Home কানাডা খবর সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা নাকচ : বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা নয়: ট্রুডো

সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা নাকচ : বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা নয়: ট্রুডো

অনলাইন ডেস্ক : ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভকারিদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা করতে ইচ্ছুক নন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তবে বিক্ষোভ দমনে এই মুহূর্তে সেনা বাহিনী তলবের কথাও ভাবছেন না বলে তিনি জানিয়েছেন। ভ্যাকসিন বিষয়ক সব বাধ্য-বাধকতার অবসান, অন্যথায় সরকার পরিবর্তনের দাবিতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অটোয়া দখল করে আছে ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভকারীরা আন্ত:সীমান্ত ট্রাকারদের জন্য ফেডারেল সরকারের বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন নীতির বিরোধীতা করে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। এটি এখন প্রাদেশিক ভ্যাকসিন নীতি, মাস্ক, লকডাউনসহ সব ধরনের করোনা
বিধি-নিষেধ বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভের জন্য তহবিল সংগ্রহকারিদের একজন তামারালিচ গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ পর্যন্ত ১০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার সংগৃহীত হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভকারিরা শহরে থাকার পরিকল্পনা করছে। বিক্ষোভের জন্য তহবিল সংগ্রহকারিদের একজন তামারালিচ গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ পর্যন্ত ১০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার সংগৃহীত হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা শহরে থাকার পরিকল্পনা করছে। তিনি আরো বলেন, আমি অটোয়ার জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে, প্রয়োজনের চেয়ে এখানে একদিনও বেশি থাকার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমাদের থাকা বা চলে যাওয়ার পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্তের উপর। আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর আরোপিত সমস্ত বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দিলেই আমরা ফিরে যাব। বাধ্যতামূলক টিকার নীতিসহ বে-আইনী সব বিধি-নিষেধ নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কানাডা ইউনিটি গোষ্ঠির দাবি সরকারি নেতারা হয় করোনার সমস্ত বিধি-নিষেধ বাতিল করুক অন্যথায় অবিলম্বে তাদের ‘আইনানুগ’ পদ থেকে পদত্যাগ করুক।

এদিকে জন নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসনের অনুরোধে তিনি শহরে অতিরিক্ত আরো আর সি এমপি সদস্য পাঠাচ্ছেন। তারা বিক্ষোভ দমনে অটোয়া পুলিশকে সহায়তা করবে।
আগের দিন বুধবার অটোয়া পুলিশ প্রধান পিটার স্লোলি বলেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে এবং তারা যেভাবে সংগঠিত হচ্ছে তাতে একা পুলিশের পক্ষে তাদের দমন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা যে ইস্যুতে আন্দোলন করছে সেটি একটি জাতীয় ইস্যু, এটি শুধুমাত্র অটোয়ার কোন ইস্যু নয়। আমার মনে হয় না এর কোন পুলিশি সমাধান আছে। বিষয়টি নিয়ে আমার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ক্রমেই বাড়ছে।’ তার এই বক্তব্যকে অনেকে বিক্ষোভ দমনে সেনা বাহিনী তলবের আভাস বলে মনে করলেও প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ওই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পরিকল্পনায় এখনই সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নেই। প্রতিবাদকারী গ্রæপগুলোর সাথে সরাসরি আলোচনার কথা বিবেচনা করছেন কি-না জানতে চাইলে ট্রুডো সে সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়ে বলেন, তারা (আন্দোলনকারীরা) যে ইস্যু নিয়ে কথা বলছে সেটি একটি মিমাংসিত বিষয়। গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনেই জনগণ আমাদেরকে এ বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেয়ার ম্যান্ডেট দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেপ্টেম্বরের ফেডারেল নির্বাচনের আগে ভ্যাকসিন নীতিমালা নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়েছিল। সে সময় বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদলের সাথে আমাদের অনেক বিতর্কও হয়েছিল। মহামারি নিয়ন্ত্রণে সবাইকে টিকার আওতায় আনতে আমরা আমাদের কঠোর নীতিমালার কথা ভোটারদের কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছিলাম। তারা সবকিছু জেনে বুঝেই আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছিল। সুতরাং এখন যারা জনগণের দেয়া ম্যান্ডেটের বিপক্ষে গিয়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে বিকল্প সরকার আনার আন্দোলন করছে আমার মনে হয় না তাদের সাথে কোন আলোচনার প্রয়োজন আছে। আমার মনে হয় তারা জনমতের বিপক্ষে গিয়ে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণ করছে।

অটোয়া পুলিশ প্রধান স্লোলি বলেছেন, কনভয় বিক্ষোভের কারণে শহরে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে বিভিন্ন বিকল্প পন্থার কথা ভাবা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, সামরিক বা সেনা সহায়তার অনুরোধ, বিক্ষোভকারীদের সাথে সরাসরি সংলাপ বা আলোচনা, আদালতের আদেশে জোরপূর্বক অপসারণ ইত্যাদি। সবগুলো বিষয় নিয়েই আমাদের নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। তবে প্রতিটি পান্থাতেই কিছু না কিছু ঝুঁকি আছে। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দের মুখপাত্র মিন্ডেন বলেন, অটোয়ার বর্তমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সাথে কানাডা সশস্ত্র বাহিনী জড়িত নেই এবং জড়িত হওয়ার কোন পরিকল্পনাও নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কানাডিয়ানদের সাথে জড়িত কোন বিষয়ে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের আগে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। হালকা কোন বিষয়ে সেনা বাহিনীকে জড়ানো উচিত নয়।

অন্যদিকে বিরোধী রক্ষণশীলরা অচলাবস্থার অবসানে সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। কনজারভেটিভ নেতা এন্ড্রু শিয়ার বলেন, বিক্ষোভকারীদের যানবাহনগুলো থেকে অনবরত হর্ন বাজানো হচ্ছে। শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। শহরের বাসিন্দারা নিজ নিজ বাড়িতে জিম্মি হয়ে পড়ছে। এই অবস্থার অবসানে আলোচনা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। সূত্র : সিবিসি

Exit mobile version