অনলাইন ডেস্ক : ফাস্ট ন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন ডে উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কুইবেকের মন্ট্রিলে কয়েক হাজার আদিবাসী জড়ো হয়। তারা নগরীর কেন্দ্রস্থলে জন এ ম্যাকডোনাল্ডের ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এ সময় তারা দাবি করে যে, ‘আমাদের নিরাপত্তার চাইতে বেশী জরুরী আমাদের কথা শোনা’। দিবসটির সাথে সামঞ্জস্য রেখে অংশ নিতে আসা প্রায় সবার গায়ে ছিল কমলা রঙের জামা। উপনিবেশ আমলে খ্রিষ্টান মিশনারি পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে নির্যাতনে মারা যাওয়া আদিবাসী শিশুদের স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়।এ বছর এই দিনটি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা অনেকেই ওই সময় তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন, অনেকে আবার সৌভাগ্যক্রমে ওই ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন। তারা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। অনুষ্ঠানের প্রথম বক্তা ছিলেন এলিন গেবরিয়েলা। ওকা ক্রাইসিস আন্দোলনের এই নেত্রী তার বক্তব্যে কুইবেক সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি কোনো রাখ ঢাক না রেখেই বলেন, তারা আমাদের সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে। এখন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে আমাদের জমি আত্মসাতের চক্রান্ত শুরু করেছে। নিহত শিশুদের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় পুরো সমাবেশস্থলে পিনপতন নিরবতা নেমে আসে। পরে তিনি বলেন, অনেক হয়েছে, আমরা আমাদের সন্তানদের আর ফেরত পাব না। কিন্তু আমাদের ভূমি ফেরত চায়। তিনি আদিবাসীদের প্রতি বর্ণবাদ ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা নিরাপত্তা চাই না। আমরা চাই আমাদের কথাগুলো যেন সরকারের কান পর্যন্ত পৌঁছায়। পরে তিনি নিহতদের স্মরণে সবাইকে নিয়ে ৩০ সেকেন্ড নীরবতা পালন করেন।

অনুষ্ঠানে আদিবাসীদের বিভিন্ন দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অ-আদিবাসী নারী সারা। তিনি বলেন, আমার আদিবাসী বন্ধুদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে এখানে আসতে পেরে আমি গর্বিত। তিনি এই দিনটিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও কুইবেক সরকার তা না অনুসরণ করার সমালোচনা করে বলেন, এই সরকার আদিবাসীদের প্রতি সহমর্মী নয়। তারা এই দিনটি পালনে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি স্কুল-কলেজেও কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি। অনুষ্ঠানের অন্যান্য বক্তারা কানাডায় ধর্মীয় বিদ্বেষ দূর করা এবং আদিবাসীদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ বন্ধের দাবি জানান। সূত্র : রেডিও কানাডা