Home কানাডা খবর আদিবাসীদের জন্য কানাডার ২.৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ

আদিবাসীদের জন্য কানাডার ২.৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ

অনলাইন ডেস্ক : আদিবাসীদের শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং ভাষা সুরক্ষা ও প্রসারে প্রায় তিন বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার দেবে দেশটির সরকার ৷

গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন স্কুলে প্রায় এক শতক ধরে আদিবাসী শিশুদের ওপর চলা নির্যাতনের ক্ষতিপূরণস্বরূপ এই অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আদিবাসীদের প্রতিনিধিও৷

দেশটির সরকার জানায়, এই অর্থ একটি অলাভজনক ট্রাস্টে দেওয়া হবে এবং অদিবাসীদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভাষার প্রসারে এটি খরচ করা হবে৷

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে আদিবাসী পরিবার থেকে শিশুদের জোর করে সরিয়ে তাদের গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন স্কুলে ভর্তি করাত কানাডার সরকার৷ এসব স্কুলে আদিবাসী পরিচয়ের বদলে তাদের ইউরোপীয়-খ্রিস্টান পরিচয়ে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হতো৷ কানাডায় এমন স্কুল ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল৷ ৩২৫টি আদিবাসী গোষ্ঠীর যৌথ মামলার ফলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েচে কানাডা সরকার। এর লক্ষ্য হলো ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ক্ষতিসহ গির্জার আবাসিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থার কারণে যে সামষ্টিক ক্ষতি হয়েছে, তার স্বীকৃতি আদায় এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।

আদিবাসী ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত ও রক্ষা করা, আদিবাসী সম্প্রদায় এবং তাদের সদস্যদের সুস্থতা নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন মামলার বাদীরা৷

মামলার বাদীদের একজন আদিবাসী নেতা গ্যারি ফেসচুক বলেন, নিজের ইতিহাস স্বীকার করতে, নিজের করা গণহত্যার দায় স্বীকার করতে এবং আবাসিক স্কুলগুলোর মাধ্যমে আমাদের জাতির সম্মিলিত ক্ষতি স্বীকার করতে অনেক বেশি সময় নিয়েছে কানাডা৷

তিনি বলেন, কানাডার কেবল ক্ষতি স্বীকার না করে, আমাদের সঙ্গে হাঁটা উচিত, পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে সহায়তা করা উচিত। এই বন্দোবস্ত একটি ভালো প্রথম পদক্ষেপ৷

মামলার আরেক বাদী চিফ রোজান ক্যাসিমির বলেন, ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতির ‘গভীর ক্ষতি’ পুনরুদ্ধার করতে ‘অবিশ্বাস্য প্রচেষ্টা’ প্রয়োজন হবে।

ঊনিশ শতকের শেষ থেকে শুরু করে ১৯৯০ এর দশক পর্যন্ত অন্তত দেড় লাখ ফার্স্ট নেশন, মেটিস এবং ইনুইট সম্প্রদায়ের শিশুদের ১৩৯টি আবাসিক স্কুলে পাঠিয়েছে কানাডার সরকার৷

এসব শিশুর অনেকেই শিক্ষকদের হাতে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷ হাজার হাজার শিশু অপুষ্টি, অবহেলা এবং রোগের কারণে মারা গেছে বলেও ধারণা করা হয়৷

বন্ধ হয়ে যাওয়া গির্জার স্কুলগুলোর আশপাশ থেকে ২০২১ সালের পর থেকে একের পর এক অচিহ্নিত গণকবর খুঁজে পাওয়া যেতে শুরু করে৷ এসব কবর থেকে শত শত আদিবাসী শিশুর মরদেহের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার হয়৷ একে ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা’ দাবি করে নিন্দায় মুখর হয়ে ওঠে কানাডার ন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন৷

গত বছর কানাডা সফরের সময় পোপ ফ্রান্সিস ক্যাথলিক গির্জার অধীনে আদিবাসী আবাসিক স্কুলগুলোতে ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন।

Exit mobile version