Home কলাম অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদ : স্মৃতি নস্টালজিয়া এবং তাঁর সাহিত্য-কর্মের পুনর্পাঠ (কিস্তি...

অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদ : স্মৃতি নস্টালজিয়া এবং তাঁর সাহিত্য-কর্মের পুনর্পাঠ (কিস্তি : ০৭)

অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদ : স্মৃতি নস্টালজিয়া এবং তাঁর সাহিত্য-কর্মের পুনর্পাঠ
অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদ : স্মৃতি নস্টালজিয়া এবং তাঁর সাহিত্য-কর্মের পুনর্পাঠ

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;&NewLine;<p><strong>সাইফুল আলম চৌধুরী<&sol;strong><&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>দুই&period; তাঁর সাহিত্য-কর্মের পুনর্পাঠ<br>&NewLine;দশ&period; তফাজ্জল হোসেন &&num;8211&semi; উত্তরবঙ্গের নাট্যাঙ্গনের কিংবদন্তী মানুষ&comma; বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলে। শক্তিমান এই নাট্য-ব্যক্তিত্বের নিকট হতে আমার শিক্ষক-অভিভাবক মমতাজ উদদীন আহমদ অভিনয় শিখেছিলেন। অভিনয় শিল্পী শর্মিলী আহমদ তার বড় মেয়ে। নাট্য পরিচালক ও অভিনয় শিল্পী তফাজ্জল হোসেন মমতাজ স্যারকে অভিনয়ের তালিম দেবার কালে প্রতিটি পদক্ষেপ&comma; দৃষ্টি এবং বডি ল্যাংগুয়েজ বারংবার বুঝিয়ে দিতেন। সতর্ক করতেন&comma; গুরুকে অন্ধ অনুকরণ না করে নিজের চরিত্র বুঝে নিয়ে নির্মাণ করতে হবে।<br>&NewLine;মমতাজ স্যারের নিকট হতে এই বরেণ্য নাট্য পরিচালক ও নাট্যশিল্পী সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পারি &colon; &OpenCurlyDoubleQuote;… আমার অভিনয়ের যে অতি সামান্য উজ্জ্বল দিক আছে&comma; তার সবটাই তফাজ্জল মাস্টার রচনা করে দিয়েছেন। … তফাজ্জল মাস্টার মঞ্চ নাটকের পরিচালনায় সবচেয়ে জোর দিতেন অভিনয়ে। অভিনয়ে কোনো খামতি তিনি সহ্য করতেই পারতেন না। প্রধান চরিত্র&comma; মাঝারি চরিত্র অথবা সামান্য কিছুক্ষণের এক দৃশ্যের চরিত্র কেউ তার সজাগ দৃষ্টি ও স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। রাজার চরিত্রে তিনি রাজর্ষি&comma; প্রজাতে তিনি অনুগত আর ভাঁড়ে তিনি রসের ভান্ড। বিচিত্র ধরনের চরিত্র&comma; বিচিত্র নকশার মানুষ তিনি সৃষ্টি করে নিতেন।<br>&NewLine;… তফাজ্জল মাস্টারের কাছে শিশু সুলভ সততা পেয়েছি আমি। নাটকের কথা বলে তার কাছে যা পাওয়া সম্ভব&comma; হলে তিনি তা দিয়ে দিতেন। এমন নাটক অন্ত লোক এখন আর কয়টা আছে বাংলাদেশে। সর্বতোভাবে সর্বক্ষণ নাট্যকর্ম ছিল তার।<br>&NewLine;ছেলেমেয়েদের মনে আর কোনো বড় স্বপ্নের বীজ বুনেছিলেন কিনা জানি না&comma; কিন্তু সকলের মধ্যেই অভিনয় পিপাসাকে তীব্র করে রেখেছিলেন।<br>&NewLine;… আমার রঙ্গ পঞ্চদশ নাটকের বইটি তফাজ্জল মাস্টারের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছি। … বই পেয়ে তার সে কি আনন্দ আর উল্লাস ও আবেগ। … সবাইকে ডেকে বলেন&comma; দেখ হে দেখ&comma; জীবনটা আমার বৃথা যায়নি। আমাকে স্বীকার করে নেবার&comma; আর শ্রদ্ধায় মাথা তুলে রাখার লোক আছে। বুঝলে হে&comma; মমতাজ আমার কাছে অভিনয় শিখেছে। আমি তাকে হাতে ধরে শিখিয়েছি। শিখেছে&comma; আর আজ আমাকে শেখাবার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ খুব গর্বের কথা হে। আমি অহংকার করছি। হ্যাঁ&comma; গুরু তার শিষ্যের জন্য অহংকার করছে।<br>&NewLine;… তিনি আমাকে দেখেই আবেগে আপ্লুত হতেন&comma; নিজেকে সম্পূর্ণ বিলিয়ে দিয়ে&comma; হৃদয় উজাড় করে আশীর্বাদ করতেন। অনেক রকম কথা বলতেন। কোথায় যাবেন&comma; কার কাছে গেলে সহানুভ‚তি পাবেন&comma; তাই নিয়ে পরামর্শ করতেন আমার সঙ্গে।<br>&NewLine;… মাস্টার সাহেব চলে গেছেন। আর ফিরবেন না। আমার নাটক&comma; আমার বিয়ে&comma; আমার বউয়ের শাড়ি অনেক কিছুর সঙ্গে তিনি মিশে আছেন। তার অনির্বচনীয় স্মৃতি নিয়ে আমিও ধন্য হয়ে আছি।<br>&NewLine;পাদটীকা &colon; তফাজ্জল হোসেন &&num;8211&semi; নাট্য নির্দেশক&comma; পরিচালক&comma; মঞ্চ-বেতার নাট্যশিল্পী। জন্ম &colon; ১৯১৩&comma; মৃত্যু &colon; ১৯৯১।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>এগারো&period; নুরুল মোমেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন মধ্য-পঞ্চাশের দশকে। সেই সময় তিনি ঢাকা হলের হাউস টিউটর&comma; পরবর্তী সময়ে হয়েছিলেন প্রক্টর। তবে তার খ্যাতি ছিলো নাট্য-নির্মাতা&comma; নাট্য পরিচালক&comma; নাট্য-নির্দেশক&comma; রম্য রচনাকার এবং কলামিস্ট হিসেবে।<br>&NewLine;নুরুল মোমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা আবাসিক হল এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের বার্ষিক নাটকসমূহ নির্দেশনা ও পরিচালনা করতেন। এমনকি প্রয়োজনে তিনি মঞ্চ নাটক রচনা করতেন।<br>&NewLine;ছাপ্পান্ন সালে মমতাজ স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী হলে নুরুল মোমেনের নজরে আসেন&comma; বিশেষ করে ঢাকা আবাসিক হলের বাসিন্দা হবার পর। তিনি আমার শিক্ষককে &OpenCurlyQuote;বিংশ শতাব্দী’ নাটকে একটা টাইপ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা হলের নাটকসমূহ মঞ্চায়িত হতো কার্জন হলের নিচতলায়। সেই স্থানটি ছিলো বক্তৃতার জন্যে নির্ধারিত প্ল্যাটফর্ম। তাতে উইংস আর স্কাই লাগিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ নির্মিত হতো। সীমানা বন্ধ করার জন্য কাপড় ঢেকে মঞ্চের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহের ব্যবধান সৃষ্টি করা হতো। মঞ্চের নিচে পর্দার আড়ালে মেকআপ ঘরের ব্যবস্থা হতো।<br>&NewLine;মমতাজ স্যার নুরুল মোমেনের নির্দেশনায় &OpenCurlyQuote;গণশার বিয়ে’ নাটকে নায়কের ভ‚মিকায় তোতলা গণশার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নাটকটির প্রসঙ্গে মমতাজ স্যার স্মৃতিচারণ করেন &colon; &OpenCurlyDoubleQuote;… সারা জীবনে ঐ একবার নায়ক হয়েছিলাম। নায়িকা হয়েছিল বাংলা বিভাগের এক মেয়ে। … নাট্যকার শেষ দৃশ্যের আগে গণশাকে ন্যাড়া মাথা করে রেখেছেন। কিন্তু আমি গণশার জন্য ন্যাড়া হতে কিছুতেই রাজি না হওয়ার জন্য আমার মাথা জুড়ে স্কচ টেপ লাগাবার ব্যবস্থা করে রাখলেন। … পরিচালকের কণ্ঠের তীব্রতা শুনতে পেলাম। তিনি নায়িকাকে ধমকাচ্ছেন। নায়িকা বাসর শয্যায় কিছুতেই আসতে রাজি হচ্ছে না। … শত জনমের অনুরোধ&comma; দর্শকের কোলাহল এবং পরিচালকের ধমক ইত্যাদির ফল ফলল। নায়িকা দৃশ্যে এল। পর্দা উঠল। আমি শয্যায়। কিন্তু সে দূরে দাঁড়িয়ে। … পরিচালক আড়াল থেকে ধমক দিচ্ছেন&comma; সংলাপ দাও&comma; কাছে যাও। এই মেয়ে&comma; যাও&comma; কাছে যাও। নায়িকা তবু কাছে আসে না&comma; দূরে দাঁড়িয়ে সংলাপও দেয় না। … পরিচালক আমার বিছানার পাশে উইংসের কাছে ছুটে এসে জোরে জোরে নির্দেশ দিতে লাগলেন&comma; গণশা তুমি উঠে পুটুরানীর কাছে যাও&comma; ওঠ। তোমার মাথা থেকে পরচুলা টেনে নিজেই ফেলে দাও। যাও তার কাছে। তাকে ভালোবাসা জানাও।<br>&NewLine;নির্দেশ অনুসারে গেলাম নায়িকার কাছে। কিন্তু সে আমাকে দেখে কোন চিৎকার বা আর্তনাদ কিছুই না করে দ্রæà¦¤ মঞ্চ ছেড়ে ভিতরে চলে গেল। আমি হতভম্ব।<br>&NewLine;… বানিয়ে বানিয়ে সংলাপ বলতে লাগলাম&comma; পুটুরানী তোমার দু’টি হাত ধরি&comma; আমাকে ছেড়ে যেও না। আমিও তোমার স্বামী। আমি ছাড়া কেউ তোমার স্বামী হওয়ার যোগ্য নয়। ফিরে এস পুটুরানী&comma; এস।<br>&NewLine;আমার ব্যাকুল কান্না দর্শকের মনে সহানুভ‚তি সৃষ্টি করল। তারা বারবার তীব্র শব্দে সিটি বাজিয়ে আমাকে অভিনন্দন জানাল। সেকালের সদা প্রফুল্ল এবং অল্পে সন্তুষ্ট দর্শকের করতালির মধ্যে পর্দা নেমে এল।<br>&NewLine;উনিশ শ’ সাতান্ন সাল। উপমহাদেশের সিপাহী বিদ্রোহের একশত বছর পূর্তি উপলক্ষে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে &OpenCurlyQuote;বাহাদুর শাহ’ নাটকে জাফর চরিত্রে মমতাজ স্যার অভিনয় করেছিলেন। সংলাপ ব্যতিরেকে সেই নাটকের স্মৃতিচারণে তিনি আমাদের জানান &colon; &OpenCurlyDoubleQuote;… বাহাদুর শাহ চরিত্রের মুখে কোন সংলাপ থাকছে না। ইতিহাসের সেই দুর্মর সময়ে ভারত সম্রাট হতভাগ্য বাহাদুর শাহ থাকবেন নীরব। তার কোনো কথা নেই। একটিও শব্দ না। তিনি নির্বাক&comma; যেন প্রস্তরীভ‚ত এক নিস্তব্ধতা। … আমাকে বাহাদুর শাহ সাজানো হলো। মুখে পাকা দাড়ি&comma; মাথায় পাগড়ি&comma; সাদা ধবধবে পোশাক পরে আমি বাহাদুর শাহ জাফর হয়ে গেলাম। আমি সংলাপ খুঁজে বেড়াচ্ছি। তাই শুনে স্যার বললেন&comma; তখন বাহাদুর শাহের মুখে কোনো সংলাপ ছিল না&comma; আজও থাকবে না। তুমি নীরবে বসে থাকবে&comma; নীরবে বন্দী হবে&comma; নীরবে নির্বাসনে চলে যাবে। … আমি কাতর কণ্ঠে বললাম&comma; একটা আহা উহু কিছুই বলতে পারব না স্যার। তিনি হুংকার দিয়ে বললেন&comma; না&comma; খবরদার না। … আমার থুতনি কাঁপছে। আমি সম্রাট&comma; আমি ভিখারী&comma; আমি হতভাগ্য বাদশাহ। আমি এখন চলে যাচ্ছি নির্বাসনে।<br>&NewLine;নাটকের সেটা ছিল শেষ দৃশ্য। আমার বাহাদুর শাহ দেখে স্যার এবং তার সহকর্মী অধ্যাপকরা অভিভ‚ত হয়েছিলেন। ইতিহাসের প্রধান অধ্যাপক প্রফেসর হালিম বললেন&comma; হ্যাঁ&comma; এই হল রিয়াল বাহাদুর শাহ।”<br>&NewLine;মমতাজ স্যার তার শিক্ষক ও প্রিয় নাট্যকার নুরুল মোমেনের &OpenCurlyQuote;মহানুভবতা’ সম্পর্কে আমাদের অবগত করেন &colon; &OpenCurlyDoubleQuote;ফজলুল হক হলের পুকুর পাড়ে বসে আছি একা। আমার প্রিয় নাট্যকার এবং শিক্ষক নুরুল মোমেন অফিস ঘর থেকে বের হয়ে এলেন আমার কাছে। গেলাম তার ডাকে। তিনি আমার বুক পকেটে চৌষট্টি টাকা গুঁজে দিলেন। আমি তো বিব্রত।<br>&NewLine;তিনি হেসে হেসে বললেন&comma; হলের স্টাইপেন্ড ফান্ড থেকে তোমার নামে মঞ্জুর করা হয়েছে। আমি বললাম&comma; আমি তো আবেদন করিনি স্যার। তিনি বললেন&comma; নুরুল মোমেনের স্নেহের শিল্পীকে আবেদন করতে হয় না। যাও বইপত্র কিনে নাও। তোমার মনের মতো বই।<br>&NewLine;তার সেদিনের উপহারের টাকা দিয়ে কেনা বইগুলো এখনও আছে আমার কাছে। থাকবে চিরদিন। নুরুল মোমেন স্যারও থাকবেন। নাট্য কর্মে সর্বদা ব্যাকুল এবং নাট্য সংলাপ সেরা কারিগর নুরুল মোমেনকে আমার পক্ষে ভোলা সহজ হবে না। তাকে আমি ভুলব কোন দুঃখে।”<br>&NewLine;পাদটীকা &colon; অধ্যাপক নুরুল মোমেন- বাংলাদেশের খ্যাতনামা নাট্যকার&comma; নাট্য নির্দেশক ও নাট্য পরিচালক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপনার পাশাপাশি ছিলেন সংবাদপত্রে কলামিস্ট ও রম্য রচনা নির্মাতা।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>বারো&period; মোহাম্মদ নোমান- ঢাকা সরকারি কলেজের এক সময়ের সর্বজন প্রিয় অধ্যক্ষ ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন মমতাজ উদদীন আহমদের প্রত্যক্ষ শিক্ষক। তার নিকট হতে মমতাজ স্যার ইংরেজি ভাষার গদ্য সাহিত্য এবং সেক্সপীয়র নির্মিত ট্র্যাজেডি অধ্যায়ন করেছেন বলে জানা যায়। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের সমারসেট মম&comma; স্টীল আর এডিসনের কীর্তিসমূহ অধ্যাপক মোহাম্মদ নোমানের কাছ থেকেই অধ্যায়ন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।<br>&NewLine;অধ্যাপক নোমান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে। শিক্ষা জীবন সমাপ্ত হলে তিনি একই বিদ্যাপীঠে প্রভাষক হিসেবে পেশাজীবন আরম্ভ করেন। ১৯৫১ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ&comma; ১৯৫২ সালে রাজশাহী কলেজে শিক্ষকতা করার পর ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৫ সাল অবধি এই বিদ্যায়তনে অধ্যাপনা করেন। তবে মাঝে ১৯৬০-৬২ সালে সিলেটের মুরারি চান্দ কলেজে বদলি হয়েছিলেন। ঢাকা কলেজের দীর্ঘ সময়ের চাকুরি জীবনে তিনি পাঁচ বছর ছিলেন অধ্যক্ষ পদে।<br>&NewLine;শিক্ষাবিদ হিসেবে অধ্যাপক নোমান সমগ্র পাকিস্তানের &OpenCurlyQuote;শ্রেষ্ঠ ও আদর্শ শিক্ষক’ হয়ে ১৯৭০ সালে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক এবং ১৯৯৪ সালে শিক্ষায় তার বিশেষ অবদানের জন্যে একুশে পদক লাভ করেন। অধ্যাপক মোহাম্মদ নোমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং পরবর্তীতে ভাইস-চ্যান্সেলর হন।<br>&NewLine;এমনই এক শুদ্ধতম বাঙালি শিক্ষকের প্রিয় ছাত্র হতে পেরেছিলেন মমতাজ স্যার। তার বয়ানে শিক্ষক সম্পর্কে আরো জানি &colon; &OpenCurlyDoubleQuote;… নোমান স্যার মানেই শান্ত&comma; নিবেদিত ও ভদ্র একজন মানুষ। কোথাও কোনো গøà¦¾à¦¨à¦¿&comma; কোনো কালিমা কখনো তাকে ছুঁতে পারেনি। এমন ধপধপে স্বচ্ছ আর পবিত্র মানুষ আমি কম দেখেছি। তার মতো নিরহংকার স্থির কিন্তু অনমনীয় মানুষও দেখেছি কম।<br>&NewLine;নোমান স্যার কালো মানুষ। বেশ ভালো কালো। কিন্তু সে কালো কোনো দিন আমাদের বিরূপ করেনি। কখনোই মনে হয়নি&comma; আমাদের নোমান স্যার নির্মল ও শুভ্র মানুষ নন। বড় সহজ স্পষ্ট ও আলোকিত মানুষ তিনি। … যারা সাহিত্য সংস্কৃতি আর নাটক নিয়ে মেতে থাকতাম&comma; তাদের জন্য আলাদা করে স্নেহ সঞ্চয় করে রেখে দিতেন। … আমি তার কাছে একজন প্রথম শ্রেণীর অভিনয় শিল্পী&comma; এরকম কথা বার বার বলেই তিনি শুধু ক্ষান্ত হতেন না&comma; দেখা হলেই বলতেন&comma; এস মমতাজ- তোমাকে নিয়ে আমার অহংকারের শেষ নেই। তোমার অভিনয় যত দেখি ততই মুগ্ধ হই।<br>&NewLine;… আমার এখনো মনে হয়&comma; নোমান স্যার তার যোগ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তার মেধা&comma; যোগ্যতা এবং সিদ্ধান্ত&comma; তাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারতো। এ হতভাগ্য দেশে এখনো মেধা ও যোগ্যতাকে প্রধান করা হয়নি। এখানে চিৎকার&comma; ছলনা আর ধুর্তামির স্বীকৃতি অনেক বেশি। যিনি সামান্য কারনিক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না তিনিই হয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী। যিনি একটিও ইংরেজি বাক্য শুদ্ধ করে লেখার যোগ্য নন তিনিই হয়ে যান বিশিষ্ট অধ্যাপক। নোমান স্যার তো এদের মতো সামান্য ছিলেন না।<br>&NewLine;… শুনেছি&comma; আমাদের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি গানটি অনুবাদ করেছেন নোমান স্যার। যদিও তার নাম অনুবাদক হিসাবে ঘোষিত হয় না। বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষাতেই তার সমান দক্ষতা ও মেধা। আর সেই মেধার যথার্থ স্বীকৃতি ও প্রকাশ ঘটল না বলেই আমাদের যত অনুতাপ।<br>&NewLine;… আমার প্রিয় শিক্ষক চলে গেছেন। তার নীরব দেহটি দেখতে যাবার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু যাইনি। যেতে পারিনি। গিয়ে দেখব&comma; রোগাক্লান্ত মানুষের দেহ নীরবে ঘুমিয়ে আছে। ভালো লাগবে না&comma; কষ্ট হবে আমার। … এক সজীব&comma; স্বচ্ছ আর স্নেহময় মানুষকে এত কাল দেখে এলাম। তাকে তেমনভাবে দেখব যতকাল বেঁচে থাকব। তাতেই আমার আনন্দ ও কান্না মূর্ত হয়ে থাকবে। তাকে সেভাবেই দেখব আমি।” <br>&NewLine;পাদটীকা &colon; অধ্যাপক মোহাম্মদ নোমান- জন্ম &colon; ১৯২৮&comma; মৃত্যু &colon; ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬। &lpar;অসমাপ্ত&sol;চলবে&rpar;<br>&NewLine;লেখক &colon; মুক্তিযোদ্ধা&comma; গবেষক ও কলামিস্ট। sakil19&commat;hotmail&period;com<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version