অনলাইন ডেস্ক : এবার কানাডা থেকে সার ও ভারত থেকে চাল আমদানিতে নতুন শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সোমবার হোয়াইট হাউসে একটি অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার নতুন সাহায্য ঘোষণার সময় ট্রাম্প এই ইঙ্গিত দেন। ওই কৃষকদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বিভিন্ন দেশ থেকে সস্তায় বিভিন্ন শস্য ও সার আমদানির কারণে বাজারে তাদের পণ্যগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।

এ নিয়ে মঙ্গলবার ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমনিতেই আমদানি পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘটনায় ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বিশ্বজুড়ে যা সূচনা করেছে নীরব শুল্কযুদ্ধ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চালাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় চালে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপ করলে এ দুই বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী আলোচনা আরও দীর্ঘ হতে পারে।

সোমবার ট্রাম্প মার্কিন কৃষকদের বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় চালের কথিত মজুতের বিষয়টি দেখবেন। কিছু কৃষক ভারত, ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলো তাদের ফসলের দাম কমিয়ে দেওয়ায় চালের দাম কমে যাওয়ার জন্য আমদানিকে দায়ী করেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি এটা অন্যদের কাছ থেকেও শুনেছি। আপনারা এটা করতে পারেন না।

ভারত হলো বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ। চলতি মৌসুমে দেশটি থেকে প্রায় ২৫ মিলিয়ন টন চাল এশিয়ার অন্য দেশগুলো এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে রপ্তানি হবে। মার্কিন কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বিদেশ থেকে আমদানির চেয়ে বেশি চাল বিদেশে বিক্রি করে। তবে এই বছর দেশটির চাল কেনার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড থেকে আমদানি শীর্ষে রয়েছে, এর পরই রয়েছে ভারত।

এদিকে ভারত নিয়ে ট্রাম্পের নতুন নতুন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটিতে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্টে প্রকাশিত খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক আশুতোষ ভার্সন এক নিবন্ধে মার্কিন প্রশাসনের নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন।

তাঁর মতে, ট্রাম্পের কাছে ভারতের গুরুত্ব শুধু ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তার জন্য। তিনি লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই পর্যবেক্ষকরা জল্পনা করেছেন, তাঁর বৈদেশিক নীতিগুলো সহজাত প্রবৃত্তির ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং এর পেছনে একটি বিশদ কৌশল রয়েছে। আমাদের কাছে একটি নথি রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল যা ৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। এতে ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশলগত বিশ্ব-দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গির মূল উপাদানগুলো পশ্চিম ইউরোপ, চীন, লাটিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ওপর মনোনিবেশ করে। ভারত এতে উল্লেখযোগ্য স্থান পায়নি।