছেলেদের নিয়ে তিনি টেবিল ছেড়ে উঠে পড়লেন। বাড়ীটির খাবারঘর এবং রান্নাঘর ওপেন কনসেপ্টে একসাথে মিলানো। প্রসস্ত সেই পরিসরটির মাঝামাঝি জায়গায় বাড়তি একটি সেন্টার টেবিল বসানো আছে। টেবিলের সাথে বিশেষভাবে তৈরী ৪টি হাই চেয়ার পাতানো। সম্ভবত&colon; বাড়ির লোকেরা ওখানটায় বসেই দৈনন্দিন খাওয়া দাওয়া সারে।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<figure class&equals;"wp-block-image"><img src&equals;"http&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2019&sol;10&sol;Sajjad-2&period;jpg" alt&equals;"" class&equals;"wp-image-690"&sol;><&sol;figure>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>একটা সেকেন্ড অপেক্ষা চাই দাদা&comma; ফোনটা ধরে রাখুন প্লিজ&comma; -বলে উকিলবাবু ফোনে গান বাজিয়ে দিলো। সেকেন্ডের জায়গায় মিনিট দেড়েক বাদে আবার ফোনে ফিরলো সে। সরি দাদা&excl; বলছিলাম যে&comma; আমার ধর্মপ্রাণান্ত স্ত্রী ততক্ষণে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে&comma; গো-মাংস পরিবেশিত টেবিলে বসে তিনি খাবার খাবেন না। বাড়ীর ব্যস্ত গৃহিনীকে ডেকে তিনি কৌশল করে বললেন&comma; ভাবী আমার ছেলেরা আপনার এই হাই চেয়ারগুলো বেজায় পছন্দ করেছে। যদি অসুবিধা না হয় তো আমি এখানটায় বসে ওদের নিয়ে খাই&quest; কোন অসুবিধা নাই বৌদি&comma; সম্মতি দিলেন গৃহিনী। গলা খানিকটা নামিয়ে আরো বললেন&comma; টেবিলের ঠিক মাঝখানের মস্ত ওই রেকাবিটায় বাচ্চা গরুর গোস্ত ভুনা আছে। ওটা বাদ দিয়ে আপনারা অন্য তরকারীগুলান খান।<br> ঘটনার বিবরণী আপাত&colon; সমাপ্ত করে ব্যারিষ্টার আবার প্রশ্নবানে ফিরলেন। আচ্ছা বলেন তো দাদা&comma; আমরা তো ওদের আমন্ত্রিত অতিথি&comma; নাকি&quest; অভ্যাগতের জন্য স্বস্তিকর পরিবেশ বজায় রাখার দায় তো বাড়ীওয়ালারই&quest; আমার পরিবারটি যে হিন্দু&comma; সেকি ওদের অজানা&quest; আমরা যে ধর্ম-নিষেধের কারণে গো-মাংস খাই না&semi; সে কি নতুন কোন খবর&quest; বলি&comma; সেই রাতে টেবিলে গরুর মাংস পরিবেশনের দিব্যিতো কেউ দেয়নি ওদেরকে। খাবার তালিকায় গো-মাংস না রাখলে উপস্থিত অতিথিরা কেউ কি নাখোস হতেন&quest; টেবিলে তো আরো ৭টি পদের সুস্বাদু তরকারী ছিলোই। আর অতিথি আপ্যায়নে গরুর গোস্ত পরিবেশন তো কোন ধর্মীয় বাধ্যতা নয়&quest; <br> বাড়িওয়ালারা হয়তো ভেবে থাকবেন&comma; অনেক হিন্দুই গরুর মাংস খায়। তাহলে পরিবেশনে সমস্যা কি&quest; হাঁ&comma; খায় বটে। কিন্তু আমরা খাই কিনা&comma; আমন্ত্রণকারী সে খোঁজটা নেওয়ার তো দরকারই তো মনে করলেন না। আমাদের আহার-নিষেধের কোনই কি গুরুত্ব নেই ওদের কাছে&quest; যতক্ষণ আমরা তাঁদের বাড়ির অতিথি&comma; অন্তত ততক্ষণ আমাদের স্বস্তি&sol;অস্বস্তির দেখভাল করারাটা তাঁদের কর্তব্যভুক্ত নয় কি&quest; আসলে বিষয়টা সচেতনতার। ওরা উচ্চ শিক্ষিত এবং সমাজের উঁচু স্তরের মানুষ। আর সেজন্যই কর্তব্য পালনের দায়িত্বও ওদের কাঁধে খানিকটা বেশি বটে। তাদের কোন আচরণে আগত অতিথিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে কিনা&semi; সেটুকু সংবেদনশীলতা ওদের থাকা দরকার ছিলো। <br> একটি বহুজাতিক সমাজ ব্যবস্থায় বসবাসের কারণে আমরা নানাবিধ বৈচিত্র দেখে অভ্যস্ত&semi; -বলে চলেছেন উকিলবাবু। যেমন একই উনুনে ভেজে এখানকার দোকানদাররা খরিদ্দারকে গরু ও শুয়োরের মাংসের স্যান্ডুইচের পরিবেশন করে থাকে। আবার কানাডিয়ান গ্রোসারীর দোকানগুলোতে শুয়োর&comma; গরু&comma; মুরগী&comma; খাসি প্রভৃতি জন্তুর মাংস পাশাপাশি রেখেই বিক্রিবাট্টা চলে। কিন্তু দাদা এ ক্ষেত্রে আমরা তো কোন রেঁস্তোরায় খেতে যাইনি&excl; অথবা ৫০০ অতিথিবেষ্টিত বৃহৎ কোন ব্যঙ্কুইট হলে বিয়ের আমন্ত্রণেও যাইনি&quest; গিয়েছি বন্ধুর বাড়ীতে। এখানটায় প্রত্যেক অতিথির ব্যক্তি স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ আন্তরিক আচরণতো প্রত্যাসিত। <br> কেউ এমনটাও বলতে পারেন যে&comma; টেবিলেতো à§® পদের তরকারী ছিলো। গরু খাওয়ার জন্য আপনাকেতো কেউ জোর করেনি। বাকি à§­ পদ দিয়ে ভুরিভোজন করে বাড়ি যান তো মশাই। এত কথা কিসের&quest; কথা আছে বন্ধুরা&excl; ক্ষোভ ঝেড়ে চলেছেন আইনজীবী। বাড়িতে খাবারের ঘাটতি বলে যে ওদের এখানে কব্জি ডুবায়ে খেতে এসেছি&semi; ব্যাপারটা তো মোটেই তা না&quest; আর জোর করে খাওয়ানোর কথা যদি বলেন&comma; তো বলবো কাঁটা চামচে মাংস গেঁথে আমার গালে তা কেউ ঢুকিয়ে দেয়নি বটে&semi; কিন্তু টেবিলে গো-মাংস রেখে তা খাওয়ার প্রতি আগ্রহ প্রভাবিত করার প্রচ্ছন্ন বন্দোবস্তটিতো করেছেন&excl; দেখুন&comma; একটি আমন্ত্রণ সভায় &OpenCurlyDoubleQuote;ভোজন” উপলক্ষ মাত্র। পারস্পরিক দেখা সাক্ষাৎ&comma; কথাবার্তা&comma; সৌজন্য বিনিময়ই মুখ্য বিষয়। আর সে সৌজন্য প্রতিষ্ঠিত করার প্রধান উদ্যোক্তাতো বাড়িওয়ালাই।<br> একটা সরল কথা সবাই সোজাসাপ্টা মানলেই লেঠা চুকে যায়। কোন আমন্ত্রণকারী যখন একাধিক ধর্মসম্প্রদায়ের অতিথিদের একসাথে বাড়িতে ডাকছেন&semi; তখন মাথায় রাখলেই হয় যে&comma; টেবিলে গরুর মাংসের পরিবেশন হিন্দু অতিথিদের অস্বস্তিতে ফেলবে। আবার শুকরের মাংসভর্তি পেয়ালা দেখে মুসলমান অতিথি নাখোস হবেন&excl; বলছিলাম যে&comma; সবাইকে খোস রাখাটা আমন্ত্রণকারীর জন্য তো কঠিন কিছু নয়। টেবিলে &OpenCurlyDoubleQuote;না শুকর&comma; না গরু” এমন কেতাদুরস্ত ব্যবস্থা নেওয়ায় অসুবিধাটা কি&quest; বাজারে ছাগল-মুরগী’র কোন ঘাটতি পড়েছে বলেতো শুনিনি কখনও&quest; বেশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটা রাখলেন ব্যারিষ্টার।<br> &lpar;অনুলেখক বাংলা টেলিভিশন কানাডা’র নির্বাহী&rpar;<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version