অনলাইন ডেস্ক : গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, বাংলাদেশে আগামী বছরের নির্বাচনের গুরুত্ব কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। নতুন সরকার নির্বাচিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পথে এই নির্বাচন একটি মাইলফলক হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে অনুষ্ঠিত শুনানিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন এসব কথা বলেন।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ সেপ্টেম্বর তাকে বাংলাদেশে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী- রাষ্ট্রদূত মনোনয়ন অনুমোদনের জন্য সিনেটে পাঠানো হয় এবং সেখানে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির পর সিনেট অনুমোদন দিলে রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়।
শুনানিতে বক্তব্যের শুরুতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, সিনেটের অনুমোদন পেলেই বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও স্বার্থ এগিয়ে নেওয়ার জন্য ঢাকায় কাজ শুরু করবেন।
বাংলাদেশে পূর্বে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, বড় প্রতিবেশী দেশগুলোর ছায়ায় থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ গুরুত্বপূর্ণ। দুই দশকের বেশি সময় ধরে মার্কিন কূটনীতিক হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করার কারণে দেশের গুরুত্ব ও স্বার্থ সম্পর্কে তিনি ভালোভাবে জানেন। বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান দেশটিকে ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার নির্বাচিত হবে। এটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযাত্রায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন জানান, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত হলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ঢাকা দূতাবাসের টিমকে নেতৃত্ব দেবেন।
২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে। এটি দেশের মানুষের দৃঢ়তা ও সহনশীলতার নিদর্শন।
রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেটের অনুমোদন পেলে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন ব্যবসার সুযোগ সম্প্রসারণ, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে কাজ করবেন।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, গত আট বছর ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে অবস্থান করছে। তিনি নিজে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন এবং শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে তহবিল যোগানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নয়। এজন্য অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক সহায়তা বাড়ানো এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।






