অনলাইন ডেস্ক : করোনা মহামারির ৬ষ্ঠ তরঙ্গ শুরুর পর অন্টারিও সরকারকে কিছু বিধি-নিষেধ পুনঃস্থাপনের অনুরোধ জানানোর কয়েক সপ্তাহ পর ৩ জন শীর্ষ আঞ্চলিক চিকিৎসক প্রদেশে ইনডোরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তারা প্রধান প্রাদেশিক মেডিকেল অফিসার ডা. কাইরান মুরকে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিকিৎসক ৩ জন হলেন, উইন্ডসর-এসেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা হিরজি ও পিটারবোরো পাবলিক হেলথের ডা. টমাস পিগটা।

এই ৩ জনই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনার ৬ষ্ঠ তরঙ্গের গতিবিধর প্রতি নজর রাখছেন এবং বাধ্যতামূলক মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন বিধ-নিষেধ পুনঃস্থাপনের উপর জোর দিচ্ছেন। ডা. কাইরান মুরকে লেখা চিঠিতে ৩ জনই স্বাক্ষর করেছেন। এতে বলা হয়েছে, মহামারি মোকাবেলায় আপনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে আমরা আপনাকে আগেও লিখেছিলাম। আজ আবার লিখছি। এবার আমরা ইনডোর মাস্ক পুনঃস্থাপনের পদক্ষেপ নেয়ারও অনুরোধ করছি। আমাদের মনে হয় ৬ষ্ঠ তরঙ্গের উচ্চ ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এটির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিশেষত অন্টারিওতে ইনডোর পাবলিক প্লেস যেমন, অফিস, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, বিপনীবিতান এবং ফার্মেসিগুলোতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করছি। চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আসন্ন প্রাদেশিক নির্বাচনের জন্য সরকার এখন ‘তত্ত¡াবধায়ক মোডে’ রয়েছে। তাই মিডিয়ার সাথে বিস্তারিত কথা বলা যাবে না। তবে ডা. নেসাথুরাই গত বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বুধবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। তিনি আশাবাদী যে, মহামারির বিস্তার রোধে সরকার তাদের পরামর্শ আমলে নিবে।

প্রসঙ্গত, অন্টারিওতে গত ২১ মার্চ থেকে স্কুল, রেস্তেরা, জিমনেসিয়াম ও সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে মাস্ক পরার বাধ্যবাদকতা বাতিল করেছে। তবে এপ্রিলে আবার করোনার প্রকোপ দেখা দিলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধগুলো পুনঃস্থাপন করা হযেছে।

নেসাথুরাই বলেন, তার চিকিৎসাজীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হয়ে থাকবে এই মহামারির সময়টা। তিনি ও তার সহকর্মীরা মহামারির বিস্তার রোধে ক্রমাগত কাজ করে চলেছেন। তারা প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তিনি আরো বলেন, কোভিডের বোঝা এখনও আমাদের সমাজে মারাত্মক হুমকি হয়ে রয়ে গেছে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের এটি মোকাবেলা করেই বাঁচতে হবে। তাই এর মোকাবেলায় আমাদেরকে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থাই নিতে হবে।

গত বুধবার অন্টারিওতে ১ হাজার ৬৯৮ জন করোনা রোগি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রদেশের করোনা উপদেষ্টা পরিষদের পরিচালক ডা. পিটার জুনি বলেছেন, প্রদেশটি সম্ভবত ৬ষ্ঠ তরঙ্গের শীর্ষে পৌঁছে গেছে। হাসপাতালে ভর্তির হার ও নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমছে। মনে হচ্ছে আমরা সঠিক পথেই আছি। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারব বলে আশা করছি।

তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকার বিধি-নিষেধ বাধ্যতামূলক না করলেও নিজেদের তাগিদেই এগুলো মেনে চলা উচিত এবং যতটা সম্ভব যোগাযোগ সীমিত করা উচিত। সূত্র : সিবিসি