Home কলাম আবারও কানাডার স্কুলে মিললো ৯৩ শিশুর কবর

আবারও কানাডার স্কুলে মিললো ৯৩ শিশুর কবর

সোনা কান্তি বড়ুয়া: কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সেন্ট জোসেফ মিশন রেসিডেনশিয়াল স্কুলের প্রাঙ্গণে ৯৩টি কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে অনুসন্ধানকারীরা। এ প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ইত্তেফাক (ইত্তেফাক, ২৬ জানুয়ারি ২০২২) এবং কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা! ইতিহাসের আলোকে উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষ সেদেশের আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান শিশুদের বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও কানাডায় এ ধরণের শত শত কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মূল আদিবাসীদের দমন করে কানাডায় বসতি স্থাপনকারীরা আদিবাসী নির্মমভাবে হত্যার পর সেখানে তাদেরকে গণকবর দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

কলম্বাসের আমেরিকা (North American Continent) জয়ের পর, ইতিহাসের আলোকে ধর্মান্ধ খৃষ্ঠান মৌলবাদী শাসক ও সন্ত্রাসীগণ উত্তর আমেরিকার আদিবাসীগণকে (রেড ইন্ডিয়ান বা কানাডার ফার্ষ্ট নেশানস) দিনের দিনের পর দিন দুঃখের দহনে, করুন রোদনে তিলে তিলে ক্ষয় করেছে। সমস্ত ধর্মের মধ্যে যে অন্তর্নিহিত নীতিবোধ আছে সেই নীতিবোধকে জাগ্রত করাই ছিল মানবাধিকারের অস্তিত্ব এবং সমস্ত ধর্মের উদ্দেশ্য!

আইনের শাসনে কানাডার আবাসিক স্কুলগুলিতে আদিবাসী (আদি আমেরিকানদের) ২১৫ জন শিশুর বীভত্স দেহাবশেষ (27 May 2021) হত্যায় মানবধর্ম কেঁপে উঠেছে! ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল নামের ওই স্কুলটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই ঘটনাটিকে গভীর হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেছেন। জানা গেছে, দেহাবশেষগুলি রাডার বিশেষজ্ঞের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়েছে।

“হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বি নিত্য নিঠুর দ্ব›দ্ব! কানাডার কামলুপস এলাকাটিতে আদি আমেরিকানদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর বাসিন্দাদের বাস। আরও জানা যাচ্ছে, মৃত শিশুদের মধ্যে অনেকেরই বয়স ৩ বছরের কম। যে শিশুদের দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে তারা সবাই সেখানকার টিকেমলুপস টে সেকওয়েপেমেক গোষ্ঠীভুক্ত ছিল বলে জানা গেছে। ওই গোষ্ঠীর বর্তমান প্রধান রোসান্নে ক্যাসিমির। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স¤প্রদায় এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানত। আমরা কেবল তা যাচাই করতে সক্ষম হয়েছি। মৃতদের মধ্যে ৩ বছর বয়সি শিশুদেরও মৃতদেহ পাওয়া গেছে। আর এই ঘটনাটির কোথাও রেকর্ড নেই।’’
কানাডার শ্বেতকায় সন্ত্রাসীদের অমানবিক আচরণে সন্মানিত কানাডার মূল আদিবাসী কমিউনিটি অপমানিত হয়ে বলেছেন, “সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় ইহাকে বলা হয় ‘পলিটিক্স অব হেটরেড বা ঘৃণার রাজনীতি।”

অভিযোগ, প্রায় দেড় লক্ষাধিক শিশুকে জোর করে ভর্তি করা হয়েছিল আবাসিক স্কুলগুলিতে। শিশুদের ব্যাপকভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হত বলেও ২০১৫ সালের একটি তদন্তে উঠে আসে। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, ১৮৪০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অটোয়ার পক্ষে খ্রিস্টান গির্জা দ্বারা পরিচালিত স্কুলগুলিতে শিশুদের উপর ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপুষ্টি ও অন্যান্য অত্যাচারের রেকর্ড রয়েছে। আবাসিক স্কুলে পড়ার সময় কমপক্ষে ৪ হাজার ১০০ জন শিশু মারা গিয়েছিল। কামলুপস-র যে স্কুলটি থেকে এই দেহাবশেষগুলি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি ছিল ১৩৯টি আবাসিক স্কুলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তবে সেই স্কুলে এত সংখ্যক শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি কোথাও নথিভুক্ত করা হয়নি।

মানবাধিকারের অস্তিত্বের আলোকে ধর্মান্ধ শেতাঙ্গদের নরহত্যার উল্লাস মানবজাতির ধর্ম নয়! এসব শিশুকে কানাডার আবাসিক স্কুলগুলোতে বোর্ডিং আবশ্যিক ছিল। ১৯ ও ২০ শতকে এসব স্কুল পরিচালনা করত সরকার ও শেতাঙ্গ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ। এসব স্কুলে জোর করে আদিবাসী কিশোর-তরুণদের রাখা হতো। ১৯৬৯ সালে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার স্কুলটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৯৭৮ সালে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক স্কুল হিসেবে এটি পরিচালিত হয়েছে।

মহাশান্তি মহাপ্রেম! কানাডার প্রথম আদিবাসী গভর্নর জেনারেল হিসেবে শপথ নিয়েছেন (6 July 2021) ইনুয়েট স¤প্রদায়ের প্রতিনিধি মেরি সায়মন। সোমবার বিস্তৃত আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তিনি শপথ গ্রহণ করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। এবং কানাডার মূল আদিবাসীদের WISHES “জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ / ধন্য হল ধন্য হল মানবজীবন।” দেশটির এই পদে তিনিই প্রথম আদিবাসী।

ধিক্কার শেতাঙ্গ ধর্মান্ধদেরকে! কানাডার আবাসিক স্কুলগুলিতে আদিবাসী (আদি আমেরিকানদের) ২১৫টি জন শিশুর বীভত্স দেহাবশেষ (২৭ গধু ২০২১) হত্যায় মানবধর্ম কেঁপে উঠেছে! বীভত্স হত্যাযজ্ঞ প্রথায় মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়াটাই ধর্মান্ধদের ধর্ম! এ জীবন কি যাপন করা যায়? বলো, কতদিন এভাবে চলবে? সুখ নেই, স্বস্তি নেই, গৃহ নেই, কেবলই প্রাণ নিয়ে পলায়ন করতে হচ্ছে- এর শেষ কোথায়? অন্য ধর্মের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষটাই করেছে ধর্মান্ধদের মানুষজাতি হত্যাযজ্ঞ! এই কি মানুষের জীবন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা, ছোট ছোট দুঃখ কথা / নিতান্তই সহজ সরল! সহস্র বিস্মৃতি রাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি / তারি দু’চারিটি অশ্রুজল / নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা / নাহি তত্ত¡ নাহি উপদেশ!”

ধর্মান্ধদের নর-নারী হত্যালীলার উল্লাস মানবজাতির ধর্ম নয়! হিংসা মানুষজাতির সর্বনাশের পথ। সেবা, ভালোবাসা বা বিশ্বমৈত্রী দিয়ে মানুষের মনের অন্ধকার ধ্বংস করে প্রতিটি মানব মনে মানবতার আলোই আলোকিত বিশ্ব গড়ে তুলবে। সুখী হও সুখী হও / এ মৈত্রী ভাবনা। / দিবা নিশি হিত সুখ করিনু প্রার্থনা। কানাডায় ধর্ম বিশ্বাসের কারণে পরমতসহিষ্ণু মানবধর্মকে ধ্বংস করার নাম ধর্মান্ধ উগ্রবাদের ধর্ম! বিশ্বকবির ভাষায়: “অহমিকা বন্দীশালা হতে। ভগবান তুমি! নির্দ্দয় এ লোকালয়, এ ক্ষেত্র তব জন্মভূমি। ভরসা হারালো যারা, যাহাদের ভেঙেছে বিশ্বাস! তোমারি করুনা বিত্তে ভরুক তাদের সর্বনাশ!”

কানাডার মূল আদিবাসীদের রাজাগণ শত শত বছর রাজত্ব করেছিলেন এবং অষ্টাদশ শতকের শেষ থেকে উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে কানাডায় দলে দলে ইউরোপীয়রা আসতে থাকে। তখন স্থানীয় গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে তাঁদের সঙ্ঘাত হয়েছিল। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, আদি আমেরিকানদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত ও ‘সভ্য’ করে তুলতে উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে কানাডা জুড়ে বিভিন্ন আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা শুরু হয়। এক সময় কানাডায় ১৩৯টি এ রকম আবাসিক স্কুল ছিল। ক্যাথলিক খ্রিস্টান মিশনারিরা এই স্কুলগুলি চালাতেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায় :
“হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বি নিত্য নিঠুর দ্ব›দ্ব
ঘোর কুটিল পন্থ তার লোভ জটিল বন্ধ।
নতুন তব জন্ম লাগি কাতর যত প্রাণী
কর ত্রান মহাপ্রাণ আন অমৃত বাণী
বিকশিত করো প্রেম প্রদ্ম চিরমধু নিষ্যন্দ
শান্ত হে মুক্ত হে, হে অনন্ত পুণ্য
করুণাঘন ধরণীতল করহ কলংক শূন্য
এস দানবীর দাও ত্যাগ কঠিন দীক্ষা
মহাভিক্ষু লও সবার অহংকার ভিক্ষা।
দেশ দেশ পরিল তিলক রক্ত কলুষ গ্লানি
তব মঙ্গল শঙ্খ আন, তব দক্ষিণ পাণি”

১৯৫৮ সালে প্রকাশিত ‘কম্পারেটিভ ষ্টাডিজ ইন সোসাইটি অ্যান্ড হিষ্ট্রি’ গ্রন্থ এই ধারার উল্লেখযোগ্য সংযোজন। আমাদের ছেলে-মেয়েরা টরন্টো বিশ্ববিদ্যলিয়ে লেখাপড়া করে। তাই আজকাল একটা বড় রকমের নেপথ্য সংকটের মধ্যে থাকি আমরা। সংবিধান, আইন, পুলিশ, গণতন্ত্র, অধিকার- এসব কথাগুলি এখন দিনে রাতে আমার আপনার মুখে মুখে। সা¤প্রদায়িক ও মৌলবাদী আক্রমনের সংবাদ বার বার আউরে কেমন যেন চর্বিতচর্বণ হয়ে গেছে সব। মনের পশুকে কোরবানী বা জয় করতে না পারলে সত মানুষ হওয়া যায় না। ভগবান যীশুর ধর্ম শান্তির ধর্ম। মনের লোভ দ্বেষ মোহকে জয় করে সত্যিকারের ধার্মিক হওয়া যায়। জঙ্গী, বর্ণবাদী মৌলবাদীরা শান্তিকামী জনতাসহ বিশ্বে সংখ্যালঘুদেরকে দুঃখের দহনে করুণ রোদনে আর কতকাল ধরে তিলে তিলে ধ্বংস করবে? মানবজাতির হৃদয়াসনে মানবতা চির দেদীপ্যমান হয়ে ছিল, আছে এবং থাকবে।

আমাদের আশা, ইতিহাসের এই নতুন পর্বে বর্ণবাদী এবং সন্ত্রাসের নিধনবাদী মানসিকতা বিশ্বসভায় নিন্দিত হবে এবং হিংসাকে অহিংসার বিশ্বপ্রেম দিয়ে জয় করতে হবে। সম্মিলিত মানবজাতির মানবতায় ঈশ্বর বিরাজমান। অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে যে কোন ধর্মের মৌলবাদীরা মানবজাতির মানবতাকে হিংসার অস্ত্র দিয়ে খন্ড বিখন্ড করতে পারবে না। কিন্তু ঘটমান বিভিন্ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে মনে হতে পারে, এই মুহূর্তে তাবত সমাজ বর্ণবাদী হিংসার আগ্নেয়পর্বতের উপরেই সমাসীন।

প্রসঙ্গত: ইউরোপীয়ান সাম্রাজ্যবাদীরা রেড ইন্ডিয়ানদের (আদিবাসী) সাথে পশুর মতো ব্যবহার করেছে। ঢাকার মসলিন তৈরীর তাতীদের হাত কেটে দিল এবং আমাদের অখন্ড উপমহাদেশীয় ভারতকে ধর্মের নামে রাজনীতির দাবাখেলায় তিন টুকরো করে ইউরোপীয়ান রাজনীতির আশা পূর্ণ হল। আজ তারা তো সবাই ধোয়া তুলসী পাতা এবং আমাদেরকে মানবাধিকারের পাঁচালী শোনায়। কথায় কথায় অন্য ধর্মের মানুষকে হিংসা করাতে আপনি পাকা খৃষ্টান বা মুসলমান বনে যাননি। বাইবেল ও কুরআন পড়ে দেখবেন কোথাও মানুষকে হিংসা করার কথা লেখা নেই।

কানাডা এবং আমেরিকায় দিন বদলের যে মডেল বা প্যারাডাইমে বর্ণবিদ্বেষের ভাইরাস মানবাধিকার বিরোধী ঋড়ত্সবত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে আমেরিকা ও কানাডার মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক দেহে প্রবেশ করেছে। জনম বিশ্বের তরে পরার্থে কামনাই বিশ্বমানবতা। বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায় :
“বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি।
দেশে দেশে কত-না নগর রাজধানী-
মানুষের কত কীর্তি, কত নদী গিরি সিন্ধু মরু,
কত-না অজানা জীব, কত-না অপরিচিত তরু
রয়ে গেল অগোচরে। বিশাল বিশ্বের আয়োজন;
মন মোর জুড়ে থাকে অতি ক্ষুদ্র তারি এক কোণ।
সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ ভ্রমণবৃত্তান্ত আছে যাহে
অক্ষয় উত্সাহে-
যেথা পাই চিত্রময়ী বর্ণনার বাণী
কুড়াইয়া আনি।
জ্ঞানের দীনতা এই আপনার মনে
পূরণ করিয়া লই যত পারি ভিক্ষালব্ধ ধনে।”
একদা উপমহাদেশের ভারতীয় রাজনীতির দূর্বল মুহূর্তে গ্রেট বৃটেনের একটা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ”ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী” আমাদের জন্মভুমি (ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) দখল করল এবং দুই শত বছর যাবত আমাদের উপমহাদেশের বিপুল ধন রাশি লুট করেছে। আজ হিউম্যান ডেভল্যাপমেন্টের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ধর্ম প্রচারের কাজ প্রবল ভাবে শুরু হয়েছে। পশ্চিমা রাজনীতি মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের নামে নাগাল্যান্ডসহ পূর্ব ভারতে (আসামসহ ছয়টা রাজ্যে) ইউরোপীয়ানদের ধর্ম প্রচার করছে।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!

Exit mobile version