বিনোদন ডেস্ক: দান করায় বেশ নামডাক আছে হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির। এবার করোনা মহামারি মোকাবিলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন গার্ল, ইন্টারাপ্টেড (১৯৯৯) ছবিতে অভিনয় করে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে অস্কারজয়ী এই অভিনয়শিল্পীর। ইতিমধ্যে ক্ষুধার্ত শিশুদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ছয় সন্তানের জননী এই জনদরদি হলিউড অভিনেত্রী এক বিবৃতিতে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। জোলির আগে রিয়ান্না, ব্লেক লাইভলি ও রায়ান রেনল্ডসও করোনার দিনে বাড়িয়ে দিয়েছে তাঁদের সাহায্যের হাত।

লারা ক্রাফট: টুম্ব রাইডারখ্যাত এই তারকা তাঁর সেই বিবৃতিতে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০০ কোটি শিশুর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ওদের একটা বড় অংশ স্কুলে যায় কেবল খাওয়ার লোভে। বিশ্বের কথা বাদই দিলাম। কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ২ কোটি ২০ লাখ শিশু খাবারের জন্য স্কুলের ওপর নির্ভরশীল।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি যে শিশুদের কথা বলছেন, ওদের খাওয়া এখন অনিশ্চিত। তাই তিনি যে অর্থ দান করবেন, তা ব্যয় হবে এই শিশুদের খাবারের উদ্দেশ্যে। জোলির আগে সংগীত তারকা রিয়ান্না ৪৩ কোটি টাকা দান করেছেন একই উদ্দেশ্যে। হলিউড তারকা ব্লেক লাইভলি ও রায়ান রেনল্ডসও জোলির সমপরিমাণ, অর্থাৎ ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা করে দান করেছেন আমেরিকা ও কানাডার ফুড ব্যাংকে।

হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি পর্দায় যতটা সক্রিয়, পর্দার বাইরেও ততটাই সরব বিভিন্ন মানবতাবাদী কার্যক্রমে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি।

মানবতার কল্যাণে, বিশেষ করে শরণার্থী ও যৌন নির্যাতিত নারীদের জন্য এর আগে বহুবার অর্থ দিয়েছেন, তহবিল সংগ্রহ করেছেন ৪৪ বছর বয়সী জোলি।

২০১০ সালে হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশে জোলি ও ব্র্যাড (সাবেক স্বামী, হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট) ৮৬ কোটি টাকা সহায়তা করেন। ২০০৫ সালে এতিমখানার শিশুদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠান পরবর্তী সময়ে শরণার্থী শিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যেও কাজ করে।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনবার বিয়ে করেছিলেন জোলি। জনি মিলার, বিলি বব থর্নটন ও সর্বশেষ ব্রাড পিট—সবার সঙ্গে ঘর ভাঙার পর ছয় সন্তানকে নিয়েই সময় কাটছে জোলির। এদের ভেতর তিনজন জোলির গর্ভে জন্মানো, আর বাকি তিনজনকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের শরণার্থীশিবির থেকে দত্তক নেওয়া।

জোলির গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তান শিলোহ, নক্স ও ভিভিয়েনের মতো একই রকম ভালোবাসা পেয়ে বেড়ে উঠছে ম্যাডক্স, জাহারা ও প্যাক্স। শিলোহ, নক্স ও ভিভিয়েনের যখন জন্ম হয়, পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় তাদের ছবি ধরা পড়ার আগেই গণমাধ্যমের কাছে সন্তানদের ছবি প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি করেছিলেন জোলি। পুরো অর্থই তিনি একটি দাতব্য সংস্থায় দান করে দেন। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো জোলির পুরোনো অভ্যাস।