অনলাইন ডেস্ক : পরিসংখ্যান কানাডার প্রকাশিত নতুন আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে আয়ের বৈষম্য ও নিম্ন-আয়ের উপার্জনকারীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাঁচ বছর আগে সংখ্যাটা বেশি ছিলো। তাছাড়া ট্যাক্স-পরবর্তী পারিবারিক আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; বিশেষ করে একক পিতামাতার পরিবারগুলোতে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ট্যাক্স-পরবর্তী পারিবারিক আয় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ের দ্বিগুন। সেসময় এ হার ছিলো ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
পরিসংখ্যান কানাডার তথ্য অনুসারে, মহামারী চলাকালীন সময়ে ফেডারেল সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের কারণেই মাঝারি আয়ে বৃদ্ধি ঘটেছে, বিশেষকরে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য। ফেডারেল সংস্থা বলেছে, “কম আয়ের পরিবারের জন্য ট্যাক্স -পরবর্তী আয়ের বৃদ্ধি দ্রুত ছিল। নিম্ন আয়ের পরিবারের উপার্জনের জন্য কানাডা চাইল্ড বেনিফিট এবং মহামারী ত্রাণ সুবিধা সরকারের বৃহত্তর অবদান প্রতিফলিত করে,” বলছে ফেডারেল সংস্থা।

২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নারী প্রধান এক-পিতা-মাতার পরিবারে আয় ২২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত কানাডা চাইল্ড বেনিফিট (সিসিবি) এবং মহামারী চলাকালীন এর সুবিধা বর্ধিতকরণের ফল।

সব প্রদেশেই বৃদ্ধির এমন হার একই রকম ছিল না। যেখানে অন্টারিও, কুইবেক এবং বি.সি. সকলেই ট্যাক্স-পরবর্তী আয়ে দ্বিগুণ-অঙ্কের বৃদ্ধি দেখেছে, সেখানে আলবার্টা এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড উভয় প্রদেশেই যথাক্রমে ৪ দশমিক ৬ ও ১ দশমিক ৩ শতাংশ কর-পরবর্তী আয় হ্রাস পেয়েছে।

নিউফাউন্ডল্যান্ড আটলান্টিক কানাডার বাইরে ছিল, কারণ নিউ ব্রান্সউইক, নোভা স্কোটিয়া এবং পিইআই সকলেই ২০১৫-এর তুলনায় ২০২০ সালে তাদের কর-পরবর্তী আয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে। যার হার ছিলো যথাক্রমে ৯ দশমিক ২, ৮ দশমিক ৩ ও ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।

আয় বৃদ্ধির পেছনে সরকারি সুবিধা :
পরিসংখ্যান কানাডা ব্যাখ্যা করেছে যে, ২০২০ সালে মূলত কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনে মজুরির উপর তাদের প্রভাব পড়েছে। ফলে গড় আয় প্রকৃতপক্ষে হ্রাস পেয়েছে। এ সময়টাতে কানাডায় পরিবারগুলো মোটামুটিভাবে গড়ে ২০১৫ সালের মতো আয় করছে। কিন্তু সেই আয় সিসিবিও মহামারী সুবিধার দ্বারা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে একটি কানাডিয়ান পরিবার ফেডারেল বা প্রাদেশিক সরকার থেকে গড়ে মহামারীকালীন সুবিধা পেয়েছে ১০ হাজার ডলার। যেখানে মাঝারি কানাডা চাইল্ড বেনিফিট বা সিসিবির পরিমান ছিলো ৬ হাজার ডলার, সেখানে ২০১৫ সালে এর পরিমান ছিলো ৪ হাজার ডলারের কিছু বেশি।

সরকারি হস্তান্তর ও সুযোগ-সুবিধার কারণে যেসব পরিবারে শিশু রয়েছে তাদের আয়ের হারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এসব পরিবারের আয় ২০১৫ এর তুলনায় ২০২০ সালে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে একই সময়ে সন্তানহীন দম্পতিদের আয় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়াও একই সময়ের মধ্যে কম আয়ের কানাডিয়ানদের সংখ্যা ২০২০ সালে ১১ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০১৫ সালে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল। আর এসবের পেছনেও মূখ্য ভূমিকা রেখেছে মহামারী সময়ে সরকারের সহযোগিতা।

পরিসংখ্যান কানাডা বলেছে, কর-পরবর্তী আয়ের উপর মহামারী-সহায়তা প্রদানের প্রভাব ছিলো উল্লেখযোগ্য। ৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মহামারী কার্যক্রম থেকে সুবিধা পাচ্ছে।

পরিসংখ্যান কানাডা জানিয়েছে, কানাডিয়ান প্রাপ্তবয়স্কদের ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ কানাডা ইমার্জেন্সি রেসপন্স বেনিফিট-এর মতো কেন্দ্রীয় কার্যক্রম থেকে ২০২০ সালে গড়ে ৮ হাজার ডলার পেয়েছে। আরও প্রায় ৬০ শতাংশ কানাডিয়ান প্রাপ্তবয়স্করা সিসিবি বা গিএসটি ট্যাক্স ক্রেডিট-এর মতো বিদ্যমান প্রোগ্রামগুলো থেকে টপ-আপের মাধ্যমে পেমেন্ট পেয়েছেন। যেখানে ৯০ শতাংশের বেশি বয়োজোষ্ঠরা গ্যারান্টিড ইনকাম সাপ্লিমেন্টের মতো প্রোগ্রামগুলোতে টপ-আপ ব্যবস্থা দেখেছেন।

পরিসংখ্যান কানাডা বলেছে, ৪২ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক কানাডিয়ানরা স্থানীয় মহামারী ত্রাণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পেমেন্ট পেয়েছে। সূত্র : সিবিসি