Home কলাম আমাদের ধর্ম, আমাদের ঈশ্বর

আমাদের ধর্ম, আমাদের ঈশ্বর

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>ভজন সরকার &colon;<&sol;strong> &lpar;à§§&rpar;<br &sol;>&NewLine;প্রচলিত যে কোন ধর্ম কিংবা ধর্মবিশ্বাসীদের নিয়ে লেখা ভয়ঙ্কর রকমের ঝুঁকিপূর্ণই শুধু নয় ভয়াবহ বিপদজ্জনকও। এ ভয়াবহ ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা শুধু ইদানিং কালের বললে ভুল বলা হবে। এটা তো নির্মম ও কঠিন সত্য যে&comma; ধর্ম প্রচার ও ধর্মীয় প্রভাব বিস্তারের জন্য এ পৃথিবী যতোবার রক্তাক্ত হয়েছে&comma; আর কোন কিছুর জন্য এতো রক্ত ঝরেনি। সেদিক থেকে বললে&comma; আজকের এ পৃথিবীতে আমরা যে সকল প্রচলিত ধর্ম ও ধর্মবিশ্বাস প্রত্যক্ষ করি&comma; তাদের সকলেরই পেছনের ইতিহাস ভয়াবহ নির্মমতার ইতিহাস। পরিসংখ্যানে হয়ত ব্যাপকতার হেরফের হতে পারে&comma; কিন্তু প্রচলিত কোনো ধর্মই রক্তপাতহীনভাবে এতো দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আসেনি।<&sol;p>&NewLine;<p>বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্যতম &OpenCurlyQuote;আগন্তুক’ চলচ্চিত্রটি। &OpenCurlyQuote;আগন্তুক’-কের মূল চরিত্র মনোমোহন মিত্রকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;আপনি ধর্ম বিশ্বাস করেন&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>মনোমোহন মিত্রের উত্তর ছিল এ রকম&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;যা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে&comma; আমি তা বিশ্বাস করি না। আর প্রচলিত ধর্ম তা করেই&comma; ফলে আমি ধর্মও বিশ্বাস করি না”।<br &sol;>&NewLine;পরক্ষণেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;আর ঈশ্বর&quest;”। মনোমোহন মিত্র যা বলেছিলেন তার সারমর্ম করলে দাঁড়ায় এ রকম যে&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;এই পৃথিবীতে এতো বিভেদ&comma; এতো বৈষম্য&semi; একদিকে প্রযুক্তির এতো অভাবনীয় উন্নতি&comma; অন্যদিকে অসংখ্য মানুষের এতো কষ্টকর জীবন। এইসব দেখে দেখে পরম করুণাময় ঈশ্বরের প্রতিও বিশ্বাস রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”<&sol;p>&NewLine;<p>যদি মনোমোহন মিত্রের মাধ্যমে আমরা সত্যজিৎ রায়ের ঈশ্বর ভাবনাকে মেলাতে চেষ্টা করি তবে সত্যজিৎ রায় যে ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলেন সেটা বলা যায়। সেই সাথে এটাও বলা যায় যে&comma; তিনি প্রচলিত কোনো ধর্মকেই বিশ্বাস করতেন না। ধর্ম অবিশ্বাসী অথচ ঈশ্বরে বিশ্বাস- কথাটা একটু খটকা লাগে।<&sol;p>&NewLine;<p>অনেকে বলেন&comma; সত্যজিতের এ ভাবনা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে পাওয়া। রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বরে বিশ্বাসের প্রমান তাঁর সাহিত্যের প্রতিটি শাখায়। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ প্রচলিত কোনো ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না। আরও সহজ ক’রে বললে&comma; ধর্মবিশ্বাসের যে প্রচলিত রীতিনীতি&comma; রবীন্দ্রনাথ তার ঘোরবিরোধী ছিলেন।<&sol;p>&NewLine;<p>এ প্রসংগে&comma; ইংরেজ ধর্মযাজক রেভারেন্ড সি&comma; এফ&comma; এন্ড্রæà¦œ তাঁর ডায়েরিতে লিখেছেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyDoubleQuote;গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে একটি আলোচনার বিবরণ জানা যায়। আলোচনার প্রথম বিষয় ছিল মূর্তি&semi; গান্ধী তার সপক্ষে ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন&comma; সাধারণ মানুষ বলামাত্রই নিজেকে বিমূর্ত চিন্তার স্তরে তুলতে পারে না। আর অনন্তকাল বয়ঃপ্রাপ্ত মানুষের সংগে শিশুর মতো আচরণ করাটা রবীন্দ্রনাথ সহ্য করতে পারেন না।”<&sol;p>&NewLine;<p>মহাত্মা গান্ধী যেটা বলেছেন&comma; সেটা সাধারণ মানুষের সহজ ও সরল উপায়ে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের বিমূর্ত চিন্তা &&num;8211&semi; অন্যকথায় বিমূর্ত ঈশ্বরের মূর্ত চিন্তা। আর রবীন্দ্রনাথ যেটা বলেছেন&comma; সেটা ঠিক তার বিপরীত&semi; বিমূর্ত চিন্তার মাধ্যমেই বিমূর্ত ঈশ্বরের চিন্তা। মহাত্মা গান্ধী ও মনীষী রবীন্দ্রনাথের এ বিপরীতমুখী মতই প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের সাথে অলৌকিক ঈশ্বরবিশ্বাসের পার্থক্য। যদিও প্রচলিত সব ধর্মবিশ্বাসের মূলই কিন্তু অলৌকিক ঈশ্বরের সান্নিধ্য কৃপা কিংবা সন্তুষ্টি লাভ।<&sol;p>&NewLine;<p>তাই যদি ঈশ্বরে বিশ্বাসটা না থাকে&comma; তবে সব প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসের বা ধর্মের আচার-রীতিনীতিরও প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী&comma; রবীন্দ্রনাথ কিংবা সত্যজিতের মতো মানুষেরা ঈশ্বরে বিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠতে পারেননি। তাই সাধারণ মানুষ অলৌকিক ঈশ্বরে বিশ্বাসের বিমূর্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসবেন সেটা আশা করা খুব কঠিন।<br &sol;>&NewLine;মানুষ নিজে যেটা সমাধান করতে পারছেন না কিংবা মানুষ নানা ঘাত-প্রতিঘাতে জর্জরিত হয়ে যখন নিতান্ত অসহায়&comma; তখন অলৌকিক কেউ তাঁকে সাহায্য করবে&comma; এটা ভাবতে কার না-ভাল লাগে। ঈশ্বর কিংবা অলৌকিক শক্তির প্রতি মানুষের বিশ্বাসের মূল কথাই হয়ত এটা। আর এটা বলা অত্যুক্তি হবে না যে&comma; মানুষের অসহায়ত্বের প্রতি তথাকথিত সহায়ক ঈশ্বরের এ ধারণাকে পূঁজি ক’রেই প্রচলিত সব ধর্মবিশ্বাস দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মধ্যে। যদিও কালে কালে এক ঈশ্বর থেকে অন্য ঈশ্বরে বিশ্বাসের প্রতি জোরজবরদস্তি হয়েছে কিন্তু মানুষের দৈবিক শক্তির প্রতি বিশ্বাস কিন্তু সহজাত।<&sol;p>&NewLine;<p>&lpar;২&rpar;<br &sol;>&NewLine;মানুষ যদি নিজের নিজের মতো ক’রে শুধু অলৌকিক শক্তিতেই বিশ্বাসী থাকতো &lpar;বলাইবাহুল্য সেটাই ছিল এবং সেটাই থাকা উচিতও ছিল&rpar;&comma; তবে নানা ধর্মের মধ্যে এই যে হানাহানি তার প্রয়োজন ও কার্যকারিতা থাকতো কি&quest; যদি সবাই বিমূর্ত &comma;মানে যা মূর্ত বা ধরা যায় না&comma; সেটা বিশ্বাস করি&comma; তবে বিবাদের কিছু অবকাশ থাকে কি&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>না&comma; বিষয়টা ঠিক অতোটা সহজ থাকেনি। প্রাচীনকাল থেকেই কিছু বুদ্ধিমান মানুষের নজর এড়ায়নি সাধারণ মানুষের এই অলৌকিক শক্তিতে বিশ্বাসের ধারণাটি। এই মানুষগুলো ছিলেন সে সময় ও কালের প্রেক্ষিতে সমাজের একটু অগ্রসরবুদ্ধি ও প্রতিপত্তির অধিকারী। তাঁরা নানা কৌশলে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছেন&semi; কখনো কখনো জোরজবরদস্তি করেছেন&semi; বলেছেন যে&comma; তাঁরা কিংবা তিনি সেই অলৌকিক শক্তিকে খুশী করার উপায় জেনে গেছেন।<br &sol;>&NewLine;আমরা যাঁদের অবতার কিংবা নবী-পয়গম্বর ব’লে জানি&comma; তাঁদের কাজ ও জীবনী পর্যালোচনা করলে হয়ত সে রকম একটা ধারণাই পাওয়া যাবে যে&comma; তাঁরা আসলে অলৌকিক ঈশ্বরের সাথে লৌকিক মানুষের একটা সেতুবন্ধনের উপায়মাত্র&semi; অন্য কথায় মধ্যস্বত্বভোগী। তেমন কোনো প্রচলিত ধর্ম হয়ত পাওয়া যাবে না&comma; যেখানে স্ব-স্ব ঈশ্বরের সাথে সাধারণ মানুষের সরাসরি বা ডাইরেক্ট সংযোগের তেমন ব্যবস্থা আছে।<&sol;p>&NewLine;<p>প্রসংগেক্রমে&comma; প্রচলিত হিন্দুধর্মের একটু অগ্রসররূপ ব্রাহ্মসমাজের কথা বলা যেতেই পারে। একমাত্র ব্রাহ্মসমাজের মধ্যেই ঈশ্বরের সরাসরি প্রার্থনা করার একটা ব্যবস্থা ছিল। আর ব্রাহ্মসমাজের একদা একনিষ্ঠ উপাসক রবীন্দ্রনাথ তাই নিজেও মূর্তিপূজার বিপক্ষে অবস্থান নিলেও সরাসরি বিমূর্ত উপায়ে বিমূর্ত ঈশ্বরের আরাধনার কথা বলেছেন।<&sol;p>&NewLine;<p>অথচ ভারতবর্ষের আরেক প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব স্বামী বিবেকানন্দের ঈশ্বর কিন্তু মধ্যস্বত্বের গেঁড়াকলে আটকে গিয়েছিল। তাই অনেকে আশ্চর্য হোন যে&comma; বিবেকানন্দের মতো এতো প্রতিভাবান একজন মানুষ কিভাবে রামকৃষ্ণের মতো কালীভক্ত একজন মূর্তধারণার সাধকের বাতাবরণে বৃত্তাবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে বলেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;রামকৃষ্ণের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য স্বামী বিবেকানন্দের মতো এতো প্রতিভাবান একজনকে শিষ্য করা। আর স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা রামকৃষ্ণের মতো অলৌকিক ভাবধারণার এক সাধকের কাছে আটকে যাওয়া”।<&sol;p>&NewLine;<p>ঠিক একই কথা বলা যায়&comma; বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রেও। স্বয়ং ভগবান বুদ্ধ ছাড়া &OpenCurlyDoubleQuote;নির্বাণ” লাভ কিংবা স্বয়ং নবীজি ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভ শুধু দুরূহ নয়&comma;বোধহয় অসম্ভবও।<&sol;p>&NewLine;<p>&lpar;à§©&rpar;<br &sol;>&NewLine;একথা অপ্রিয় হলেও সত্য যে&comma; এখনো পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই ভিন্ন ভিন্ন রূপে অলৌকিক শক্তিধর ঈশ্বরে বিশ্বাস করে থাকেন। শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাসই নয়&comma; জাগতিক সুখ-সমৃদ্ধি-সমাধান-সমর্থনের জন্যে ঈশ্বরের কৃপা লাভ করতে চান। জাগতে তো বটেই মৃত্যুর পরে আরও বেশী সুখী হতে চান। এ পৃথিবীর অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চান মৃত্যুর পরে।এক কথায় সুখের সাগরে অনন্তকাল ভাসতে চান। আর তার জন্যে উপায় যার যার ঈশ্বরের কৃপা পাওয়া। ঈশ্বরের কৃপা লাভের জন্যে যুক্তি-তর্ক এমনকি কান্ডজ্ঞান বিসর্জন দিতেও মানুষের কমতি নেই।<&sol;p>&NewLine;<p>আগেই বলেছি&comma; কিছু মানুষ নিজের কিংবা নিজেদের মতো ক’রে ঈশ্বরতুষ্টির উপায় বাতলে দিয়ে গেছেন সাধারণের কাছে&semi; যার অন্য নাম প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস। কেউ কেউ বা কোনো কোনো ধর্মবিশ্বাসীরা হয়ত সেই অতীতের ঈশ্বরতুষ্টির উপায় একটু সংস্কার ক’রেছেন। ঈশ্বরের বিমূর্ত ধারণাকে দর্শন কিংবা যুক্তির প্রলেপে মুড়ে দেয়ার চেষ্টা করে ধর্মবিশ্বাসের বিধিনিষেধের বাতাবরণকে একটু আলগা করেছেন। আর কেউ এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন&comma; আদিম বা মধ্যযুগের সেই বাতলে দেয়া ঈশ্বরতুষ্টির রীতি-নীতি বা বিধিবিধানকে।<br &sol;>&NewLine;আমরা চাই বা না-চাই&comma; বিশ্বাস করি বা না-করি এ পৃথিবী থেকে অলৌকিক শক্তিতে বিশ্বাস&comma; যাকে আমরা ঈশ্বর&comma; আল্লাহ&comma; ভগবান&comma; গড যা বলি না কেন&comma; সেখানে থেকে এতো সহজে মুক্তি নেই। জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-যুক্তির উত্কর্ষ সত্বেও মানুষের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে&comma; থাকবে কিছু অজানা-অচেনা-অসহায়ত্ব। সেই সাথে রাজনীতি&comma; বৈষম্য –বিভাজন কিংবা অন্যকে শোষণ করার ইচ্ছে তো আছেই। আর এ সবের জন্য ঈশ্বরে বিশ্বাস কখনো আসবে সহজাত হিসেবে আবার কখনো ধর্মবিশ্বাসকে নিজ নিজ স্বার্থে ব্যবহারের মাধ্যমে।<br &sol;>&NewLine;তবে একথাও সত্য যে&comma; জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে মানুষের মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা যতো বাড়বে&comma; অলৌকিক শক্তিধর ঈশ্বর&comma; আল্লাহ&comma; ভগবান&comma; গড-এর প্রতি মানুষের বিশ্বাসও ততো কমবে। আর ঈশ্বরের অস্তিত্বে আস্থাহীন মানুষের ঈশ্বরতুষ্টির সাধনা&comma;যার প্রচলিত নাম ধর্মবিশ্বাস&comma; সে সবের প্রয়োজনও আস্তে আস্তে ফুরিয়ে যাবে।<br &sol;>&NewLine;&lpar;ভজন সরকার &colon; কবি&comma; কথাসাহিত্যিক ও প্রকৌশলী। হ্যামিল্টন&comma; কানাডা&rpar;<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version