Home সাহিত্য অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>শুজা রশীদ &colon;<&sol;strong> &lpar;পর্ব à§«à§©&rpar;<&sol;p>&NewLine;<p>কথা বলার আগে বেশ কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন নীতা। &OpenCurlyDoubleQuote;বাবা&comma; আমরা কখনই খুব বড়লোক ছিলাম না কিন্তু মধ্যবিত্তও ছিলাম না। এখানেই হোক আর ঢাকাতেই হোক আমাদের সব সময় একটা বিশেষ ধরনের মর্যাদা ছিল। আমাদের পরিচিত মানুষেরা আমাদেরকে বিশেষ সম্মান করে&comma; আমাদেরকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। বিশাল বাড়ি আর দামী গাড়ি সব সময় বিলাসিতা নয়। অন্যরা আমদেরকে কি নজরে দেখবে সেটা নির্ধারণ করতেও সেগুলোর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা আছে। সবাই সফল মানুষদেরকে পছন্দ করে। সম্মান করে। আর সফলতার ভাবমূর্তি কিন্তু শুধু ব্যাংকে টাকা থাকলেই অর্জিত হয় না। মানুষের জীবনযাপনের মানের উপরেও সেটা নির্ভর করে। আমরা যদি এখন নীচের দিকে পিছলাতে শুরু করি তাহলে সবাই ঝট করে লক্ষ্য করবে। এখন যারা আমাদেরকে দেখে হিংসা বোধ করে&comma; তারা মনে মনে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ অনুভব করবে। তুই স্বেচ্ছায় তাদের কাছে আমাদের সম্মানকে বলী দিতে চাইছিস। আমি সেটা সমর্থন করতে পারি না। যদি তোর এতই অর্থের প্রয়োজন হয় তাহলে আমার যে সব সম্পত্তি আছে সেখান থেকে কিছু আমি বিক্রি করে দেব।” পিন্টু একটা দীর্ঘ শ্বাস নিল। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&comma; আমরা ইতিমধ্যেই সেই দিকটা বিবেচনা করেছি। তুমি তো জানোই তার ফলাফল শেষ পর্যন্ত কি হয়েছে। টাকাটা আমাদের এখনই দরকার। ভবিষ্যতে না। এই মুহুর্তে আমাদের সামনে অন্য কোন পথ খোলা নেই।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;তুই ছিলি একটা সিংহের মত&comma;” নীতা শুষ্ক কন্ঠে বললেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;ঐ মেয়েটা তোকে ভেড়া বানিয়ে ফেলেছে। তুই যখন রিমার পেছনে পাগলা কুকুরের মত দৌড়ে বেড়াচ্ছিলি তখন ব্যাপারটা আমার পছন্দ হয়নি কিন্তু এই ভেবে শান্তনা পাচ্ছিলাম যে তুই যেমন তেমনই আচরণ করছিস। কিন্তু এখন যা করছিস সেটা আমি মানতে পারছি না। এতো বছর ধরে তিল তিল করে আমরা যে মান-সম্মান অর্জন করেছি এই সমাজে&comma; সেটা ধুলোয় গড়াগড়ি খাবে। সবাই কি ভাববে আমাদেরকে&quest; যদি ভাঙ্গি ভাংবো&comma; কিন্তু দুমড়ে মুচকে বিতিকিচ্ছির একটা চেহারা কেন নেব&quest;”<br &sol;>&NewLine;পিন্টু তার বাবার দিকে তাকাল। তিনি কাঁধ ঝাঁকালেন। &OpenCurlyDoubleQuote;নীতা&excl; আমাদেরকে কিছু তো একটা করতে হবে।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;তুমি চুপ কর&excl;” নীতা তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললেন। &OpenCurlyDoubleQuote;তুমি সব সময় আমাদেরকে নীচু করে রাখতে চাও। আমার বাবা ছিলেন ক্ষমতাশালী মানুষ। তার ভয়ে মানুষ কাঁপত&comma; দূর থেকে সালাম দিত&comma; আবার ভালোও বাসত। সফল মানুষদের আচরণ সেই রকমই হওয়া দরকার। আর আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখ। মিন্টু তার বউয়ের গোলাম বনে গিয়েছিল। এইবার ছোটটাও সেই পথে যাচ্ছে। আর কত অসম্মান আমাকে সইতে হবে&quest; রিমা ইতিমধ্যেই আমাদেরকে হারিয়ে ভূত করে দিয়েছে। তার সুবাদে আমাদের মান ইজ্জত অনেক খানি গেছে। মানুষ হয়ত আমাদের মুখের উপর কিছু বলছে না কিন্তু পেছনে নিশ্চয় বলে। এখন যদি আমরা বাড়ী-ঘর ছেড়েছুড়ে বস্তির মত কোথাও গিয়ে উঠি তাহলে চারদিকে ঢি ঢি পড়ে যাবে না&excl;”<&sol;p>&NewLine;<p>পিন্টু মাথা চুলকাল। জানত এই রকম কিছু একটা হবেই। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&comma; আমরা কারো কাছে হেরে যাইনি&comma;” কন্ঠ নীচু রাখলেও বেশ জোরের সাথেই বলে সে। &OpenCurlyDoubleQuote;আমার পন্থাটা ভুল ছিল। তাতে কাজ হয়নি। আমাদের এখন দরকার একটা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো পরিস্থিতিটাকে বিবেচনা করা। ঐ ইন্সুরেন্সের টাকায় আমাদের কখনই কোন অধিকার ছিল না। কিন্তু মিন্টু ভাই আমাদের কাছ থেকে যে টাকাটা জালিয়াতী করে নিয়েছে সেটার উপর আমাদের পূর্ণ অধিকার আছে। সেই টাকাটা আমদেরকে যেভাবেই হোক ফেরত পেতে হবে। ঐ টাকার একটা পয়সাও রিমা ভাবীকে আমি ব্যায় করবার সুযোগ দেব না।”<br &sol;>&NewLine;নীতা ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন। &OpenCurlyDoubleQuote;তোর কি মনে হয় ও জানে টাকাটা কোথায় লুকানো আছে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;যদি কিছু এখনও থেকে থাকে&comma;” লাট্টু বিড়বিড় করে বললেন।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;থাকতেই হবে&comma;” পিন্টু বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;অতগুলো টাকা ভাইয়া কিভাবে নষ্ট করবে আমি ভেবে পাই না। তবে রিমা ভাবী ঐ টাকা সম্বন্ধে কিছু জানে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু অটার হদিস আমি করবই। ছেড়ে দেব না। ঐ টাকা আমাদের।”<br &sol;>&NewLine;নীতা মাথা নাড়লেন। &OpenCurlyDoubleQuote;আমার বিশ্বাসই হয় না মিন্টু ঐ রকম একটা কাজ করবে। ঐ মেয়েই ওকে দিয়ে করিয়েছে। আমার ধারনা ও জানে টাকাটা কোথায় আছে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;তুমি কি করে জানলে&quest;” লাট্টু মৃদু স্বরে আপত্তি করলেন।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;তোমার মতামত কেউ জানতে চায়নি&comma;” নীতা ধমকে উঠলেন।<br &sol;>&NewLine;তারা কিছুক্ষণ চুপচাপ খেল। পরিশেষে পিন্টুই আবার নীরবতা ভাঙল। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&comma; খরচ পাতি কমাতে চাইবার পেছনে তোমার আপত্তির কারণটা আমি বুঝতে পারছি কিন্তু এই মুহুর্তে আমাদের ক্রেডিট হিস্ট্রি ঠিক রাখার এ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তাছাড়া এটা হবে সাময়িক। বছর দুয়েকের মধ্যেই আমরা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবো।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;যেদিন ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করেছিল মিন্টু সেদিন থেকেই আমাদের অধঃপতন শুরু হয়েছে&comma;” নীতা ক্ষুন্ন কন্ঠে বললেন। &OpenCurlyDoubleQuote;কিন্তু আমরা যদি তলিয়েই যাবো তাহলে তার বিনিময়ে আমারও কিছু একটা চাওয়ার আছে।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;কি চাওয়ার আছে&comma; মা&quest;” পিন্টু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে প্রথমে মা এবং পরে বাবার দিকে তাকাল। &OpenCurlyDoubleQuote;খুলে বল।”<br &sol;>&NewLine;নীতা বড় করে একটা শ্বাস নিলেন। &OpenCurlyDoubleQuote;বাড়ি আর গাড়ী নিয়ে তোর যা ইচ্ছা তুই কর কিন্তু আমার রবিনকে চাই। ও মিন্টুর ছেলে। আমরা ওর কাস্টডি পেতে পারি না&quest; পেলে মিন্টুর অন্তত একটা নিদর্শন আমার কাছে থাকত।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কিন্তু সে তো ওর মায়ের কাছে থাকে এবং মা হিসাবে রিমা খুবই ভালো&comma;” লাট্টু অবাক হয়ে বললেন। &OpenCurlyDoubleQuote;ওর কাস্টডি চাইবার পেছনে আমাদের কি যুক্তি থাকতে পারে&quest; আর কাস্টডি পেলেও ওর দেখভাল কে করবে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আমরা কাউকে রাখব&comma;” নীতা বললেন। &OpenCurlyDoubleQuote;ইচ্ছা হলেও ওকে যখন তখন দেখতে পর্যন্ত পারি না। আর ও তো আমাকে এখনও চেনেই না। কিভাবেই বা চিনবে&quest; সারা সপ্তাহে আমাকে একটা ঘন্টার জন্য দেখে বড় জোর। চেয়েছিলাম মাঝে মাঝে সারা দিনের জন্য আনতে কিন্তু রিমা আসতে দেবে না।”<&sol;p>&NewLine;<p>পিন্টু বুঝল এটা আরেকটা জটিল বিষয়। দুইটা ভিন্ন বিষয়কে মিশিয়ে ফেললে সম্পূর্ণ পরস্থিতিটা আরোও জটিল হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রবিনের কাস্টডি পাওয়া অবান্তর প্রশ্ন। তাছাড়া মরিয়মও এই ব্যাপারটা কোন রকমের উদ্যোগ নেয়াটা পছন্দ করবে বলে মনে হয় না। এই জাতীয় কঠিন কেস কোর্টে নিলে উকিলের পেছনেও প্রচুর টাকা ঢালতে হবে। এইসব নিয়ে আপাতত একেবারেই ভাবতে চায় না ও। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&comma; তুমি আরোও ঘন ঘন গিয়ে ওকে দেখে আসো না কেন&quest; যেভাবে চলছে সেভাবেই চলুক না।”<br &sol;>&NewLine;নীতার মুখভাব দেখে মনে হল ভীষন রেগেছেন। &OpenCurlyDoubleQuote;তোর যা ইচ্ছা তাই কর।” অর্ধসমাপ্ত খাবারের প্লেট রেখে উঠে পড়লেন তিনি&comma; হাত ধুয়ে ধুপ ধাপ করে নিজের কামরায় ঢুকে সজোরে দরজা বন্ধ করলেন।<&sol;p>&NewLine;<p>পিন্টু ওর বাবার সাথে দৃষ্টি বিনিময় করল। লাট্টু সম্মতি সূচক মাথা দোলালেন। &OpenCurlyDoubleQuote;নিজেদের সম্মান বাঁচিয়ে টিকে থাকতে হলে এছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমি তোর মায়ের সাথে কথা বলব। ও বুঝবে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঠিক আছে&comma; আব্বা&comma;” পিন্টু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল। এই জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে যাবার প্রথম বাঁধা ছিল নীতা। সেই বাঁধা সম্পূর্ণ দূর না হলেও মনে মনে একটু ভালো বোধ করছে সে। নীতা সম্মতি না দিলেও মনে হয় না খুব একটা বিরোধিতা করবেন।<&sol;p>&NewLine;<p>৭৯<br &sol;>&NewLine;একটা সময় এলো যখন রিমার শয়নে স্বপনে শুধু দোকানের চিন্তাই ঘুরতে শুরু করল। এটা যেন একটা নেশার মত&comma; প্রথমে শুরু হয়েছিল ক্ষুদ্রভাবে&comma; কিন্তু দ্রæà¦¤ তাকে গ্রাস করে ফেলল। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে দীর্ঘক্ষণ জেগে জেগে পরদিন কি কি করবে তার একটা লিস্ট তৈরী করা ওর স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে। ধীরে ধীরে সেই লিস্ট লম্বা হতেই থাকে যেহেতু প্রতিদিনই কিছু না কিছু কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। বাসা আর বাচ্চাদের দেখভাল করার পর ব্যবসার পেছনে ব্যায় করবার জন্য দিনে আর কত ঘন্টাই বা বাকী থাকে&quest; ওর কর্ম দিবস ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে&comma; ঘুমের সময় কমে যেতে থাকে। সর্বক্ষণ ক্লান্ত এবং শ্রান্ত লাগে কিন্তু তারপরও কেমন করে যেন উদ্দীপনা খুঁজে পায়&comma; নিজেকে এগিয়ে নিয়ে চলে।<&sol;p>&NewLine;<p>সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছে ও। প্রতিটা দিন যায় আর আরোও বেশি অস্থিরতা অনুভব করে। অধিকাংশ দেশী কাপড়ের দোকানই ঈদ জাতীয় পর্বনের উপর নির্ভর করে। সেই সুযোগ হাত ছাড়া করা যাবে না। ওর ভাগ্য ভালো যে ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে অভাবিত ভাবে খুব বড় একটা সাহায্য পেয়ে গেছে ও। তার এক পুরানো বান্ধবী সোনিয়া দেশে কাপড়ের ব্যবসার সাথে জড়িত। সে রিমার সাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। দুজনে মধ্যে ফোনে দীর্ঘ আলাপ হয়েছে ব্যবসার নানা ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে। আপাতত সামাল দেবার জন্য রিমা&comma; মাঝে মাঝে ফায়জাও&comma; স্থানীয় সৌখিন যে সব মহিলারা নিজ গৃহ থেকে পোশাকের ব্যবসা করছে তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু বাছাই করা পোশাক কিনেছে। আন্দাজের উপর নির্ভর করে এভাবে কিনে বিক্রি করলে লাভ প্রায় কিছুই থাকে না&comma; ঝুকিও আছে। ঐসব পোশাক আদৌ বিক্রি হবে কিনা কে বলতে পারে&quest; তারপরও দোকানটাকে চালু করতে রিমা এতই ব্যাগ্র যে সেই ঝুঁকি নিতেও সে রাজী।<&sol;p>&NewLine;<p>পরিশেষে&comma; মার্চের মাঝামাঝিতে&comma; এক রোদ্রৌজ্জ্বল কিন্তু শীতল শনিবার দুপুরে&comma; রিমা তার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধব এবং নিকট আত্মীয়দের উপস্থিতিতে দোকানের উদ্বোধনী করল। ধারণাটা এসেছিল মিলার মাথা থেকে। ইদানীং অবশ্য কাজের বাইরে তার অধিকাংশ অবসর সময়ই সে ব্যায় করে ডলির নির্বাচনী প্রচারণায়। তারপরও মাঝে মাঝে সময় খুঁজে নিয়ে হুটহাট করে দোকানে চলে আসে রিমার সাথে দেখা করতে&comma; চেষ্টা করে সাধ্যমত সাহায্য করতে।<br &sol;>&NewLine;দোকানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রচারণার জন্য হাজার খানেক ফ্লায়ার ছেপেছিল রিমা।<&sol;p>&NewLine;<p>গ্র্যান্ড ওপেনিং<br &sol;>&NewLine;শনিবার&comma; মার্চ à§§à§­<br &sol;>&NewLine;ড্যানফোর্থ ফ্যাশান<br &sol;>&NewLine;উদ্বোধনীর দিনে সবকিছু ২০&percnt; কমে বিক্রয় হবে।<&sol;p>&NewLine;<p>ও নিজেই নিকটবর্তি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সেগুলো বিতরণ করেছে। ক্রিসেন্ট টাউনের এপার্টমেন্ট বিল্ডিংগুলোতে বেশি করে দিয়েছে। অসংখ্য দেশী পরিবারের বসবাস এখানে। যদিও ওর ধারনা ওর অধিকাংশ ক্রেতাই হবে প্রবাসী বাংলাদেশীরাই তারপরও ভারতীয়&comma; পাকিস্তানী এবং শ্রীলংকানদের কাছে ওর ব্যবসার খবরটা পৌছে দেবার মধ্যে মন্দ কিছু থাকতে পারে না।<&sol;p>&NewLine;<p>রিমা যা ভেবেছিল তার চেয়ে অনেক ভালো হল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা। শুধু যে ওর নিমন্ত্রিত অতিথিরাই এলো তা নয়&comma; ওর ফ্লায়ার দেখেও বেশ কিছু মানুষ এলো। ওর দোকানের ভেতরের ক্ষুদ্র স্থানটা একেবারে উপচে পড়ল মানুষের ভীড়ে। মিলা এবং নোমানতো ছিলই। ঘনিষ্ট মানুষদের মধ্যে আর যারা এলো তারা হল লিয়াকত ও তার পরিবার&comma; স্বামীসহ আসমা&comma; এপার্টমেন্ট বিল্ডিং থেকে আরিফা কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে&comma; ঢাকা গ্রোসারী থেকে রজনী ও মানিক&comma; বন্ধুদের সাথে কালাম&comma; দুই মেয়েকে নিয়ে মরিয়ম&comma; দোলনকে নিয়ে আবুল&comma; এমনকি লাট্টুও দোকানের জন্য বিশাল একটা ছবি হাতে হাজির হয়েছেন।<br &sol;>&NewLine;লাট্টু উপস্থিত সবাইকে নিয়ে খানিকটা নিজেই উদ্যোগী হয়ে একটা মিলাদ মাহফিল করলেন। তার অভিমত হল এমন খুশীর একটা দিনে আল্লাহকে স্বরণ না করলে চলবে কেন&quest; আল্লাহ চাইলে রিমার দোকান হয়ে উঠতে পারে তার সফলতার সিঁড়ি।<&sol;p>&NewLine;<p>প্রচুর মিষ্টি কিনেছিল রিমা। স্থানীয় একজন মহিলা বাসায় মিষ্টি বানিয়ে ঢাকা গ্রোসারীতে দেন বিক্রির জন্য। রিমা মানিককে বলেছিল তার দোকানে যত মিষ্টি আছে সবগুলো সে কিনবে। শর্ত ছিল মানিককে নিয়ে আসতে হবে। মিষ্টি বিক্রি হয়েছে বলে নয়&comma; মানিক এমনিতেও আসত। ড্যানফোর্থের এই এলাকার সবচেয়ে পুরানো দোকানগুলোর একটার মালিক সে। এলাকায় নতুন কোন দেশী দোকান খুললে সেখানে হাজিরা দেয়াটাকে সে তার পবিত্র দায়িত্ব মনে করে। তার উদ্দ্যেশ্য ভালো। সে মনে প্রাণে চায় এলাকার প্রতিটা ব্যবসা সফল হোক। যে কোন ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য নির্ভর করে চারপাশের সকল ব্যবসায়ের যৌথ সফলতা এবং সমৃদ্ধির উপর। সে সবার সাথে মিলে মিশে থাকতে চায়। লোকটার এই একটা দিক রিমা পছন্দ করে। অন্য কত ব্যবসা এসেছে এবং চলে গেছে কিন্তু মানিক রয়ে গেছে এবং তার দোকানের জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>মিলাদ মাহফিল শেষ হতে মিলাই উদ্যোগী হয়ে সবাইকে মিষ্টি বিতরণ করবার দায়িত্ব নিল। একটা নীল শিফন শাড়ী&comma; হালকা মেকআপ আর ঝলমলে নীলকান্তমণির হার এবং কানের দুলে তাকে একটা নক্ষত্রের মত উজ্জ্বল লাগছে। তবে সুযোগ খুঁজে খুঁজে নোমানের শরীর ঘেষবার ব্যাপারটা দৃষ্টি এড়িয়ে যাবার মত নয়- তার টাই বাঁকা হয়ে আছে&comma; কিংবা ঠোঁটে একটা মিষ্টির কণা লেগে আছে&comma; নতুবা তাকে দেখে খুব তৃষনার্ত মনে হচ্ছে- একটার পর একটা অজুহাত চলতেই থাকে। যখন থেকে নোমানের সাথে মিলার ঘনিষ্টতা নিয়ে নিজের মধ্যে এক ধরনের হিংসাবোধ অনুভব করতে শুরু করেছে রিমা&comma; তখন থেকেই ঐ দুজনার ঘনিষ্টতায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন কোন কিছু করা থেকেই নিজেকে বিরত রাখছে ও। ওদের দুজনার পথে অন্তরায় হতে চায় না ও। ওদের প্রেম হলে ভালোই হবে&comma; দুজনেই সুখী হবে। প্রচুর অর্থহীণ সম্পর্কের পর নোমানের মত একজন নম্র&comma; ভদ্র এবং হৃদয়বান মানুষের প্রকৃত মর্যাদা দিতে শিখেছে মিলা। নোমান ভালো থাকবে। কিন্তু তারপরও হৃদয়ের গভীরে কেন যেন একটা মোচড় অনুভব করে রিমা।<br &sol;>&NewLine;ওকে বিস্মিত করেছে দোলন। সেই আগের চুপচাপ&comma; অন্তর্মুখী মেয়েটা আর নেই। সে এখন টগবগ করে ফুটছে&comma; কথায় এবং হাসিতে উচ্ছল&comma; স্বামীর চেয়ে কালাম এবং তার বন্ধুদের সাথেই তার মনে হল বেশী ঘনিষ্টতা।<&sol;p>&NewLine;<p>ওর দোকানের প্রথম ক্রেতা হল মরিয়ম। চওড়া সবুজ পাঁড় দেয়া একটা হলুদ সুতির শাড়ি এবং ম্যাচিং বøà¦¾à¦‰à¦œà§‡à¦° কাপড় কিনল সে। বøà¦¾à¦‰à¦œà¦Ÿà¦¾ সেলাতে হবে। পেছনের কামরায় গিয়ে তার মাপ নিল রিমা। দিন দুয়েক লাগবে তার সেলাই সারতে। মরিয়ম পরে এসে নিয়ে যাবে। আবুল দোলনের জন্য দু খানা দামী শাড়ী কিনল&comma; একটা সবুজ শিফন&comma; অন্যটা নীল ডোরা কাটা জর্জেট। দোলন অবশ্য শাড়ি-টাড়ি নিয়ে খুব একটা আগ্রহই দেখাল না।<br &sol;>&NewLine;রিমা এই দোকান খোলার সুযোগে নীতার সাথে ওর শান্তি চুক্তিটা পাকা করতে চাইল। ডিজাইন করা পাড়ের একটা মেরুন শাড়ী পছন্দ করে সুন্দর একটা প্যাকেটে মুড়ে একটা গিফট ব্যগের মধ্যে ভরে লাট্টূর হাতে তুলে দিল। নীতার জন্য ওর পক্ষ থেকে উপহার। নীতা সেই শাড়ী কখন পরবে সেই আশা ওর নেই কিন্তু অন্তত নিজের পক্ষ থেকে ও পরিষ্কার থাকবে।<&sol;p>&NewLine;<p>ঘন্টা খানেক পরে মিলা যখন নোমানকে এক রকম জোর করেই নিয়ে চলে গেল নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু প্রচারণা আছে বলে তখনও দোকানে বেশ কিছু মানুষ ভীড় করে আছে&comma; ঘেটে ঘেটে দেখছে জিনিষপত্র। ধীরে ধীরে আরোও মানুষের একটা ক্ষীণ স্রোত তৈরী হল। বোঝা গেল তার ফ্লায়ার আর মানুষের মুখের কথায় কাজ হচ্ছে।<&sol;p>&NewLine;<p>খুশীর ব্যাপার হল ঢাকা থেকে সোনিয়ার বাছাই করা কাপড়ের বান্ডীল এখনও আসেই নি। সেগুলো এলে নিশ্চয় ক্রেতাদের আগ্রহ আরোও অনেক বেশী হবে। নতুন ব্যবসায়ী হিসাবে ওর ব্যবসার সাফল্য যে নির্ভর করে পাবলিসিটির উপর সেটা ও পরিপূর্ণভাবে বোঝে। এই প্রাথমিক সময়টুকুতে মিলা কিংবা নোমান ওর সাথে আরেকটু সময় ব্যায় করতে পারলে ভালো হত। দূর্ভাগ্যবশতঃ ডলির নির্বাচনী প্রচারণাও এখন পুরো দমে চলছে। তারপরও নোমান হয়ত রিমাকে আরোও সাহায্য করতে পারত যদিনা মিলা তাকে নিয়ে সারাক্ষণ টানাটানি করত। ভেতরে ভেতরে বেশ ক্লান্তি অনুভব করে রিমা কিন্তু জানে কোন না কোণভাবে ও ঠিকই মানিয়ে নেবে। এটা তো ওর কত দিনের স্বপ্ন।<br &sol;>&NewLine;ঐদিন রাত আটটার দিকে ও যখন দোকান বন্ধ করে বাসায় যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন নোমানের ফোন এলো। &OpenCurlyDoubleQuote;ঐভাবে হঠাৎ বেরিয়ে আসতে হল বলে খুব দুঃখিত। সব কেমন গেল&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;খুব ভালো&comma;” রিমা ক্লান্ত কন্ঠে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;বাসায় যাচ্ছি। বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়ছে। সেই দুপর থেকে আমার সাথে এখানে বসে আছে।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;সুযোগ বুঝে ওদেরকে বাসায় রেখে আসোনি কেন&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;সময়ই পাই নি। অনেক মানুষ এসেছিল।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;এটাতো খুশীর খবর&excl;” নোমান উচ্ছল কন্ঠে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;কংগ্রাচুলেশনস&excl; দীর্ঘজীবি হোক ড্যানফোর্থ ফ্যাশন।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;নামটা কেমন হয়েছে&quest;” রিমা জানতে চায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;চমক নেই কিন্তু মনে থাকার মত&comma;” নোমান বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;সবাই তোমার সুনাম করছিল। আমি নিজেও চারদিকে তোমার খুব সুনাম করছি। যে কোন রকমের সাহায্য লাগলে জানিও।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;তুমি তো আবার তোমার ক্যাম্পেইন নিয়ে ব্যাস্তৃ”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;অত ব্যাস্ত না&comma;” নোমান দ্রæà¦¤ বলে।<br &sol;>&NewLine;একটা বিকট গোঙ্গানীর মত শব্দ শূনল রিমা&comma; মনে হল রবিনের কন্ঠ।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;সব ঠিক আছে তো &quest; আমি আসব&quest;” নোমান জানতে চায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;না&comma; না&excl; সব ঠিক আছে। রবিন ঘুমিয়ে পড়েছিল। যাইহোক&comma; আমরা বেরিয়ে যাচ্ছি। পরে কথা হবে।”<&sol;p>&NewLine;<p>গাড়ি চালিয়ে বাসায় ফেরার পথে একটা বিস্ময়কর পরিতৃপ্তি অনুভব করে রিমা। মিলা যতই চেষ্টা করুক নোমান বার বার রিমার কাছেই ফিরে আসছে। সময়ের সাথে সাথে নোমানের প্রতি তার নিছক বন্ধুত্বের অনুভুতিটাও কেন যেন মনে হচ্ছে এক ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে। মানুষটাকে শুধু বন্ধু মনে হয় না&comma; আরোও কাছের কেউ মনে হয়। অবাকই হয় রিমা। হঠাৎ এই পরিবর্তনের কারণ কি&quest; নোমান ও মিলার ঘনিষ্টতা দেখেই কি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে লোকটাকে ভালবাসতে শুরু করেছে রিমা&quest;<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version