মহান বিজয় দিবস-২০২০ অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়। উক্ত দিবস উদযাপনে দিনব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। অনুষ্ঠানের কর্মসূচী মূলত দু’ভাগে বিভক্ত ছিল। ১৬ ডিসেম্বর দিনের শুরুতে বাংলাদেশ হাউজে অত্র হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জনাব চিরঞ্জীব সরকার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পতাকা উত্তোলনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

পরবর্তীতে, বেলা ৫ ঘটিকায় শুরু হয় দিনের দ্বিতীয় কর্মসূচী। করোনা মহামারীর কারণে কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি টেরিটরির বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অত্র মিশনের কাউন্সেলর জনাব মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন। এরপর শুরুতেই বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে মিয়া মোঃ মাইনুল কবির, মিনিস্টার, দেওয়ান হোসনে আইয়ুব, মিনিস্টার, মোঃ শাকিল মাহমুদ, কাউন্সেলর, অপর্ণা রানী পাল, কাউন্সেলর। বাণী পাঠের পর কানাডায় বসবাসরত আমন্ত্রিত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তাঁদের পরিচয় দিয়ে একটি উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

উক্ত উন্মুক্ত আলোচনার শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। স্বাগত বক্তব্যে তিনি প্রথমেই জাতির জনকসহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান । তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত অতিথিদের ধন্যবাদ প্রদান করে উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ তাঁদের পরিচয় দিয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বক্তব্য প্রদান করে। সকলেই একমত পোষণ করেন যে, দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আজিজুর রহমান প্রিন্স, আহসান হাবিব, গোলাম কিবরিয়া, ওমর সেলিম, কবির চৌধুরী, বাহাউদ্দিন শিশির, ড. নুরুল হক, মমতা দত্ত, রিয়াজুল হক, লিটন মাসুদ, ফাইজুল করিম, হাসানুজ্জামান, মুস্তাফা কামাল, আব্দুস সালাম, ডঃ শফি ভুঁইয়া, মনির হোসেন, তাজুল রিয়াদ, গোলাম মহিবুর রাহমান, শহিদুল ইসলাম, সোহেল হাওলাদার কবি আহাদ চৌধুরী, মিসেস রাশেদা নেওয়াজ, সেলিম জুবেরী, সাদেরা সুজন, মাসুদ সিদ্দিকী, এস এম এ রানা, জাকির হোসেন প্রমুখ।

পরিশেষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে নবনিযুক্ত হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান। তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দানকারী সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন যে মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির জন্য উৎসব ও গর্বের একটি দিন। আজ এই আনন্দের দিনে তিনি সকলকে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করার জন্য উদাত্ত¡ আহ্বান জানায়। তিনি মহান বিজয় দিবসে সকলে মিলে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে যার যার অবস্থান থেকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি তার বক্তৃতায় আরও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক প্রশ্নাতিতভাবে প্রমানিত ঘৃণ্য খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায়ের সম্মুক্ষিন করবেন। একই সাথে তিনি কানাডার মাটিতে বসে বাংলাদেশ সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদেরকে নিবৃত্ত করার বিষয়েও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন কানাডার সরকারের সাহায্য নিয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এদুটি বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য তিনি কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে নতুন হাই কমিশনার অর্থনৈতিক ক‚টনীতি ও জনক‚টনীত্রি উপর গুরুত্ব দিয়ে আগামী চার বছরের প্রস্তাবিত কর্মকাণ্ডের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবারও আহবান জানান।

তিনি তাদেরকে আশ্বস্ত করেন যে প্রবাশি বাংলাদেশীদের যথা সময়ে সর্বোচ্চ সেবা দেবার লক্ষ্যে অটোয়া মিশন ও টরণ্টো কনস্যুলেটকে “Service and Support Centre” হিসেবে গরে তলা হবে।

সর্বশেষে তিনি বলেন যে “জনগণের হাই কমিশনার” হিসেবে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে সাথে নিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান। তিনি নতুন হাইকমিশনার হিসাবে তাঁর আগামী চার বছরের সার্বিক রূপরেখা সবাইকে অবহিত করেন।
অতঃপর একটি ভার্চুয়াল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে গান, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য অনুষ্ঠিত হয় এবং আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি পরিসমাপ্তি ঘটে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি