অনলাইন ডেস্ক : নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিনে অনুষ্ঠিত বিজয় ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে সরাসরি বার্তা দেন। তিনি ভাষণে বলেন, ‘যদি কেউ দেখাতে পারে কিভাবে স্বৈরশাসককে পরাজিত করা যায়, তবে তা এই শহরই দেখিয়েছে।’ এরপর তিনি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমি জানি আপনে আমার ভাষণ দেখছেন, তাই আপনার জন্য আমার চারটি শব্দ আছে ‘টেলিভিশনের ভলিয়ম বাড়ান’।
মামদানি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করেন। এর ফলে তিনি নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এবং সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন।
একই দিনে ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্র্যাট অ্যাবিগেল স্প্যানবার্গার রিপাবলিকান উইনসাম আর্ল-সিয়ার্সকে পরাজিত করে প্রথম মহিলা গভর্নর নির্বাচিত হন। নিউ জার্সিতেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মিকি শেরিল রিপাবলিকান প্রার্থী জ্যাক সিয়াটারেলিকে হারিয়ে গভর্নর নির্বাচিত হন।
নিউইয়র্কে নির্বাচনে জয়ের পর মামদানি বলেন, ‘স্বৈরশাসকরা কখনোই আমাদের শহরকে ভয় দেখাতে পারবে না।” তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার, বিনামূল্যে শিশু যত্ন এবং সম্প্রসারিত গণপরিবহনের মতো প্রগতিশীল নীতিকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মামদানির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তার উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল ইতিমধ্যেই তার কর বৃদ্ধির পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। এছাড়া তিনি কর্পোরেট ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হবেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই মামদানিকে ‘সমাজতান্ত্রিক হুমকি’ হিসেবে তুলে ধরছেন এবং তার প্রতিটি পদক্ষেপকে কড়া সমালোচনার মুখে ফেলতে পারেন। তবে মামদানি এও জানিয়েছেন, তিনি শ্রমজীবী মানুষদের জন্য কাজ করতে মনোনিবেশ করবেন এবং তাদের সেবা করার মাধ্যমে নিজের নেতৃত্ব প্রমাণ করবেন।
মার্কিন রাজনীতিবিদদের মতে, মামদানির বিজয় শুধু নিউইয়র্কের জন্য নয়, দেশের বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। নতুন মেয়র জানুয়ারিতে শপথ নিলে শহরের শাসন ও নীতি বাস্তবায়নে তার রাজনৈতিক দক্ষতা এবং নেতৃত্বের পরীক্ষা শুরু হবে।
