শাহনুর চৌধুরী : আলবার্টায় করোনা বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা। তারা বলছেন, কানাডায় চোখ রাঙ্গাচ্ছে করোনার ৪র্থ ঢেউ। এছাড়া ভয়াবহ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। অন্যদিকে কানাডার অন্যান্য প্রভিন্সের তুলনায় ভেকসিনেশনের হারেও পিছিয়ে আছে আলবার্টা। এমন পরিস্থিতিতে ২ সপ্তাহের মধ্যে করোনার সব বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার সরকারি ঘোষণা আলবার্টাবাসীকে নতুন করে বিপদে ফেলতে পারে।
আলবার্টা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ওই প্রভিন্সে করোনা রোগীদের জন্য আলাদা আইসোলেশন সেন্টার বা হোটেল রাখা হবে না। এছাড়া গণহারে করোনা টেস্টও করা হবে না। শুধুমাত্র যাদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাবে তাদেরই করোনা টেস্ট করা হবে।
৩১ আগস্টের পর থেকে শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদেরই কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে। স্কুল-কলেজে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে না। এছাড়া গণপরিবহনেও মাস্ক বাধ্যতামূলক থাকবে না। অ্যাডমন্টন রয়েল আলেকজেন্ড্রা হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. নিজা বক্শি বলেন, এই পরিবর্তন ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে আমরা যারা স্বাস্থ্যখাতে কাজ করছি তারা সরকারের ওই ঘোষণায় খুবই উদ্বেগের মধ্যে আছি। কেননা বর্তমানে মহামারির যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে আগামী ২ সপ্তাহে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এমনটা ভাবার কোন উপায় নেই। করোনা টেস্ট এবং স্বাস্থ্যবিধি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক হবে না। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমাতে এগুলো খুবই জরুরী।
এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্যালগিরি ও এডমন্টনে গত শুক্রবার ডাক্তারেরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা সরকারের পরিকল্পনার সমালোচনা করে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া ক্যালগিরির একজন চিকিৎসক ডা. জো ভিপন্ড আলবার্টার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করে বলেন, সবার মতো আমারও বিশ্বাস আমাদের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিনা হিনশো সবার আগে চিকিৎসকদের স্বার্থ দেখবেন। কিন্তু বিতর্কিত সরকারি সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়ে তিনি আমাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। তিনি আমাদের শিশুদেরও অজানা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। তাই তার পদত্যাগ করা উচিত।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগিরির মেডিসিন বিভাগের ডা. গেবরিয়েল ফেবরু বলেন, অতি উচ্চ মাত্রায় সংক্রমক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এখন একটি বড় হুমকি। এই মুহূর্তে যদি হাসপাতালে আনার পর রোগীদের করোনা টেস্ট করা হয় তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীদের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। কাজেই কোভিড পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিধি কোনটাই বাদ দেয়া ঠিক হবে না।
একই ইউনিভার্সিটির ডা. ডেনিয়েল গ্রেগসন বলেন, বাধ্যতামূলক আইসোলেশন তুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। তবে এসব সমালোচনা সত্বেও সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল। আলবার্টার স্বাস্থ্যমন্ত্রী টেইলার সেন্ড্রো বলেন, কোন রাজনৈতিক কারণে নয় জনগণের চাহিদা ও মঙ্গলের জন্যই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সূত্র : সিবিসি নিউজ