অনলাইন ডেস্ক : ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রিমিয়ার জন হর্গান মাছের খামার বন্ধে ফেডারেল সরকারের চিন্তা-ভাবনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত শত শত জেলেকে বেকার বানাবে এবং উপক‚লীয় অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলবে। তিনি এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য ফেডারেল সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে গত ১০ মার্চ তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি মত্স্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও পর্যাপ্ত ‘ট্রানজিশন সহায়তা’ ছাড়া ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ওপেন নেট পেন স্যামন খামারগুলো বন্ধ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ফেডারেল ফিশারিজ মিনিস্টার জয়েস মারে এক আদেশে বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ওপেন নেট পেন স্যামন ফার্মগুলোর কার্যক্রম গুটিয়ে আনা হবে। সেই লক্ষ্যে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার উপক‚লীয় এলাকায় এসব খামারের লাইসেন্স নবায়ণ বন্ধ রয়েছে। প্রিমিয়ার জন হর্গান বলেন, বিষয়টি উপক‚লীয় জেলেদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লাইসেন্সগুলো নবায়ণ করা শুরু না হলে এই উদ্বেগ কাটবে না। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, যদি স্যামন ফার্মগুলোর অনুমোদন বাতিল করা হয় তাহলে এক ধাক্কায় শত শত লোক বেকার হয়ে পড়বে। এতে উপক‚লীয় স¤প্রদায়গুলো মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি আপনাকে স্যামন চাষের খাতকে আশ্বাস দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি যাতে একটি উপযুক্ত বিকল্প কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা যায় এবং জেলেদের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়।’

হর্গানের চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, স্যামন চাষী ও শিকারীদের প্রায় সবাই আদিবাসী। এখন এদের লাইসেন্সগুলো বাতিল করলে সরকারের আদিবাসীদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণার পরিপন্থী কাজ হবে। এসব স¤প্রদায়ের যাবতীয় অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা এই মাছের খামারের উপর নির্ভরশীল।

এ বিষয়ে মন্ত্রী জয়েস মারের কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও তার প্রেস সেক্রেটারি ক্লেয়ার টাইচম্যান বলেছেন, আমরা প্রিমিয়ার হর্গানের উদ্বেগের বিষয়টি জানতে পেরেছি। লাইসেন্স নবায়ণের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরই আসতে পারে। তবে ওপেন নেট পেন খামার বন্ধের বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। আমরা বিষয়টিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি। প্রয়োজনে তা আরো বাড়ানো যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, ফেডারেল সরকার ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ডিসকভারি দ্বীপপুঞ্জে ওপেন নেট পেন ফার্মগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। এই পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে স্যামনের বংশ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তাদের খামারগুলোর লাইসেন্স নবায়ণ না করা হলে প্রদেশটিতে ৪ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি লোক বেকার হবে এবং বার্ষিক ১.২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। সূত্র : দ্য স্টার