অনলাইন ডেস্ক : ইরাকের মধ্যাঞ্চলে কৃষিজমি নিয়ে পুরোনো বিরোধ নতুন করে ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এতে অন্তত আটজন নিহত এবং আরও নয়জন আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে উপজাতীয় দ্বন্দ্ব নতুন নয়, তবে সামান্য বিরোধও বড় ধরনের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের কারণ হয়ে যাচ্ছে—এমন একটি বাস্তবতার দৃষ্টান্তই ফুটে উঠেছে এই সর্বশেষ ঘটনায়।
শনিবার সকালে ওয়াসিত প্রদেশের খেশান গ্রামে বেদুইন উপজাতির সদস্যদের মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। কৃষিজমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ হঠাৎ করে তীব্রতা পেয়ে অস্ত্রধারী সংঘর্ষে রূপ নেয়। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এই সংঘর্ষে আটজন নিহত এবং নয়জন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রদেশের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তিনি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থল ঘিরে ফেললেও উত্তেজনা পুরোপুরি থামেনি।
ওয়াসিত প্রদেশের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় সকালে, যখন খেশান গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ইরাকের কুত শহর থেকে এএফপি পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্রের কারণে হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রাখলেও পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, উভয় পক্ষের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র থাকায় সংঘর্ষ দ্রুতই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। ইরাকে উপজাতীয় বিরোধ প্রচলিত একটি সমস্যা, যেখানে জমি, পানির উৎস কিংবা ব্যক্তিগত শত্রুতার মতো ক্ষুদ্র বিষয়ও বড় সহিংসতার রূপ নেয়।
দেশটির সামাজিক কাঠামোতে উপজাতি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে এবং তারা নিজেদের নৈতিক, সামাজিক এবং প্রায়শই বিচারিক নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয়। অনেক উপজাতির কাছেই বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, যা ছোটখাটো বিবাদকেও প্রাণঘাতী সংঘর্ষে পরিণত করে।
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর সাদ্দাম হোসেনের সরকার পতনের পর ইরাকে বহু বছর ধরে চলা সহিংসতার মধ্যেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে এগোতে শুরু করেছে। তবে মধ্যাঞ্চলীয় এ ধরনের উপজাতীয় সংঘর্ষ দেখিয়ে দিচ্ছে যে স্থিতিশীলতা এখনো ভঙ্গুর, এবং ক্ষুদ্র বিরোধও দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে দ্রুত অস্থিতিশীল করতে পারে।
তথ্যসূত্র : এএফপি






