Home সাহিত্য অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

অথৈ সমুদ্রে নীলিমা : (একটি ধারাবাহিক উপন্যাস)

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>শুজা রশীদ &colon;<&sol;strong> &lpar;পর্ব ৬২&rpar;<&sol;p>&NewLine;<p>আবুল কালামকে ঠেলে দরজার সামনে থেকে সরিয়ে সরিয়ে দিয়ে ভেতরে ঢুকে যাবার চেষ্টা করল। কালাম তাকে সজোরে ধাক্কা দিল&comma; হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল আবুল। মরিয়ম দৌড়ে গেল ভাইয়ের কাছে। &OpenCurlyDoubleQuote;ভাইয়া&comma; ব্যথা পেয়েছ&quest;”<br &sol;>&NewLine;আবুল হাচড়ে পাচড়ে উঠে দাঁড়ায়। &OpenCurlyDoubleQuote;দোলনের সাথে আমার দেখা করতেই হবে। ওর সাথে কথা না বলে আমি এখান থেকে যাবো না। দরকার হলে সারাদিন সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকব।”<&sol;p>&NewLine;<p>রিমার নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয়। এই পরিস্থিতিতে তার কি করা উচিৎ&quest; পুলিশ ডাকবে&quest; যদি পিন্টু আসত তাহলে ও ইতিমধ্যেই পুলিশে ডাকত কিন্তু মরিয়ম আর তার ভাই কখন কোন ক্ষতি করেনি ওর। এই পরিস্থিতিটা শান্তিতে মিটমাট হলেই ভালো হয় কিন্তু কালাম আর দোলনকে তাড়িয়ে না দিয়ে সেটা কিভাবে সম্ভব মাথায় আসে না ওর। কালাম যে রকম আগ্রাসী আচরণ করছে তাতে তার সাথে ভদ্রভাবে কোন আলাপ করাই অসম্ভব মনে হচ্ছে।<br &sol;>&NewLine;ঠিক সেই সময় দোলন বেসমেন্টের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলো&comma; তার সাথে একটা সুটকেস। কালাম তার দিকে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকাল। &OpenCurlyDoubleQuote;কি করছ তুমি&quest; বাসায় ফিরে যাচ্ছ&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;এখান থেকে চলে যাই&comma; চল&comma;” দোলন বলে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কোথায়&quest;” কালাম হতবিহবল কন্ঠে বলল।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;একটা জায়গা পেয়েছি। এসো।” দোলন দরজা টপকে বাইরে আসে। কালাম তার হাত থেকে সুটকেস্টা নিয়ে তার পিছু নেয়।<br &sol;>&NewLine;স্ত্রীর দর্শনে মুহুর্তের জন্য জমে যায় আবুল&comma; তারপর দৌড়ে যায় তার দিকে। &OpenCurlyDoubleQuote;দোলন&comma; আমার কথা শোন&comma; প্লিজ&excl; কেন আমার সাথে এই রকম করছ তুমি&quest; আমি তোমাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসি। দোলন&excl;”<br &sol;>&NewLine;দোলন ভ্রূ কুঁচকে তার দিকে তাকাল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমার পিছু নিও না&comma;” চীৎকার করে উঠল সে। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি আমার জীবন নতুন করে গড়তে চাই। আমাকে পুলিশ ডাকতে বাধ্য কর না।”<br &sol;>&NewLine;আবুল হাত বাড়িয়ে দোলনের একটা হাত চেপে ধরার চেষ্টা করে কিন্তু তার আগেই কালাম এগিয়ে এসে তার মুখে ঘুষি মারল। ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠে দ্রæà¦¤ পিছিয়ে গেল আবুল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ওকে মেরো না&comma;” দোলন বিরক্ত কন্ঠে কালামকে লক্ষ্য করে বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;আসো আমার সাথে। তোমার গাড়ি কোথায়&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঐ তো সামনে&comma;” কালাম আঙ্গুল দিয়ে দেখায়। তারপর আবুলের দিকে ফেরে। &OpenCurlyDoubleQuote;মাফ করে দিয়েন আবুল ভাই&excl;”<&sol;p>&NewLine;<p>আবুল ব্যাথায় কঁকাচ্ছিল। &OpenCurlyDoubleQuote;হারামী শালা&excl;” সে গর্জে উঠল।<br &sol;>&NewLine;দোলন মরিয়ম এবং রিমাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে এগিয়ে যায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;দোলন&excl;” মরিয়ম পিছু ডাকে। &OpenCurlyDoubleQuote;ভেবে চিন্তে করছ তো সব&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;হ্যাঁ&comma; মরিয়ম আপা। আমাকে আমার মত বাঁচতে দিন।” দোলন পিছু না ফিরেই বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি কয়েক দিনের মধ্যেই ডীভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেব।”<br &sol;>&NewLine;কালাম রিমার দিকে একটা রাগী চাহনি দিয়ে বাক্সটা গাড়ীর পেছনে তুলে দেয়। &OpenCurlyDoubleQuote;রিমা আপু&comma; এই কাজটা আপনার করাটা উচিৎ হয় নি। আমি আপনার ছোট ভাইয়ের মত। আপনাকে আর আপনার বাচ্চাদের রক্ষা করবার জন্য আমি আমার জীবন দিতে পর্যন্ত প্রস্তুত ছিলাম। ওরা কারা&quest; পিন্টুর আত্মীয়। ওরা আপনার ভালোমন্দ নয়ে বিন্দু মাত্র মাথা ঘামায় না। আর আপনি আমাদেরকেই এভাবে বের করে দিচ্ছেন&quest; আপনার লজ্জা হওয়া উচিৎ। জীবনে ভুলব না এটা- কসম খোদার&excl;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;এসো তো&quest;” দোলন ধমকে ওঠে।<br &sol;>&NewLine;আবুল একটু ধাতস্থ হয়েছে। সে সেলফোন বের করল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি পিন্টুকে ডাকছি। যেও না কালাম। ও আসুক আগে।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;ওর আমি থোড়াই কেয়ার করি&excl;” কালাম ক্ষ্যাপা গলায় বলে।<br &sol;>&NewLine;দোলন গাড়ির ভেতরে ড্রাইভারের সীটে উঠে বসেছে। &OpenCurlyDoubleQuote;ভেতরে ঢোকো তো&comma;” সে তাড়া দেয়। কালাম দ্রুত ওর পাশে গিয়ে বসে। দোলনকে গাড়ীর চাবি দেয়। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দোলন শান্ত ভাবে চালিয়ে চলে গেল।<br &sol;>&NewLine;আবুল গাড়ির পেছন পেছনে দৌড়ে যায়&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;দোলন&excl; দোলন&excl;”<br &sol;>&NewLine;পিন্টু ফোনে ছিল। &OpenCurlyDoubleQuote;কি হয়েছে আবুল ভাই&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ওরা চলে গেল&comma; পিন্টু। কালাম আমাকে মেরেছে। কিছু একটা কর তুমি&comma;” আবুল ক্ষ্যাপাটে কন্ঠে বলে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আপনি ফোনটা মরিয়মকে দেবেন&quest;” পিন্টু বলল।<br &sol;>&NewLine;আবুল ফোনটা মরিয়মকে দেয়। &OpenCurlyDoubleQuote;মরিয়ম&quest;” পিন্টু শান্ত কন্ঠে বলে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;হ্যাঁ&comma; বল&comma;” মরিয়ম একটু দূরে সরে যায় সবার কাছ থেকে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কি হয়েছে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;দোলন কালামের সাথে রিমাদের বেসমেন্টের এপার্টমেন্টে ছিল। এখুনিই চলে গেল।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;তুমি কি চাও আমি কিছু করি&quest;” পিন্টু জানতে চায়।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;না&comma; চাই না। আমাদের যা করার করেছি&comma;” মরিয়ম শান্ত কন্ঠে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;কিচ্ছু কর না। আমার ভাইকে আমি সামলাব।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঠিক আছে। পরে দেখা হবে।” পিন্টুর কন্ঠ শুনে বোঝা গেল সে স্বস্তি বোধ করছে।<br &sol;>&NewLine;মরিয়ম নিজেও এই সবের মধ্যে আরে জড়াতে চায় না। এতো বছর পর পিন্টুকে বদলে ফেলতে পেরেছে ও। কোন কারণে সেটা ধ্বংস করতে চায় না। সে আবুলের কাছে ফোনটা ফিরিয়ে দিল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কি বলল ও&quest;” আবুল জানতে চায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;বাসায় গিয়ে আলাপ করি চল&comma;” মরিয়ম সংক্ষেপে বলে। তারপর রিমার দিকে ফেরে। &OpenCurlyDoubleQuote;এইসবের জন্য আমি খুবই দুঃখিত রিমা। তোমার জীবনটা আমরা সবাই মিলে বারবার এলোমেলো করে দিচ্ছি। আমি মন থেকে ক্ষমা চাইছি। ভালো যে বাচ্চারা কেউ বাসায় নেই।”<&sol;p>&NewLine;<p>রিমা কাঁধ ঝাঁকায়। কি বলবে বুঝতে পারে না। কালাম যে এইভাবে ওর ভালোমানুষিতার সুযোগ নেবে সেটা ও চিন্তাও করে নি। ছেলেটাকে বিশ্বাস করেছিল ও&comma; কোন রকম প্রশ্ন না করেই ওর হাতে বেসমেন্ট এপার্টমেন্টের চাবি তুলে দিয়েছিল। এরপর কাউকে বিশ্বাস করতে ওর অসুবিধাই হবে।<&sol;p>&NewLine;<p>৯৬<&sol;p>&NewLine;<p>দোলনের ঘটনাটার পর রিমার মনটা একটু খারাপ হয়ে ছিল। কালামকে ও বাস্তবিকই ভাইয়ের মত দেখত এবং ওর দরকারের সময় যে কোন সাহায্য করতে পারে নি সেটা নিয়ে ভেতরে ভেতরে কষ্ট পাচ্ছিল। মিন্টুর মৃত্যুর পর আহমেদ পরিবারের সাথে ওর অনেক ঝামেলা গেছে। দোলনকে জেনে শুনে যদি ওর বাসায় একটা রাতের জন্যও থাকতে দিত তাহলে ঝামেলা শুধু বাড়তই। কালামের অনেক বন্ধু বান্ধব আছে। কিছু একটা উপায় সে নিশ্চয় বের করে ফেলবে। মনে মনে শান্তনা পাবার চেষ্টা করে ও।<br &sol;>&NewLine;কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি&comma; কালামও দোলন সংক্রান্ত ব্যাপারে রিমাকে বিশ্বাস করেনি। প্রথম থেকেই ওর কাছে মিথ্যে বলেছে। যদি রিমার সাহায্যের তার প্রয়োজন থাকত তাহলে নিজের থেকেই সব খুলে বলা উচিৎ ছিল ওকে। তারপরও&comma; মনে মনে একটু অপরাধ বোধ করছিল। কালামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করল। ফোন ধরল না ছেলেটা। বেশ কয়েকটা ভয়েস মেইল রাখল। কালাম কোন উত্তর দিল না। এরপর আর রিমার কিছুই করার নেই। সুতরাং ও চেষ্টা করল ব্যাপারটা ভুলে যেতে।<&sol;p>&NewLine;<p>নির্বাচনের ঠিক আগের দিন&comma; জুনের ৬ তারিখে&comma; ফায়জা মায়ের ফেরার জন্য অনেক রাত পর্যন্ত জেগে অপেক্ষা করে থাকল। রিমা একটু বিরক্ত হল। &OpenCurlyDoubleQuote;মাঝ রাত হয়ে গেছে এখনও ঘুমাও নি&quest; ভোট নিয়ে বেশী উত্তেজিত হয়ে আছো নাকি&quest;”<br &sol;>&NewLine;ফায়জা মাথা নাড়ল। &OpenCurlyDoubleQuote;না&comma; ব্যাপার সেটা নয়।” মায়ের পিছু পিছু তার ঘরে গেল। &OpenCurlyDoubleQuote;তোমার সাথে একটু আলাপ করতে পারি&quest;”<br &sol;>&NewLine;রিমা অনেক ক্লান্ত ছিল। হাত-মুখ ধুয়ে কিছু একটা খেয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়তে পারলে বাঁচে কিন্তু ফায়জা কি বলতে চায় সেটা না বলে ওকে নিস্তার দেবে বলে মনে হল না। &OpenCurlyDoubleQuote;বল&comma; কি বলবে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কাল ভোট দেবে কখন&quest;” ফায়জা বলল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;সকালেই হয়ত। কেন&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;নোমান আঙ্কেল জিজ্ঞেস করছিল&comma;” ফায়জা বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;তোমার সাথে আজ কথা হয়েছে তার&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;নাতো। তোমার সাথে কথা হয়েছে&quest;” রিমা দ্রæà¦¤ কলার আইডি দেখল। নোমান ফোন করেনি।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;হ্যাঁ&comma; বলেছিল নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে খুব ব্যাস্ত থাকবে কাল দিনের বেলা। কিন্তু সন্ধ্যায় ক্যাম্পেইন অফিসে যাবে। আমাদেরকেও সেখানে যেতে বলেছে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ক্যাম্পেইন অফিসে&excl; কেন&quest;” রিমা বিহŸà¦² কন্ঠে বলে।<br &sol;>&NewLine;ফায়জা ছদ্ম বিরক্তিতে ভ্রূ কুঁচকায়। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&excl; আমরা কাল জিতব। অফিসে বিরাট বড় পার্টী হবে। সবাই থাকবে সেখানে। আমাদের যেতেই হবে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আগেই এতো জল্পনা কল্পনা করার কোন দরকার নেই&comma;” রিমা সতর্ক কন্ঠে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;যদি আমরা সত্যি সত্যিই জিতি তাহলে আমরা পার্টিতে যাব। ঠিক আছে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ঠিক তো&quest;” ফায়জা বলে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;একেবারে ঠিক। আগে তো জিতি।” রিমা বাথরুমে চলে যায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কোন অজুহাত দিতে পারবে না তখন&comma;” ফায়জা পেছন থেকে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;বল না – আমি খুব ব্যাস্ত – অনেক কাস্টোমার আছে – ইত্যাদি ইত্যাদি।”<br &sol;>&NewLine;রিমা বাথরুমের ভেতরে থেকে হেসে ওঠে। &OpenCurlyDoubleQuote;আচ্ছা&comma; আচ্ছা&comma; বলব না। এবার ঘুমাতে যাও।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;গুড নাইট&comma; মা&excl;” ফায়জা নিজের কামরায় চলে যায়। পরের দিন আসার অপেক্ষায় বিচলিত হয়ে আছে ও। রাতে ঘুমাতে পারবে কিনা সন্দেহ।<&sol;p>&NewLine;<p>জুব ৭।<br &sol;>&NewLine;নির্বাচনের দিন।<br &sol;>&NewLine;জীবনে প্রথমবারের মত রিমা ভোট দিল। এড়িয়ে যাবার কোন উপায় ছিল না। স্কুলে যাবার আগে ফায়জা ওকে কয়েকবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেছে। তারপর এগারোটার দিকে নোমান ফোন দিল। বলল ভলান্টিয়ারদের সাথে সেই সকাল থেকে কাজ করছে। সমর্থকদেরকে ফোন করছে&comma; যাদের গাড়ি নেই তাদেরকে ভোটকেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা করছে&comma; বয়েসী ভোটারদেরকে বাসা থেকে তুলেও নিয়ে আসছে এবং পরে আবার বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসছে।<&sol;p>&NewLine;<p>দুনিয়া জাহান্নামে গেলেও আজ আমি ভোট দেবই। নোমানকে আশ্বস্ত করেছিল ও।<br &sol;>&NewLine;ভোট দেবার ব্যাপারটা খুব দ্রæà¦¤ এবং স্বাচ্ছন্দ্যে হয়ে গেল। এতো ঝট করে হয়ে যাবে ভাবে নি রিমা। ওর ধারণা ছিল ভোটকেন্দ্রে মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যাবে&comma; কয়েক ঘন্টা লেগে যাবে ভোট দিতে। বাস্তবে মাত্র পনের মিনিটের মধ্যেই সব হয়ে গেল। লাইনে প্রায় কেউই ছিল না। ও নোমানকে টেক্সট করে জানিয়ে দিল। &OpenCurlyDoubleQuote;দিয়েছি&excl;”। তারপর দোকানে ফিরে গেল। বিশ মিনিট পরে উত্তর এলো।<br &sol;>&NewLine;অবস্থা খুবই ভালো যাচ্ছে। আশায় প্রহর গুনছি।<br &sol;>&NewLine;ইতিহাস তৈরি করার জন্য&quest; রিমা একটু ঠাট্টা না করে থাকতে পারে না।<br &sol;>&NewLine;রাতে বিজয় পার্টীতে তোমার সাথে দেখা হবে&excl; নোমান উত্তর দিল।<br &sol;>&NewLine;নিশ্চয়। গুড লাক। রিমা লিখল।<br &sol;>&NewLine;সত্যি সত্যি ভোটে জিতে গেলে ডলির নির্বাচনে যে শত শত স্বেচ্ছা কর্মীরা কাজ করেছে তাদের যে কতখানি আনন্দ হবে সেটা ভাবতেও ভালো লাগে ওর। মনে মনে আশা করে সবাই যেভাবে ভাবছে সেভাবেই যেন ঘটে। এই জয় কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য বয়ে আনবে এক অভিনব সম্মান।<&sol;p>&NewLine;<p>দোকানে শেষ বিকালের দিকে হঠাৎ করেই খুব ব্যাস্ত হয়ে উঠল। অল্পক্ষনের মধ্যেই এতো মগ্ন হয়ে গেল ও যে নির্বাচন সংক্রান্ত সব চিন্তা মাথা থেকে উধাও হয়ে গেল।<br &sol;>&NewLine;রাত নয়টার একটু পরে রিমার সেল ফোন বেজে উঠল।<br &sol;>&NewLine;তখনও দোকানেই ছিল ও&comma; কিন্তু দরজা বন্ধ করে রেখেছে। কোন কাস্টোমার নিচ্ছে না। সেলাই মেশীনে কাজ করছিল। প্রচুর কাজ জমে গেছে। চেষ্টা করছে যতখানি সম্ভব শেষ করার। তারপরও ফোনটা ধরল&comma; বাসায় কোন খারাপ কিছু ঘটল কিনা কে জানে। রবিনকে নিয়েই ওর যত চিন্তা।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;মা&excl; মা&excl; কি বলেছিলাম তোমাকে&quest;” ফায়জা অন্য প্রান্ত থেক গলা ফাটীয়ে চেঁচাচ্ছে। &OpenCurlyDoubleQuote;আমরা জিতে গেছি। ডলি আন্টি জিতে গেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>একটু পরেই পার্টীতে যাবো আমরা। জলদি বাসায় আসো&excl;”<br &sol;>&NewLine;রিমা কানের পাশ থেক ফোনটাকে বেশ খানিকটা দূরে ধরে থাকল। কয়েকটা মুহুর্ত দিল ফায়জাকে শান্ত হবার।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ফলাফল ইতিমধ্যেই বেরিয়ে গেছে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;অধিকাংশই বেরিয়ে গেছে। ডলি আন্টী অনেক এগিয়ে আছে। তাকে সংবাদ নেটয়ার্ক গুলো বিজয়ী বলে ঘোষনা দিয়েছে।&&num;8221&semi; উত্তেজনায় ফেটে পড়ছে ফায়জা। &OpenCurlyDoubleQuote;সবাই ক্যাম্পেইন অফিসে থাকবে। মা &comma; জলদি চলে আসো। আমার ওখানে যেতেই হবে।”<br &sol;>&NewLine;মেয়ের আনন্দ আর উত্তেজনাটা উপলব্ধি করে রিমা। হাতের অসমাপ্ত কাজটার দিকে নজর বোলায়। যাক গিয়ে। পরে করলেই চলবে। আজ রাতে এই বিজয়ের জন্য উৎসব করতেই হবে। &OpenCurlyDoubleQuote;আচ্ছা&comma; আমি আসছি। নোমানের সাথে কথা হয়েছে তোমার&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;সেও ওখানে থাকবে&comma;” ফায়জা বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;তাড়াতাড়ি আসো মা&excl; আমি দুই ছেলেকে রেডী করছি।”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;রবিন কেমন আছে&quest;” রিমা উদ্বিগ্ন কন্ঠে জানতে চায়। ছেলেটা বেশী মানুষ জন কিংবা শব্দ পছন্দ করে না। ঐ পার্টীতে গিয়ে তার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে বলা শক্ত।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;সেতো ভালোই আছে&comma;” ফায়জা দ্রæà¦¤ বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;একটু ঘুম ঘুম। আমার কোলে ঘুমিয়ে থাকবে। এখুনি বাসায় আসো তুমি। প্লিজ&excl;”<br &sol;>&NewLine;রিমা দ্রুত দোকান বন্ধ করে গাড়ি চালিয়ে বাসায় ফিরে এলো। বাসায় ফিরে দেখল ফায়জা ফোনে নীতার সাথে আলাপ করছে। রিমাকে দেখে ফোনের স্পিকারে হাত দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;নীতা দাদী। রবিনের সাথে কথা বলতে চান। কিন্তু রবিন চায় না।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কোথায় ও&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;ওর ঘরে&comma;” ফায়জা বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;ওকে পোশাক পরাতে পারি নি। খুব তেঁতো হয়ে আছে হঠাৎ করে। তুমি একটু দেখবে মা&quest;” আবার ফোনে কথা বলে ও। &OpenCurlyDoubleQuote;হ্যাঁ&comma; দাদী&comma; মা মাত্র বাসায় ফিরল। আমরা ক্যাম্পেইন অফিসে যাচ্ছি বিজয় পার্টিতে।”<br &sol;>&NewLine;কয়েক মুহুর্ত নীরবে শুনল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমরা সবাই যাচ্ছি। তুমিও চলে আসো না&comma; দাদী।”<br &sol;>&NewLine;বার দুয়েক হ্যাঁ-হুঁ করে ফোন রেখে দিল ও।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ওনারাও আসছেন নাকি পার্টীতে&quest;” রিমা জানতে চাইল।<br &sol;>&NewLine;ফায়জা মাথা নাড়ল। &OpenCurlyDoubleQuote;না&comma; উনি আসবেন না কিন্তু পিন্টু চাচু আর মরিয়ম চাচী হয়ত আসতে পারে। তারা একটা বাড়ী দেখতে গিয়েছিল। রবের সাথে কথা বলেছ&quest; আমি ওকে অনেক খেলনা টেলনা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি&comma; কোন কাজ হয়নি।”<br &sol;>&NewLine;রিমা সোফায় হাত ব্যাগটা রেখে গেল ছেলেদের খোঁজে। জিব্রান পোশাক পরে প্রস্তুত। রবিন বিছানায় শুয়ে আছে&comma; ক্লান্ত&comma; চুপচাপ। ওর জন্য এটা খুব একটা স্বাভাবিক নয়। রিমা বিছানায় বসে ওর কপাল হাত দিয়ে ছুল। ঠিক যা ভেবেছিল। রবিনের জ্বর। ফায়জা দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;সামান্য একটু জ্বর মা&excl; তেমন কিছু না&excl;” ফায়জা দ্রæà¦¤ বলে।<br &sol;>&NewLine;রিমা তার দিকে একটু বিরক্ত দৃষ্টিতে তাকাল। &OpenCurlyDoubleQuote;তোমার উচিৎ ছিল আমাকে আগেই বলা। আমি তোমাকে বলতাম ওকে একটু ওষুধ দিতে। এতক্ষণে জ্বর চলে যেত।”<br &sol;>&NewLine;ফায়জাকে দেখে বিষন্ন মনে হল। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি জ্বর মেপেছিলাম। মাত্র ৯৯&period;à§« দেখিয়েছিল। ওটাতো কিছু না।”<br &sol;>&NewLine;রিমা মেয়ের দোষ দিতে পারে না। জানে রবিন অসুস্থ হয়ে পড়লে রিমার আর যাওয়া হবে না। &OpenCurlyDoubleQuote;নোমানকে ফোন দাও। সে এসে তোমাকে নিয়ে যাক। রবিনকে এভাবে আমি নিয়ে যেতে পারব না। তুমি তো জানই বেশী মানুষ জন দেখলে ও কেমন করে। শরীর খারাপ থাকলে আরোও বিরক্ত করবে।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;এখন তো অনেক শান্ত হয়েই আছে&comma;” ফায়জা বলল।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কিন্তু ওখানে অনেক শব্দ হবে। তোমার কি মনে হয় তখন এমন শান্ত হয়ে থাকবে&quest; আমাকে থার্মোমিটারটা দাও।”<&sol;p>&NewLine;<p>রবিনের তাপমাত্রা একশ’র কাছাকাছি। নাকে সামান্য সর্দি। হয়ত স্কুল থেকে ফ্লু বাঁধিয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যেই চলে যাবে। রিমা তাকে বাচ্চদের টাইলানল দিল জ্বরের জন্য এবং হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করল। ফায়জাকে দখে মনে হল তার মন ভেঙে গেছে। মুখ ফ্যাঁকাসে&comma; চোখ টলমল। মেয়েটার জন্য ভীষণ খারাপ লাগে রিমার। &OpenCurlyDoubleQuote;নোমানকে ফোন দিয়েছ&quest;”<br &sol;>&NewLine;মাথা নাড়ল ফায়জা। &OpenCurlyDoubleQuote;আমি চাই না।”<br &sol;>&NewLine;রিমা অবাক হল। &OpenCurlyDoubleQuote;কেন নয়&quest;”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;ওকে বিরক্ত করতে চাই না&comma;” ফায়জা অস্থির কন্ঠে বলল। &OpenCurlyDoubleQuote;চল যাই&comma; মা&excl; রবিন ভালোই থাকবে। আমি ওকে ঠান্ডা করে রাখব। আমরা এক ঘন্টার মধ্যেই ফিরে আসব। প্রতিজ্ঞা করছি।”<br &sol;>&NewLine;রিমা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে। &OpenCurlyDoubleQuote;ফায়জা&comma; তুমি তো জানই হৈ হট্টগোলে ও কত খারাপ বোধ করে। ওর শরীর অনেক খারাপ হয়ে যেতে পারে। আচ্ছা&comma; এক কাজ করি। আমি নোমানকে ফোন দেই। সে এসে তোমাকে নিয়ে যাক। আমি দুই ছেলের সাথে বাসাতেই থাকি। ঠিক আছে&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;না&excl;” ফায়জা আপত্তি করল। &OpenCurlyDoubleQuote; আমি চাই&comma; তুমি যাও। আমি বাসায় থেকে ওদের দেখভাল করব।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কি&quest;” রিমা অবিশ্বাস নিয়ে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;তুমি এই ভোট নিয়ে কত উত্তেজিত হয়ে আছো। তুমিই যাবে। আমি না।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;আমি যাচ্ছি না। তুমি যাচ্ছ।” ফায়জা ঘোষনা দিল। &OpenCurlyDoubleQuote;মা&comma; তোমার ওখানে যেতেই হবে।”<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;কেন&quest;” রিমা অবাক হয়ে জানতে চায়।<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;মিলা আন্টী আসবে ওখানে&comma;” ফায়জা একটু দ্বিধা করে বলে। &OpenCurlyDoubleQuote;ব্যাপারটা গোপন রাখার কথা ছিল আমার। সে-ই বার বার বলেছিল তোমাকে না জানাতে। তাকে দেখতে চাও না&quest;”<br &sol;>&NewLine;রিমা যাবে কি যাবে না ভেবে পায় না। মিলার সাথে দেখা করবার জন্য যে কোন কিছু করতে ও প্রস্তুত। আবার রবিনকে এই অবস্থায় রেখে যেতেও মন সায় দেয় না।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version