Home সাহিত্য আরজ আলী মাতুব্বর: এক বিস্ময়

আরজ আলী মাতুব্বর: এক বিস্ময়

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>বনানী বাবলি &colon;<&sol;strong> আজ কথা বলবো পাঠকদের সাথে এক আশ্চর্য্য ব্যক্তিত্ব আরজ আলী মাতুব্বর সম্পর্কে। আপনারা অনেকেই হয়তো তাঁর নামই শুনেন নাই কিংবা শুনেছেন। যে পাঠকদের কাছে তিনি এখনো অজানা তাঁদের জন্যই আজকের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। অনেকদিন আগে &OpenCurlyDoubleQuote;আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র” পড়ে মনে হলো যেনো কেউ একজন শিকড় ধরে টান দিলো সমাজের অসঙ্গতিগুলি&comma; সমাজে ধর্মের অদৃশ্য ক্ষমতাধর হাতকে টেনে নামিয়ে আনলেন জনসমুখ্যে। তিনি বলেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;শিক্ষিত লোকদের কুসংস্কার সমাজের জন্য বেশি ক্ষতি করে।” কী ভয়ঙ্কর বোমার মতো কথা তিনি বলে গেছেন এই প্রথম বইতে। তাই হন্যে হয়ে এই রচনা সমগ্র ২ এবং à§© খুঁজে বের করলাম। তিনি বলতেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;এ দেশকে জাগাতে হলে দেশের মানুষকে কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে গণশিক্ষা দিতে হবে এবং ব্যাপকভাবে বিজ্ঞানচর্চা করতে হবে।” তিনি প্রশ্ন রাখতেন সমাজের মাঝে &OpenCurlyDoubleQuote;ধর্মের নামে কুসংস্কার সত্য&comma; না বিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞান সত্য&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>আরজ আলী মাতুব্বর যাঁর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো না। বরিশালের চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৩০৭ বঙ্গাব্দে একটি কৃষক পরিবারে। অর্থকষ্টের কারণে পড়াশুনা করেছেন মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত। কিন্তু তিনি জেনেছিলেন কান্ট্&comma; হেগেল&comma; মার্কস&comma; এঙ্গেলস&comma; বার্কলি&comma; লিবনিজ&comma; ব্রাডলি প্রমুখ এবং আরো অনেক দার্শনিক। তিনি পড়েন পুঁথি&comma; লোক কাহিনী&comma; স্থানীয় ছাত্রদের পাঠ্য বই&comma; পড়তেন বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিকদের তত্ত¡ ও তথ্য। একজন ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া বয়োবৃদ্ধ কৃষক এতো কঠিন সব বই পড়তেন কী করে&quest; শুধু তাই নয়&comma; পড়ে তা অনুধাবন করতেন কী করে&quest; তিনি অত্যন্ত সাবলীলভাবে বিশ্লেষণ করতে পারতেন বেদান্ত দর্শনের সাথে বিবেকানন্দের জীবন দর্শন&comma; উপনিষদ&comma; রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কিংবা শংকর রামানুজের বেদান্ত দর্শনের আদর্শের সাথে বিবেকানন্দের আদর্শের পার্থক্য। তিনি ছিলেন জ্ঞান তাপস। বরিশাল পাবলিক স্কুলে ছুঁটে যেতেন মাঠের কাজ শেষে। এছাড়া তিনি বরিশাল মেডিকেল কলেজের পাঠাগার এবং বিভিন্ন জেলার পন্ডিতব্যক্তিবর্গের পারিবারিক পাঠাগার ব্যবহার করতেন। শহরে গিয়ে মানুষের কাছে বই ভিক্ষা করে আনতেন। মিতভাষী&comma; কথা বলতেন কম কিন্তু শুনতেন বেশি।<&sol;p>&NewLine;<p>আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র বইটির সম্পাদক আইয়ুব হোসেন নাম ভূমিকা বিশ্লেষণ করে বলেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;অশিক্ষা&comma; কুশিক্ষা&comma; মূর্খতা&comma; মূঢ়তা&comma; অন্ধকার&comma; মানুষকে বিপজ্জনকভাবে গ্রাস করে আছে। জ্ঞান ও সত্যানুসন্ধানের দ্বার অর্গল আঁটা। অধিকাংশ মানুষ প্রশ্নহীন&comma; জিজ্ঞাসাবিমুখ। প্রজন্ম পরম্পরায় পাওয়া মূল্যবোধ নিয়েই সন্তুষ্ট। একেই চূড়ান্ত ধন-জ্ঞান ভেবে চিন্তার ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ রাখে।”<&sol;p>&NewLine;<p>অতি সত্য অনুধাবন। আমাদের মনে যদি কোনো প্রশ্ন না জাগে&comma; আমাদের চিন্তা যদি স্থবির হয় তাহলে সামগ্রিক বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে&comma; চেতনায় আনবে অচলায়তন। বংশ পরম্পরায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই গতানুগতিক মূল্যবোধ নিয়ে মানুষ যদি জীবন ধারণ করে তাহলে সমাজের যুগোপযোগী পরিবর্তনের ধারাটা নদীর মতো বয়ে যেতে যেতে পারে না&comma; গতি রুদ্ধ হয়। আরজ আলী মানুষের বিবেককে জাগিয়ে দিতে চেষ্টা করেছেন সমাজের নানা অসঙ্গতিতে&comma; যেটার প্রভাবে মানুষ তার ভালো মন্দ জ্ঞান হারাতে অর্থাৎ এক অর্থে বাধ্য বলা চলে । তাঁর জিজ্ঞাসু মন বার বার এগিয়ে এসেছে প্রশ্ন নিয়ে। তাঁর মায়ের মৃত্যু পরবর্তী ঘটনা তাঁর মনে প্রচন্ড আঘাত হানে গ্রামের প্রতিবেশীদের অন্যায্য আচরণের কারণে। মৃত মায়ের ছবি তোলার কারণে সেই কতিপয় &OpenCurlyDoubleQuote;ধর্মান্ধ মুন্সী&comma; মৌলবীরা” তাঁর মায়ের জানাজা পড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো। পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু প্রতিবেশীদের মাধ্যমে মায়ের শেষকৃত্য সম্পাদন হয়। এই ঘটনার পর তিনি হয়ে উঠেন বিদ্রোহী এবং সামাজিক সংস্কার&comma; কুসংস্কার&comma; বুদ্ধিহীনতার বিরুদ্ধে তাঁর জিজ্ঞাসার ও চিন্তার প্রসার ঘটাতে থাকেন। আমৃত্যু তিনি মুক্তবুদ্ধির ও মুক্তচিন্তা চর্চার জন্য এক বিরল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন সমাজকে প্রশ্ন করে&comma; তাঁর স্পষ্ট লিখনি দিয়ে। তিনি আরো বলেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;একটা দেশের সমাজ অশিক্ষা ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত হলে সে দেশের রাজনীতিও স্বচ্ছ হবে।”<&sol;p>&NewLine;<p>ধীরে ধীরে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান&comma; অঙ্ক&comma; দর্শন&comma; বিজ্ঞান&comma; ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করে জ্ঞানলব্ধ পান্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। পরবর্তীতে গ্রামের সাধারণ মানুষদের জন্য যারা অন্ধ বিশ্বাস&comma; অন্ধ আবেগ দ্বারা চালিত হন তাদের জন্য সরল ভাষায় লিখে গেছেন সৌরজগৎ কী কিংবা জীবজগতের বিবর্তন&comma; মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ&comma; ভূমিকম্পের কারণ&comma; বজ্রপাত কেনো হয়&comma; জোয়ার ভাটা কেনো হয়&comma; ঋতুভেদের কারণ&comma; স্বর্গ নরকের কোনো অস্তিত্ব আছে কী নেই ইত্যাদি। এইসব বিষয়ে বিশদ বর্ণনা রেখে গেছেন তাঁর বইতে বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে এবং ধর্মের ব্যাখ্যা কেনো গ্রহণযোগ্য নয় সেটাও যুক্তি সহকারে তথ্য দিয়ে গেছেন সাধারণের জন্য।<&sol;p>&NewLine;<p>এই রচনা সমগ্রের স্মৃতিচারণে শিক্ষক মুহম্মদ শামসুল হক &lpar;জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়&rpar; আরজ আলীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি কেনো বিজ্ঞানের প্রচার&comma; প্রসার এবং প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন আছে মনে করেন&quest; তাঁর ছোট্ট একটা উত্তর ছিলো এবং বলেছিলেন&comma; &&num;8220&semi;কুসংস্কারমুক্ত মানুষের মঙ্গলের জন্য।&&num;8221&semi; তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো তাঁর ধর্ম কী&quest; উত্তর ছিলো&comma; &&num;8220&semi;মানবতাবাদ।&&num;8221&semi; তিনি বলতেন&comma; &&num;8220&semi;কোনো তত্ত¡à¦®à§‚লক বিষয়ে তো নয়ই&comma; যুক্তিহীন &lpar;আন্দাজী&rpar; কথা বাজারেও চলে না।&&num;8221&semi; এই পরম যুক্তিবাদী মানুষটির &&num;8220&semi;সত্যের সন্ধান&&num;8221&semi; গ্রন্থটির অপর নাম ছিলো &&num;8220&semi;যুক্তিবাদ&&num;8221&semi;। ফলস্বরূপ&comma; তৎকালীন বরিশালের আইনজীবী ম্যাজিস্ট্রেড ও তাবলীগ জামাতের আমীর জনাব এফ&period; করিম তর্কযুদ্ধে হেরে গিয়ে &lpar;à§§à§©à§«à§­ সালের ১২ জ্যৈষ্ঠ তারিখে&rpar; তাঁর নামে ফৌজদারি মামলা দেন &OpenCurlyDoubleQuote;কম্যুনিষ্ট” আখ্যা দিয়ে। পরবর্তীতে তাঁর কোনো যুক্তির উত্তর মেলে না তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের কাছে এবং পরিণামে তাঁকে নেওয়া হয়েছিলো &&num;8216&semi;পবিত্র হাজতখানায়’। শিক্ষাদীক্ষাবিহীন একজন কৃষক কিন্তু তাঁর মুক্ত চেতনা ও মুক্তবুদ্ধির অপরাধে ধর্মভিত্তিক সদ্যোজাত পাকিস্তান রাষ্ট্রে হাজতবাসী হলেন। আদালতের রায় অনুসারে তাঁকে প্রায় দুই দশক নিষ্ক্রিয় থাকতে হয়&comma; তাঁর কলম হয় স্তব্ধ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর শানিত কলম আবার চলতে শুরু করে।<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-41678" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2022&sol;10&sol;Bk-12-1&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"516" height&equals;"771" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>তিনি মনে করেন কল্পিত ধর্মের আবির্ভাবের কারণেই সমাজে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন&comma; &&num;8220&semi;বর্তমান যুগে প্রায় সকল ধর্মই আস্তিক। বিশেষত একেশ্বরবাদী। সনাতন হিন্দু ধর্মও মূলত একেশ্বরবাদী। তাহাই যদি হয়&comma; অর্থাৎ জগতের সকল লোকই যদি একেশ্বরবাদী হয়&comma; তবে তাহাদের মধ্যে একটি ভাতৃত্বভাব থাকা উচিত। কিন্তু আছে কি&quest; আছে যত রকম হিংসা&comma; ঘৃণা&comma; কলহ ও বিদ্বেষ।<br &sol;>&NewLine;স¤à¦ªà§à¦°à¦¦à¦¾à§Ÿà¦¬à¦¿à¦¶à§‡à¦·à§‡ ভুক্ত থাকিয়া মানুষ মানুষকে এতো অধিক ঘৃণা করে যে&comma; তদ্রুপ কোন ইতর প্রাণিতেও করে না। হিন্দুদের নিকট গোময় &lpar;গোবর&rpar; পবিত্র&comma; অথচ অমুসলমান মাত্রেই নাপাক। পক্ষান্তরে মুসলমানের নিকট কবুতরের বিষ্ঠাও পাক&comma; অথচ অমুসলমান মাত্রেই নাপাক। কেহ কেহ একথাও বলেন যে&comma; অমুসলমানি পর্ব উপলক্ষ্যে কলা&comma; কচু&comma; পাঁঠা বিক্রিও মহাপাপ। এমনকি মুসলমানের দোকান থাকিতে হিন্দুর দোকানে কোন কিছু ক্রয় করাও পাপ। এই কি মানুষের ধর্ম&quest; না ধর্মের নামে সা¤à¦ªà§à¦°à¦¦à¦¾à§Ÿà¦¿à¦•তা&quest;&&num;8221&semi; তাঁর এই পারিপার্শিক ঘটনার বা অনুভূতির বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নগুলি উঠে এসেছে তাঁর পুস্তকে। আমাদের সমাজ ধীরে ধীরে অনেক পরিবর্তন হচ্ছে কিন্তু এই যে মানুষের প্রতি মানুষের ধর্ম নিয়ে এক প্রচলিত বিদ্বেষ সেটা পরিবর্তন হয়েছে কতখানি&quest; জীবদ্দশায় কিছু মানুষের ভালোবাসা যেমন পেয়েছিলেন ঠিক তেমনি পেয়েছেন অন্যদের কাছ থেকে বিড়ম্বনা। পারিপার্শিক অবস্থা ছিল প্রতিক‚লতায় পরিপূর্ণ এবং সত্তর উর্ধ বয়সেও পেয়েছেন জীবননাশের হুমকি এই স্বাধীন বাংলাদেশে।<&sol;p>&NewLine;<p>তিনি পড়েছেন ধর্মগ্রন্থ &&num;8216&semi;বেদ&&num;8217&semi;&comma; পড়েছেন পারসিকদের &&num;8216&semi;জেন্দ আভেস্তা&&num;8217&semi;&comma; ইহুদিদের &&num;8216&semi;তৌরিত&&num;8217&semi;&comma; পড়েছেন &&num;8216&semi;বাইবেল&&num;8217&semi;&comma; পড়েছেন &&num;8216&semi;কোরান&&num;8217&semi;। তিনি ইসলাম সহ সকল ধর্মের লৌকিক বিশ্বাস এবং যুক্তিবর্জিত অধ্যায়গুলিকে প্রশ্ন দিয়ে আঘাত করেছেন। তিনি বলেন&comma;&&num;8221&semi;যে বিষয়ে কোন জ্ঞান জন্মিল না &&num;8230&semi; কোন বিষয় বা ঘটনা না দেখিয়াও বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু একেবারেই না বুঝিয়া বিশ্বাস করে কিরূপে&quest; যাজক যখন দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন যে&comma; না দেখিয়া এমনকি না বুঝিয়াই ঐ সকল বিশ্বাস করিতে হইবে&comma; তখন মনে বিশ্বাস জন্মিলেও পাপের ভয়ে অথবা জাতীয়তা রক্ষার জন্য মুখে বলা হয়&comma;&&num;8221&semi;আচ্ছা&&num;8221&semi;। এই যে জ্ঞানের অগ্রগতিতে বাধা&comma; মনের অদম্য স্পৃহায় আঘাত&comma; আত্মার অতৃপ্তি&comma; ইহারই প্রতিক্রিয়া &&num;8211&semi; মানুষের ধর্ম &&num;8211&semi; কর্মে শৈথিল্য। এক কথায় &&num;8211&semi; মন যাহা চায়&comma; ধর্মের কাছে তাহা পায় না। মানুষের মনের ক্ষুধা অতৃপ্তই থাকিয়া যায়। ক্ষুধার্থ বলদ যেমন রশি ছিড়িয়া অন্যের ক্ষেতের ফসলে উদরপূর্তি করে&comma; মানুষের মনও তেমন ধর্ম &&num;8211&semi; ক্ষেত্রের সীমা অতিক্রম করিয়া ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য ছুটিয়া যায় দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে।&&num;8221&semi; তিনি আরো বলেন&comma;&&num;8221&semi;ধর্মজগতে এরূপ কতগুলি নীতি&comma; প্রথা&comma; সংস্কার ইত্যাদি এবং ঘটনার বিবরণ প্রচলিত আছে&comma; যাহা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নহে&comma; এবং ওগুলি দর্শন ও বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বিপরীতও বটে।&&num;8221&semi; তিনি যেটা প্রত্যক্ষ সেটাই বিশ্বাসযোগ্য মনে করতেন। এই প্রসঙ্গে তিনি লিখেছিলেন&comma;&&num;8221&semi;আমি স্বচক্ষে যাহা দেখিয়াছি&comma; স্বকর্ণে যাহা শুনিয়াছি&comma; স্বহস্তে যাহা স্পর্শ করিয়াছি তাহাতে আমার সন্দেহের অবকাশ কোথায়&quest; যাহা আমাদের প্রত্যক্ষীভূত&comma; তাহাতেই আমাদের অটল বিশ্বাস।&&num;8221&semi; কারণ হিসাবে তিনি মনে করেন বিজ্ঞান প্রমাণিত ও প্রত্যক্ষ &&num;8220&semi;কিন্তু অধিকাংশ ধর্ম এবং ধর্মের অধিকাংশ তথ্য অন্ধবিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত।&&num;8221&semi;<&sol;p>&NewLine;<p>আরজ আলী মাতুব্বর একজন সব্যসাচী তাই একহাতে লিখেছেন এবং অন্যহাতে লাঙ্গল দিয়ে মাঠে কাজ করেছেন । তাঁর অনুসন্ধিৎসু মন প্রশ্ন রেখে গেছে অজানাকে জানার দরজা খুলে দিয়ে। তিনি মনে করতেন জ্ঞান বিজ্ঞান সহ সমস্ত বিষয়ের বই পড়া অতি আবশ্যক এবং এটা ছাড়া মানুষের পক্ষে কুসংস্কারমুক্ত হওয়ার আর কোনো পথ নেই। তাঁর সারা জীবনের স্বপ্ন দিয়ে তৈরী করে গেছেন আরজ মঞ্জিল পাবলিক লাইব্রেরি। তাঁর দেহখানি দান করেন চিকিৎসা বিদ্যালয়ের জন্য&comma; দান করেন তাঁর চক্ষু দু’টি এবং স্থানীয় মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থাও রেখে গেছেন । সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সহস্রাধিক বছরের পুরানো ধর্ম সংস্কারের অভাবে কুসংস্কারের আবর্তে যখন ঘূর্ণিপাকে ঘুরছে তখন তিনি মানবতাকে সবার উপরে স্হান দেওয়ার পক্ষে যুক্তি রেখেছেন। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি নির্ভিকচিত্তে ধর্মগ্রন্থকে প্রশ্ন করেছেন&comma; প্রশ্ন করেছেন ঈশ্বরকে&comma; ভগবানকে&comma; আল্লাহকে&comma; যীশুখৃষ্টের পিতাকে&comma; জিজ্ঞাসা করেছেন পৃথিবীতে ঈশ্বরের ভূমিকা&comma; তিনি কি দয়াময়&comma; ঈশ্বর-আল্লাহর রূপ কী ইত্যাদি অগুনতি জিজ্ঞাসা দিয়ে তৈরী এই রচনা সমগ্র পাঠকের মনের ক্ষুধাকে বাড়িয়ে তুলবে দ্বিধাহীনভাবে। কখনো কখনো সুক্ষ হাস্যরস ব্যবহার করে বর্ণনা করেছেন তাঁর অনুভূতির কষ্টের পাথর। চেয়েছিলেন নিজে ভারমুক্ত হতে।<&sol;p>&NewLine;<p>স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু ধর্মীয় কুসংকার&comma; অন্ধ বিশ্বাসের বলয় থেকে মুক্ত হতে পেরেছে কি বাংলার মানুষ&quest; একজন স্বশিক্ষিত দার্শনিক আরজ আলীকে আমরা অনেকেই জানি না&comma; যিনি ঘন তমসা অন্ধকার রাতে আলো হয়ে এসেছিলেন। সমাজের অনেক বিজ্ঞ পন্ডিত ব্যক্তিরাই চেনেন না কে এই আরজ আলী মাতুব্বর কিংবা কী তাঁর আদর্শ ছিলো&quest; তিনি তাঁর বইয়ের পাণ্ডুলিপি নিয়ে সমাজের তথাকথিত একাডেমিক পন্ডিতদের দ্বারে দ্বারে গেছেন কিন্তু এই ধুলায় মলিন পোশাকের অশিক্ষিত কৃষক তাদের নজর কাড়তে পারেন নাই। এমন কী বাংলার এই স্বর্ণখন্ডটিকে বাংলা একাডেমিও মূল্যায়ন করতে পারে নাই। এই ব্যর্থতা কার &quest; আলোর মশাল জ্বালিয়ে আরজ আলী জিততে পারেন নাই স্বাধীন বাংলাদেশেও এবং আজও সাধারণ মানুষ বন্দি এই দুর্ভাগা অন্ধকার সমাজে।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version