Home সাহিত্য অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>শুজা রশীদ &colon;<&sol;strong> &lpar;পর্ব ৫৯&rpar;<br &sol;>&NewLine;পরদিন সকালে রিমা দুই ছেলেকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে গেল মিলার কাজের জায়গায়&comma; আশা করছিল তাকে মুখোমুখি ধরবে। মিলা যেহেতু ফায়জাকে টেক্সট করে নিজের অবস্থা জানিয়েছে&comma; তাই ও ধরে নিয়েছিল সে নিশ্চয় খুব বেশি রেগে নেই। রিমা যদি কোন ভাবে পাঁচটা মিনিট মিলার সাথে কথা বলতে পারত তাহলে পুরো ব্যপারটা ব্যাখ্যা করে তার রাগ সে নিশ্চয় ভাঙ্গিয়ে দিতে পারত।<&sol;p>&NewLine;<p>ক্লিনিকের রিশেপশনিস্টের মুখ থেকে যা জানল তাতে সে একেবারেই হতভম্ব হয়ে গেল। মিলা সেইদিন সকালে ফোন করে কাজ ছেড়ে দিয়েছে। কোন কারণ বলে নি। রিমার বুকের মধ্যে ধুকপুক শুরু হয়ে গেল। কি পাগলামি করছে মিলা&quest; যত দ্রæà¦¤ সম্ভব ড্রাইভ করে মিলার বাসায় গেল। মিলার সব জিনিষপত্র এখনও এপার্টমেন্টেই আছে। তাকে কোন এক সময় ফিরতেই হবে সেগুলো নেবার জন্য।<&sol;p>&NewLine;<p>রিমা ড্রাইভওয়েতে গাড়ি পার্ক করে মাত্র বাইরে পা রেখেছিল সেই সময় বাড়িওয়ালা দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। ওকে আসতে দেখেছে সে&comma; গাড়িটা দেখে চিনতে পেরেছে। &OpenCurlyDoubleQuote;শোনো&comma; তোমার বান্ধবী কাল অনেক রাতে ফিরেছিল। ভোর ছয়টায় আমাকে ঘুম থেকে টেনে তুলেছে। বাড়ি ছাড়ার নোটিশ আর দুই মাসের ভাড়া দিয়েছে। তোমার জন্য একটা চিঠিও রেখে গেছে। তুমিই তো রিমা&quest;”<br &sol;>&NewLine;রিমার হাতে একটা খাম গছিয়ে দিল লোকটা।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;কিছু বলেছে&quest; কোথায় যাচ্ছে&quest; ওর অস্থায়ী ঠিকানা&quest; যে কোন তথ্যা পেলেই আমার অনেক উপকার হত” রিমা ভড় ভড় করে অনেকগুলো প্রশ্ন করে।<br &sol;>&NewLine;বয়েসী ভদ্রলোক মাথা নাড়ল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমার হাতে টাকা আর চিঠিটা দিয়েই চলে গেল। আর কিছু বলেনি।”<br &sol;>&NewLine;রিমা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে গাড়িতে চাপল। মনে মনে যেমন অবাক হয়েছে মিলার কান্ডকারখানা দেখে তেমনি উদ্বিগ্নও হয়েছে। এতো দ্রুত সব কিছু ঘটছে। মিলা পাগলের মত ঝটপট এতো কিছু করবে চিন্তাও করেনি। খামটার একটা প্রান্ত ছিড়ে চিরকুট্টা বের করল ও। ছোট চিঠি। দ্রুত পড়তে শুরু করল।<&sol;p>&NewLine;<p>প্রিয় রিমা&comma;<br &sol;>&NewLine;আমি আমার ডাক্তারের কাছেই ফিরে যাচ্ছি। সে একা&comma; নিঃসঙ্গ&comma; আমাকে তার এখন প্রয়োজন। আমাকে নিয়ে অকারণে ভেবো না। আমি ভালো থাকব। আমাকে খুঁজবার চেষ্টা কর না। কোনদিনও না। যখন আমার রাগ খানিকটা পড়বে&comma; আমি নিজেই হয়ত তোমার খোঁজে আসব।<br &sol;>&NewLine;বিঃদ্রঃ হৃদয়ের কথা অবহেলা কর না। নোমানকে আর প্রতীক্ষায় রেখো না।<br &sol;>&NewLine;রিমা ফোন বের করে মিলার নামাবারে কল করল। একটা যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর বলল&comma; এই নাম্বারটি আর সার্ভিসে নেই। গাড়ীর ভেতরে নিঃশব্দে প্রস্তরিভূতের মত বসে থাকে রিমা। ওর ইচ্ছা হয় চীৎকার করে কাঁদে কিন্তু কন্ঠ দিয়ে কোন শব্দ বের হয় না। সে যেন হঠাৎ করেই মুক হয়ে গেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>৯০<&sol;p>&NewLine;<p>মিলার অকস্মাৎ উধাও হয়ে যাবার পর রিমার জীবন যেন প্রায় থেমে যাবার জোগাড় হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ নোমানকে যত ভাবে সম্ভব এড়িয়ে গেছে ও। দোকানেও খুব একটা যায়নি। খাওয়া দাওয়া নামে মাত্র করেছে&comma; রাতে ঘুম বলতেও তেমন হয়নি। সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুকে হারানোর যাতনা অনেক কিন্তু তার চেয়েও বেশি যন্ত্রণাদায়ক হচ্ছে অপরাধবোধটা।<br &sol;>&NewLine;নোমান ওকে কয়েকবার ফোন করেছে। ও যখন ধরে নি তখন বুঝেছে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। সে ফায়জার সাথে যোগাযোগ করে রিমার খবর নিয়েছে। বাসায় কিংবা দোকনে ওর খোঁজে আসেনি। খুব সম্ভবত ওকে একাকী থাকার সুযোগ করে দিয়েছে।<&sol;p>&NewLine;<p>পরের শনিবারে অবশেষে দোকানে এলো নোমান। মিলার চলে যাবার পর এটাই রিমার সাথে প্রথম দেখা করতে আসা তার। দুজনে একসাথে ক্যাম্পেইনিং করতে গেল। ক্রমাগত অনুশোচনা থেকে রিমারও একটু বিরতি নেবার দরকার ছিল। মনটা কিছুটা হলেও ভালো হল। নোমানকে মিলার ডাক্তারের কথা জানাল। নোমান ওকে কথা দিল&comma; মিলাকে খুঁজে বের করবার জন্য ও যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। ডাক্তার ভদ্রলোককে খুঁজে বের করাটা অবশ্য সহজ হবে না কারণ রিমার কাছে তার না আছে নাম-ধাম না একটা ছবি। নোমান ক্লিনিকে একজনকে চেনে। আশা করছে তার কাছ থেকে কিছু একটা তথ্য নিশ্চয় পাওয়া যাবে। রিমা অবশ্য খুব একটা আশান্বিত নয়। শুধু মনে মনে প্রার্থনা করছে যেখানেই থাকুক মিলা যেন ভালো থাকে&comma; নিরপদ থাকে।<&sol;p>&NewLine;<p>মে মাস এলো প্রচুর উজ্জ্বলতা এবং উষ্ণতা নিয়ে। চারদিকে বেশ একটা প্রফুল্লতা। অনেকেই বাসার বেরিয়ে এসেছে&comma; লনের পরিচর্যা করছে&comma; গ্রীষ্মের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ কেউ ফুলের বাগান করছে&comma; বসন্তের শুরুতে গাছপালা লাগাচ্ছে&comma; আবার কেউ কেউ স্রেফ ফুটপথ ধরে ধীর গতিতে হাঁটছে&comma; চমৎকার আবহাওয়াটা উপভোগ করছে। বাচ্চারা স্রেফ হাফ প্যান্ট আর গেঞ্জী পরে চারদিকে ছুটোছুটি করছে। কয়েকজন সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে&comma;এলোপাথাড়ী চালাচ্ছে রাস্তা ধরে। ছয় মাস ব্যাপি কানাডার ভয়াবহ শীতের প্রকোপের পর সবাই যেন বেশ একটা মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।<&sol;p>&NewLine;<p>রবিবার সকাল। রিমা বাসার বাইরে বেরিয়ে ওর লনের আগাছা পরিষ্কার করছিল। বোঝাই যায় আগের বয়স্ক মালিক বহু বছর ধরে কিছুই করেনি। ঘাস বেশ ঘন কিন্তু পরিচর্যা না করার ফলে আগাছায় ছেয়ে গেছে চারদিক। বাড়ির সামনের লনের দিকে তাকানই যায় না। আগাছা ভর্তি ঘাস সম্পূর্ণ তুলে নতুন ঘাস লাগাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হত। কিন্তু তাতে কয়েক হাজার ডলার চলে যাবে। ওর লনের আকার বেশ বড়। আপাতত না করলেও ভবিষ্যতে করবে বলে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিমা।<&sol;p>&NewLine;<p>আপাতত হোম ডিপো থেকে একটা কোদাল আর খান দুই নিড়ানী কিনে এনেছে ও এবং তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে মহা তোড়জোড়ে সামনের লনের এক কোনায় অবস্থিত ছোট বাগানটাকে ঠিক্টহাক করবার চেষ্টা করছিল। একটা গাড়ি এসে থামল ওর ড্রাইভওয়েতে। ওদের সবার কৌতূহলী দৃষ্টির সামনে কালাম হাসি মুখে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আপু। কি খুড়ছেন&quest;” কালাম দুই ছেলেকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে জানতে চাইল। দুই জনাই কালামের খুব ভক্ত হয়ে গেছে।<br &sol;>&NewLine;রিমা মুচকি হাসল। &OpenCurlyDoubleQuote;তুমি কোত্থেকে এসে হাজির হলে&quest; ক্যম্পাইনিং হচ্ছে না আর&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আজকের মত শেষ&comma;” কালাম বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;ভাবলাম বাসায় ফেরর পথে আপনাদের খবর নিয়ে যাই&comma; বিশেষ করে এই দুই বান্দরের। বাগানটা ঠিক করবেন&quest; কোন সমস্যা নেই। আমি করে দিচ্ছি।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;দেখে মনে হল এখানটাতে এক সময় ফুলের বাগান ছিল&comma;” রিমা হেসে বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;মনে হয় না বছর দশেক কেউ এখানে হাত দিয়েছে।”<&sol;p>&NewLine;<p>কালাম ওর হাত থেকে কোদাল আর নিড়ানীগুলো নিয়ে নিল। &OpenCurlyDoubleQuote;আপু&comma; আমরা ছেলেরা এই বাগানের দায়িত্ব নিলাম।”<br &sol;>&NewLine;ফায়জা বলল&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;আমরা কিছু ফুলের গাছ কিনেছি। বাসার ভেতরে আছে। আমি গিয়ে নিয়ে আসছি।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;নিয়ে এসো। এই বাগান ঠিক না করে আমি কোথাও যাচ্ছি না আজ।” কালাম ঘোষনা দিল।<br &sol;>&NewLine;আগের মালিকের একটা পুরানো&comma; নড়বড়ে চেয়ার নিয়ে রোদে বসল রিমা&comma; তিন ছেলের মাটি খোঁড়া দেখছে। ওর আশেপাশের প্রতিবেশীরা যারা পিন্টুর সেই মারপিটের ঘটনার পর ওকে সন্দেহের নজরে দেখতে শুরু করেছিল তাদের অনেকেই একটু গরম পড়তে নিজেরাই জেঁচে এসে আলাপ করেছে। ওর প্রতিবেশীদের অধিকাংশই শ্বেতাঙ্গ। এই শহরে আসার পর নিজ বর্ণের মানুষদের মধ্যে এতো দীর্ঘ দিন থেকেছে রিমা যে এই নতুন পরিবেশে ওর প্রথমে একটু অস্বস্তিই লাগছিল । কিন্তু জিব্রান এবং রবিনকে অবলীলায় প্রতিবেশীদের বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখে ওর সেই অস্বস্তি অনেকখানি চলে গেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>কোণার বাসার মধ্য বয়স্ক মহিলা ওর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ল। ও পাল্টা হাত নাড়ল। পাশের বাসার ছেলেটা তার ছোট একটা নিড়ানী হাতে এলো খোঁড়াখুঁড়িতে সাহায্য করতে। তার মা ছেলের খোঁজ করতে এসে রিমার সাথে কিছুক্ষণ গলসল্প করল।<br &sol;>&NewLine;কালাম তার প্রতিশ্রুতি রাখল। ঘন্টা দুই কঠিন শ্রম দিয়ে বাগানটা ঠিকঠাক করে ফায়জাকে নিয়ে ফুলের গাছগুলো সব লাগাল। রিমা ওকে দুপুরে খেয়ে যেতে বলল। কোন আপত্তি করল না কালাম। অধিকাংশ দিন বাইরে খায়। বাসায় খাবার নিমন্ত্রণ পেলে চক্ষু লজ্জার ধার ধারে না। রিমার কাছে অবশ্য ওর চক্ষু লজ্জা এমনিতেই কম।<br &sol;>&NewLine;বিদায় নেবার আগে রিমার কাছে একটা আবদার করল।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;কি চাও বল&quest;” রিমা জানতে চায়। কালাম কিছু চাইলে না করা সম্ভব হবে না।<br &sol;>&NewLine;কালাম বার কয়েক মাথা চুল্কাল&comma; তারপর লাজুক মুখে হাসল। &OpenCurlyDoubleQuote;আপু&comma; একটা সমস্যায় পড়ে গেছি। আমি এখন যেখানে থাকি ঐ বাড়ীর মালিক আমাকে মাস দুই আগে নোটিশ দিয়েছিল। আমি অন্য একটা জায়গা ঠিক করে রেখেছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে আমার রুমমেট- যার সাথে আমি ভাড়া নিতে যাচ্ছিলাম- পিছিয়ে গেছে। আমার একার পখে ঐ বাসা নেয়া সম্ভব না। জিজ্ঞেস করতে খুব লজ্জা লাগছে কিন্তু আপনার বেসমেন্টে কি মাস খানেক থাকা যাবে&quest; আমি ভাড়া দেব। মাত্র এক মাসের জন্য।”<&sol;p>&NewLine;<p>রিমা মনে মনে পরিত্রাণের নিঃশ্বাস ফেলেল। ভয় হচ্ছিল কালাম মোটা অংকের টাকা পয়সা চেয়ে বসবে। বেসমেন্টের একটা বেডরুমে কালামকে থাকতে দিতে ওর কোন অসুবিধা নেই। কালাম সবসময় ওর প্রয়োজনে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কখন কিছু চায়নি। ও কালামকে বেসমেন্ট এপার্টমেন্টের একটা চাবি দিয়ে দিল। ওর কাছে ভাড়া নেবার প্রশ্নই আসে না কিন্তু সময় পেলে কালাম যদি ওর লনটাকে একটু পরিষ্কার করে দেয় তাহলে অনেক উপকার হবে। কালাম আকর্ণ বিস্তৃত হাসি দিল। চলে যাবার আগে অনেকবার ধন্যবাদ দিল। জানিয়ে গেল কয়েকদিনের মধ্যেই জিনিষপত্র নিয়ে চলে আসবে ও।<&sol;p>&NewLine;<p>৯১<br &sol;>&NewLine;নোমান ডলির ক্যাম্পেইনে ইদানীং আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যায় করছে। তার দলও বেশ ভারী হয়েছে। জাতি&comma; ধর্ম নির্বিশেষে একজোট হয়েছে তারা সবাই&comma; ভীষণ উৎসাহ এবং উদ্দীপনা নিয়ে সমানে কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে। ইলেকশনের আর মাত্র সপ্তাহ চারেক বাকী। প্রায় তিন শো’র মত ভলান্টিয়ার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে। নোমান চেষ্টা করেছে রিমাকে আরোও ঘন ঘন আনতে কিন্তু খুব একটা সফল হয় নি। দোকান ফেলে বাইরে বাইরে বেশি সময় কাটাতে চায় না রিমা। নিজের ব্যবসাটা নিয়ে ওর উদবিগ্নতাটুকু বোঝে নোমান।<&sol;p>&NewLine;<p>মিলা ফিরে আসে নি। নোমান চেষ্টা করেছিল ওকে খুঁজে বের করতে কিন্তু পারেনি। রিমা নিজেও মিলার খোঁজ খবর করেনি। আপাতত তাকে আর বিরক্ত করতে চায় না ও। মিলাকে ও যতটুকু চিনেছে তাতে এই টুকু বুঝেছে সময় হলে সে নিজেই ফিরে আসবে। তাকে খুঁজতে যাওয়া নিরর্থক।<&sol;p>&NewLine;<p>শুক্রুবার রাতে ওর দোকানে এলো নোমান। রিমার প্রিয় কাবাব র্যাপ আর ফান্টা নিয়ে এসেছে বরাবরের মতই। কিন্তু রিমার দোকানে বেশ কয়েকজন খদ্দের ছিল। ঘন্টা খানেক নীরবে অপেক্ষা করল নোমান&comma; ফোনে খবর পড়ল। দোকান ফাঁকা হতে ওর দিকে কৌতূহলী দৃষ্টি মেলে তাকাল রিমা। &OpenCurlyDoubleQuote;অনেকক্ষণ বসে থাকলে দেখি। কি ব্যাপার বল তো&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আগে খাও&comma;” নোমান কাবাবের রোলটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমার অনেক ক্ষুধা লেগেছে। ক্যাম্পেইনিং করতে গিয়ে অনেক হেঁটেছি আজ।”<br &sol;>&NewLine;রিমা কাবাব রোলটা হাতে নিয়ে এক পাশে রাখল। পরে খাবে। আরোও কিছু খদ্দের আসার কথা এখন। &OpenCurlyDoubleQuote;কেমন যাচ্ছে ক্যাম্পেইন&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;খুবই ভালো&excl; সবাই এতো আগ্রহ দেখাচ্ছে যে না দেখলে বিশ্বাস করবে না।” নোমানের চোখ মুখ উদ্ভাসিত হয়ে উঠল আনন্দে।”অপরিচিত মানুষ জন ক্যাম্পেইন অফিসে এসে ডোনেশন করছে&comma; ভলান্টিয়ার হিসাবে নাম লেখাচ্ছে। ভাবছি নির্বাচনের আগে সপ্তাহ দুই কাজ থেকে ছুটি নিয়ে নেব।”<br &sol;>&NewLine;রিমা হাসল। এই জাতীয় স্বার্থহীণ এবং অকপট ব্যবহার নোমানকে সহজেই মানিয়ে যায়। সে মানুষটাই ঐ রকম। তার আর অন্য কোন রূপ নেই। &OpenCurlyDoubleQuote;তুমি নিশ্চয় এতক্ষণ বসে থাকোনি আমাকে এই খবরটা দেবার জন্য&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;তোমার জন্য অপেক্ষা করতে আমার কোন কারণ লাগে না&comma;” নোমান অর্থবহুল ভঙ্গিতে বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;যাইহোক&comma; হাতে নাতে ধরে ফেলেছ। তোমাকে অন্য একটা প্রসঙ্গে কিছু বলার আছে আমার।”<br &sol;>&NewLine;রিমা তাকে মনযোগ দিয়ে নীরিক্ষণ করল। মনে হল না সে হাঁটু গেড়ে বসে তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেবে। নিঃশব্দে অপেক্ষা করতে থাকল।<br &sol;>&NewLine;নোমান গলা পরিষ্কার করল। &OpenCurlyDoubleQuote;মনে আছে&comma; আমি যে বলেছিলাম ফায়জা ওর বাবাকে বলেছিল এখানে এসে ওদের সাথে দেখা করতে&quest;”<br &sol;>&NewLine;রিমা একটা গভীর শ্বাস নিল। &OpenCurlyDoubleQuote;সত্যি সত্যিই আসছে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;চলে এসেছে।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;কোথায়&quest;” রিমা বিতৃষ্ণা নিয়ে জিজ্ঞস করল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কেনেডীর হোটেল শেরাটনে।” নোমান লক্ষ্য করল রিমার মুখ বিরক্তিতে ভরে গেছে। &OpenCurlyDoubleQuote;ভয় পেও না&excl; সে এসেছে শুধু বাচ্চাদেরকে দেখার জন্য। তোমার সাথেও দেখা করতে চেয়েছে কিন্তু তুমি যদি না চাও তাহলে চাপাচাপি করবে না।”<br &sol;>&NewLine;রিমা একটা চেয়ারে বসল। ওর হার্ট বিট বেড়ে গেছে। বুঝতে পারে নি এতো দ্রæà¦¤ ঘটবে ব্যাপারটা। &OpenCurlyDoubleQuote;এখন কিভাবে কি হবে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ফায়জা হোটেলে গিয়ে তার সাথে দেখা করতে চায়। ও চায় আমি ওদের দুই ভাইবোনকে সাথে নিয়ে যাই। কিন্তু সেইজন্য তোমার অনুমতির প্রয়োজন আছে।” নোমান সতর্ক কন্ঠে বলে।<br &sol;>&NewLine;রিমাকে দেখে উদ্বিগ্ন মনে হল &OpenCurlyDoubleQuote;কিন্তু যদিৃ” মনের কথাটা প্রকাশ করল না ও। কিন্তু র মাথায় কি চিন্তা ঘুরছে সেটা বুঝতে নোমানের কোন অসুবিধা হল না।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;বাচ্চাদেরকে নিয়ে যদি সে সত্যিই কোন সমস্যা করতে চাইত তাহলে অনেক আগেই করতে পারত&comma;” নোমান বলল।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;তখন তো জানত না আমি কোথায় ছিলাম&comma;” রিমা বলল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আমার ধারণা জানত। মানুষ খুঁজে বের করা আজকের দুনিয়ায় আর তেমন কঠিন কাজ নয় বিশেষ করে তুমি যদি টরন্টোর মত শহরে বাস কর।” নোমান বলল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;তুমি বাচ্চাদের সাথে সর্বক্ষণ থাকবে&comma;” রিমা চিন্নিত মুখে বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি গাড়িতে অপেক্ষা করব&comma; হোটেলের পার্কিং লটে। বড় জোর এক ঘন্টা। তার কাছ থেকে ওরা যেন কোন রকমের উপহার না নেয়।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;রিমা&comma; কি বলছ তুমি&excl;” নোমান আপত্তি জানাল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আচ্ছা ঠিক আছে উপহার নিতে পারে কিন্তু কোন টাকা পয়সা যেন না নেয়। আমি চাই না সে ভাবুক সে আমাদেরকে দয়া করছে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঠিক আছে। কাল বিকালে&quest;” নোমান বলল।<br &sol;>&NewLine;রিমা মাথা নাড়ল। &OpenCurlyDoubleQuote;এক ঘণ্টা।”<br &sol;>&NewLine;নোমান ঘাড় নাড়ল। &OpenCurlyDoubleQuote;ফায়জার উপর নির্ভর করবে। তুমি না হয় ওর সাথে কথা বল।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঠিক আছে।” রিমা মাথা নেড়ে বলল।<&sol;p>&NewLine;<p>পরিশেষে&comma; রিমা ফায়জা এবং জিব্রানের সাথে হোটেলে না যাওয়াই সাব্যস্ত করল। ভালো দেখাত না। তাছাড়া নোমান যেভাবে তার দিকে তাকাচ্ছিল তাতে একটু লজ্জাও পেউএ গেছে ও। ওর মাথায় কোন দোষ দেখা দেয় নি। ডিভোর্সড বাবা-মায়েরা অনেক সময়ই বাচ্চাদের কিডন্যাপ করে পালিয়ে যায়। এই রকম ঘটনা অহরহ ঘটে।<br &sol;>&NewLine;ওর মত পরিবর্তনে নোমানকে খুব খুশি মনে হল। নিশ্চিত করল কোন সমস্যা হবে না। পরিপূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে নোমানের হাতে দুই ছেলেমেয়েকে তুলে দিয়ে রবিনকে নিয়ে বাসাতেই থেকে গেল রিমা। এক ঘন্টার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সেটাও সরিয়ে নিতে হয়েছে ফায়জার বিশেষ অনুরোধে।<&sol;p>&NewLine;<p>হাইওয়ে ৪০১ এবং কেনেডি রোডের কাছে অবস্থিত হোটেলটাতে পৌঁছাতে মাত্র দশ পনের মিনিট লাগল। রিমা ভেবেছিল হয়ত বড় জোর ঘন্টা দুই চলবে মিটিং। ও রবিনকে খাইয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করল কিন্তু ছেলেটা কিছুতেই ঘুমাবে না। চীৎকার করতে শুরু করায় তাকে নিয়ে টেলিভিশনের সামনে বসতে হল। চ্যানেল পালটে ট্রি হাউজে দিয়ে হাঁ করে দেখতে লাগল রবিন। রিমা তার পশে বসে মনে মনে মিনিট গুনছে। ওর খুব অস্থির লাগছে। বাচ্চাদের সত্যিকারের বাবাকে চিনবার অধিকার আছে কিন্তু ও চায় না তারা লোকটাকে পছন্দ করুক। কিন্তু আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই ওর। বাচ্চারা ফিরলেই জানা যাবে কি হল সেখানে।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version