অনলাইন ডেস্ক : নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয় পেয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন জোহরান মামদানি। প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি মার্কিন রাজনীতিতে ইতিহাস গড়েছেন। কিন্তু তার এই বিজয় ভারতের রাজনৈতিক মহলে বিশেষ করে মোদি সমর্থক ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে মামদানি বিজয়ের পড় কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও ইহুদি গোষ্ঠী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জোহরান মামদানি বাবার সূত্রে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এবং মায়ের সূত্রে দক্ষিণ এশীয়, মামদানি এক বহুসাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। প্রখ্যাত উগান্ডান শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানি ও ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের সন্তান হিসেবে ছোটবেলা থেকেই তিনি বৈচিত্র্য, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের মূল্যবোধে বেড়ে উঠেছেন। এই মূল্যবোধই তাকে একজন প্রগতিশীল ও স্পষ্টভাষী রাজনীতিক হিসেবে গড়ে তুলেছে—যে কারণে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের নীতির অন্যতম সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
২০২০ সালে অযোধ্যায় বাবরী মসজিদের জায়গায় হিন্দু মন্দির নির্মাণের প্রতিবাদে তিনি নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকেই মোদি সমর্থকদের একাংশের নিশানায় পরিণত হন তিনি। নির্বাচনি প্রচারণার সময় তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চলে—কেউ তাকে “ভারতবিরোধী”, কেউ “জিহাদি মুসলিম” আখ্যায়িত করেন। এমনকি ভারতের কট্টরপন্থী কিছু গণমাধ্যম দাবি করে,মামদানি নাকি ভারতবিরোধী সংগঠন থেকে অর্থ সহায়তা পেয়েছেন।
তবে এসব বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ভেসে গেছে নিউইয়র্কবাসীর ভোটে। জোহরান মামদানি প্রমাণ করেছেন, ধর্ম বা বংশ নয়— যোগ্যতা ও মানবিকতার ওপরই নেতৃত্বের ভিত্তি দাঁড়ানো উচিত। তিনি বলেন, “আমার জয়, বৈচিত্র্যের জয়, এমন এক শহরের জয় যেখানে সব ধর্ম, বর্ণ ও জাতির মানুষ একসাথে থাকতে চায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মামদানির স্পষ্ট বক্তব্য ও মানবাধিকারমুখী অবস্থান মোদি সমর্থকদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। কারণ, একজন দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম তরুণ এখন এমন এক বৈশ্বিক শহরের নেতৃত্বে, যিনি প্রকাশ্যে মোদি সরকারের ধর্মীয় রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন।






