অনলাইন ডেস্ক : ঢাকার নয়ারহাট গণবিশ্ববিদ্যালয়ের চার নারী শিক্ষার্থী রোবট উদ্ভাবন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। এ রোবট মানুষের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ, চিকিৎসককে রোগীর সব তথ্য সরবরাহ করাসহ সুচারুভাবে একজন নার্সের দায়িত্ব পালনে সক্ষম।

ঢাকার নয়ারহাট গণবিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শেষবর্ষের ৪ জন নারী শিক্ষার্থী এ রোবট উদ্ভাবন করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। বিভাগীয় প্রজেক্টের অংশ হিসেবে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে এটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার বিভাগীয় প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রোবটটির নাম দেয়া হয়েছে এ্যাভওয়ার। সাড়া জাগানো এই উদ্ভাবনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা হলেন দলনেতা দুর্গা প্রামাণিক, মৌসুমি কণা, সুমনা আক্তার ও আফরিন আহমেদ বৃষ্টি।

রোবটটির বিশেষত্ব সম্পর্কে তারা জানান, নার্সের কাজ ছাড়াও যে কোনো অফিসে এটি রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে। একইসঙ্গে অনলাইনে বিভিন্ন কাজেও সক্ষম রোবটটি। এর সঙ্গে ব্লুটুথ সংযোগ থাকায় অফলাইনেও কাজ করতে পারবে এটি। এছাড়া হাটা-চলা ও কথা বলতেও সক্ষম বিশেষ এ রোবটটি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ক্যাম্পাস সংলগ্ন নিরিবিলিতে একটি পরীক্ষাগারে এর কাজ শুরু হয়। করোনাজনিত কারণে ৩ মাস বিলম্বের পর ৯ সেপ্টেম্বর কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর বেশকিছু প্রক্রিয়া শেষে ২১ সেপ্টেম্বর এটি নিজ বিভাগে উন্মুক্ত করা হয়।

পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন সিএসই বিভাগের শিক্ষক শেলিয়া রহমান। কো-সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেন একই বিভাগের শিক্ষক রোয়িনা আফরোজ অ্যানি। এছাড়া প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেন উজ্জ্বল সরকার, যিনি সাম্প্রতিককালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

রোবট উদ্ভাবনের বিষয়ে সিএসই বিভাগের প্রধান মো. করম নেওয়াজ বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট থেকে শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রজেক্ট দেয়া হয়। সে অনুযায়ী এই ধরনের চমৎকার কাজগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উঠে আসে। আমাদের শিক্ষার্থীরা অসাধারণ কর্মদক্ষতার অধিকারী, যার প্রমাণ এই উদ্ভাবন। এটাকে ডেভেলপ করতে আরও কিছু কাজ চলছে। রোবটটির পেছনে যারা কাজ করেছে, তারা প্রত্যেকেই মেয়ে। মেয়েরা যে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই, এটা তার প্রমাণ।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবর মাসেও একই বিভাগের ৬ জন শিক্ষার্থী রোবট ‘মিরা’ উদ্ভাবন করেন, যা ওই সময় দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। ফলে দেশব্যাপী সেটি দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।