
অনলাইন ডেস্ক : গত ৮ই মে, রবিবার, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক ঝটিকা সফরে ইউক্রেনে গিয়েছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে কানাডার দূতাবাস পুনরায় চালু করেন এবং বর্তমান ইউক্রেনের কঠিন সময়ে নিঃশর্তভাবে ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
জাস্টিন ট্রুডো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনোস্কির সাথে সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য, গত ফেব্রæয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর প্রেসিডেন্ট জেলেনোস্কি এই প্রথম কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে প্রকাশ্যে কোন সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, কানাডা সব সময় ন্যায় এবং মানবিকতার পাশে থাকে। ইউক্রেনে রাশিয়া যে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে, তা পুরোপুরি অনৈতিক এবং সভ্য সমাজ বিরোধী। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেনে বিরাজমান এই সমস্যার দ্রুত অবসান ঘটবে। তিনি এই সময়, সামরিক সরঞ্জামাদি বাবদ ইউক্রেনকে ৫০ মিলিয়ন ডলার দেবার ঘোষণা দেন। তিনি আরো ঘোষণা দেন, ইউক্রনে খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কানাডা বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে ২৫ মিলিয়ন ডলার দিবে এবং আগামী এক বছরে ইউক্রেনের সকল দ্রব্যের উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার হবে। এছাড়াও, ইউক্রেনের নারীদের সুরক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষা ও সুশীল সমাজকে রক্ষার জন্য আরো অর্থ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
জাস্টিন ট্রুডো তাঁর সফরের দিন শুরু করেন ইরপিন শহরে। তিনি ইরপিন শহরের মেয়র এবং নগরের অন্যান্য প্রতিনিধিদের সাথে শহরটি ঘুরে দেখেন। এই সময় তিনি প্রত্যক্ষ করেন, ইরপিন শহরের সব বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট এবং স্থাপনাসমূহ। তিনি ইরপিনের মানুষদের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা এবং সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি নিজের মাতৃভূমি রক্ষার জন্য ইরপিনবাসী যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেই সাথে তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে চলেছে তা সত্যিই দানবিক এবং এর জন্য অবশ্যই তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। মানবতা বিরোধী কাজ করার জন্য পুতিনের বিরুদ্ধে সব ধরনের বিচারিক কাজে কানাডা সব সময় ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন জাস্টিন ট্রুডো।
কিয়েভে নতুন করে কানাডার দূতাবাস চালু করার সময় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দূতাবাসে কানাডার পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন কানাডার উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেলানি জলি।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য সামরিক আগ্রাসনের মুখে অধিকাংশ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো ইউক্রেন থেকে সাময়িকভাবে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করেন এবং নিজেদের দূতাবাস কর্মীদেকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনে।