আহসান রাজীব বুলবুল : কানাডা, বিভিন্ন দেশের মানুষ এখানে বসবাস করছে। এদের মধ্যে অনেক সংখ্যক মুসলমানও রয়েছেন। সারা বিশ্বের মতো, কানাডার মুসলমানরাও পালন করছেন সিয়াম সাধনার মাস রমজান।
রমজানকে কেন্দ্র করে গত দুই বছরের তুলনায় এবার কানাডায় ব্যাপক আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। রমজানের প্রথম জুমায় দেখা গেছে, মসজিদে প্রচুর সংখ্যক মুসল্লির সমাগম ঘটেছে। তারা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। মসজিদ গেটে আতর ও জায়নামাজের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে দোকানগুলোতে মাহে রমজান সম্বলিত পোস্টার টাঙানো হয়েছে, যা ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করে। প্রবাসী বাঙালিদের মালিকানায় থাকা গ্রোসারিগুলো দেশীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে।
পবিত্র রমজানে বাংলাদেশের মতো কানাডায়ও বাঙালিরা ছোলা মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকেন। ইফতারির আয়োজনে থাকে পেয়াজু, কলা, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর, চিকেন হালিম আর শরবত। আরও থালে কমলা, আঙুর, আপেলসহ নানান ফল। বাংলাদেশি হোটেলগুলোতে ইফতারিসহ খিচুরি ও বিরিয়ানির বেচাকেনা চলে জমজমাট।
কানাডায় থাকলেও নিজেদের ধর্মীয় রীতি নীতির কথা ভুলে যায়নি প্রবাসী মুসলিম বাঙালিরা। তার প্রতিফলন ঘটে তারাবির নামাজের সময়। দেখা যায়, শিশু-কিশোররা তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে নামাজের উদ্দেশে মসজিদে আসে। স্বাস্থ্যবিধি শিথিলতার কারণে এ বছর নতুন করে জেগে উঠেছে মুসল্লিদের তারাবির নামাজ।
ইফতারি-তারাবি শেষে প্রবাসী বাঙালিরা যখন মিলিত হন, তখন এক ভিন্ন আমেজের সৃষ্টি হয়।
টরন্টো প্রবাসী বাঙালি এ আলী তালুকদার জানান, গত দুবছরের বন্দি জীবন থেকে বেরিয়ে এবার বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বাড়িতে ইফতারি করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র রমজান মাসে সারা বিশ্বের উম্মাহর যেন হেফাজত করেন। আগের মতো রমজান পালন করার তৌফিক দান করেন- এমনটাই আমার প্রত্যাশা।
ক্যালগেরির উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী ইরফান আরিফ জানান, আমাদের এখানে ইফতারির সব ধরনের আইটেম আছে। রমজানে ক্রেতা সাধারণদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি কম্পিটিটিভ প্রাইসে। যাতে করে সবাই সুন্দরভাবে রমজানে ইফতারি করতে পারে।
বারাকা অ্যাপায়ারেলের সত্ত্বাধিকারী আরিফা রব্বানী জানান, আমরা ইফতারিতে দেশীয় শাহী হালিম, শাহী জিলাপি, বেগুনি, পেয়াজু, আলুর চপ, ছোলা এবং অন্যান্য আইটেমসহ বিভিন্ন ধরনের ফল ও শরবতের ব্যবস্থা রাখি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবাই মিলে যখন ইফতারি করি তখন শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়।