অনলাইন ডেস্ক : ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা কানাডায় আসার সাথে সাথে তাদেরকে স্কুলগুলোতে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষকেরা বলছেন, স্কুলগুলো হতে পারে শরনার্থী শিক্ষাথীদের জন্য নিরাময়ের স্থান। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল কাটিয়ে তারা স্কুলেই খুঁজে পেতে পারে সুস্থ্য, স্বাভাবিক এবং নিরাপদ জীবন।
আর এফ মরিসন এলিমেন্টারির ভাইস প্রিন্সিপাল ওকাসানা কোস্টেকিজ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা ইউক্রেনীয় শিশুদের উপর সতর্ক নজর রাখছেন। তিনি নিশ্চিত করতে চাইছেন এই মাসে আসা এসব মিমু ও তাদের অভিভাবকেরা যেন উইনিপেগের এই স্কুলে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এই লক্ষ্যে তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের রঙিনভাবে সাজানো ক্লাস রুমে বসে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। কোস্টেকিজ বলেন, কানাডার পরিবেশ তাদের জন্য নতুন হতে পারে, কিন্তু তাদের চারপাশে ইউক্রেনীয় ভাষাভাষিরা থাকায় তারা হাসছে। ভাষা ও সংস্কৃতির সামঞ্জস্য থাকায় তারা স্বস্তি পাচ্ছে। শিশুরা দ্রæত স্বাভাবিক হওয়ায় তাদের পিতা-মাতাও নিশ্চিত হতে পারছে যে, শিশুরা যুদ্ধের ভয়াবহতাকে কাটিয়ে উঠতে পারছে। ফেডারেল সরকার গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে একটি জরুরি কর্মসূচীর মাধ্যমে ইউক্রেনীয়দের অস্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কানাডায় আসার অনুমতি দিয়েছে। সেই সময় থেকে পাওয়া ১ লাখ ৬৪ হাজার আবেদনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার জনকে অনুমোদন দিয়েছে কানাডা ইমিগ্রেশন, রিফিউজিস অ্যান্ড সিটিজেনশিপ বিভাগ। অন্যদিকে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির হিসাবে এই সময়ে কানাডায় অস্থায়ী বসবাসরত ১৯ হাজার ইউক্রেনীয়কে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে। নতুনদের এই তরঙ্গ আসার সাথে সাথে শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মীরা উদ্বাস্তু শিশুদের জন্য স্কুলগুলোকে সহায়তার হাত বাড়াড়নোর আহ্বান জানায় এবং তাদের সমর্থনে কী কী করা প্রয়োজন তা তুলে ধরে।
প্রথমেই শিশুদের জন্য তৈরি করা হয় সহায়ক পরিবেশ। ম্যানিটোবায় প্রায় একজন স্কুলে ইউক্রেনীয় ও ইংলিশ এই দ্বৈত ভাষার কর্মসূচী চালু করা হয়। আর এফ মরিসন সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তু শিশুকে ভর্তি করে নেয়। তারা শিশুদের গাইড করার জন্য ইউক্রেনীয় ভাষায় দক্ষদের নিয়োজিত করে। তারা দোভাষী হিসাবে উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগে ভ‚মিকা রাখছে।
সেটেলমেন্ট ওয়ার্কার ইন স্কুল ( এস ডব্লিউ আই এস) প্রোগ্রামের একজন বিশেষজ্ঞ মরিয়ম করিমি বলেন, স্কুলগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইউক্রেনীয় শিশুদের জন্য তাদের সেরাটা করছে। তবে কিছু ফাঁক ফোকর অবশ্যই আছে। তাই আমাদের দেখতে হবে স্কুলগুলো যেন আরও আন্তরিকভাবে তাদের স্বাগত জানায়। মনে রাখতে হবে যুদ্ধ এবং ভ্রমণজনিত ট্রমা থেকে শিশুদের যত দ্রæত মুক্ত করা যাবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল। তিনি একজন নবাগতকে শুধু মৌখিকভাবে শেকানোর চেষ্টা না করে ভিজ্যুয়াল আর্ট, মিউজিক, ফটোগ্রাফি বা ডিজিটাল গল্প বলার পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। সূত্র : সিবিসি