অনলাইন ডেস্ক : করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে কানাডায় শিশুদের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচীতে ভাটা পড়েছে। অটোয়া প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অবহেলার অভিযোগ করেছে দরিদ্র শিশু ও পরিবারগুলো নিয়ে কাজ করা একটি জাতীয় কোয়ালিশন গ্রুপ।
কেম্পেইন ২০০০ নামের ওই গ্রুপের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডা পরিসংখ্যান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ১৭.৭% শিশু দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। কেম্পেইন ২০০০-এর পরিচালক লেইলা সারাঙ্গি বলেন, কানাডায় এই বিপুল সংখ্যক শিশু ঠিকভাবে খাবার পায় না। তাদের অভিভাবককেরা দীর্ঘ সময় কর্মক্ষেত্রে থেকেও পর্যাপ্ত উপার্জন করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বেশির ভাগ শিশুরই শীতের কাপড় নেই, থাকার একটা ভাল স্থান নেই। তাদের অনেকেই বিভিন্ন রোগে ভুগছে। অনেকে আবার মাদকাসক্তিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
গত বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১২ সালের পর বর্তমানে কানাডায় শিশুদের দারিদ্র সবচেয়ে বেশি। নিম্ন আয়ের এবং বিশেষ করে ‘সিঙ্গেল মাদার’ পরিবারের শিশুরাই বেশি দারিদ্রের শিকার। সারাঙ্গি বলেন, মূলত কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্যই শিশু দারিদ্রের অবস্থা এতটা শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকার এদিকে নজর দিচ্ছে না। সরকারের অবহেলায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের আরো কঠিন অবস্থার মোকাবেলা করতে হতে পারে।
উত্তরাঞ্চলীয় নুনাভুট টেরিটরিতে শিশু দারিদ্রের হার সবচেয়ে বেশি। সেখানে ৩৪.৪ শতাংশ শিশু দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে। অন্যদিকে প্রদেশগুলোর মধ্যে সবচেয় বেশি দারিদ্র শিশুর বসবাস মেনিটোবায় (২৮.৪%)।
সারাঙ্গি বলেন, চলতি বছরের শুরুতে ট্রুডো সরকারের ‘কানাডা চাইল্ড বেনিফিট’ নীতি শিশু দারিদ্র বিমোচনে ইতিবাচক ভ‚মিকা রেখেছিল। কিন্তু মার্চে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির পর সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। সরকারি কর্মকান্ডে ভাটা পড়ে। শিশুদের কল্যানে নতুন কোন কর্মসূচীতো নেয়া হয়ই নি, পুরানোগুলোও চালু রাখা হয়নি। তিনি বলেন, যেসব পরিবার চরম দারিদ্রের মধ্যে আছে তাদের কাছেও ‘কানাডা চাইল্ড বেনিফিটের’ সুবিধা পৌঁছেনি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালে ২৪ হাজার ২০০ শিশুকে আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে দারিদ্র মুক্ত করা হয়েছে। কোয়ালিশনের প্রতিবেদন বলছে এই হারে শিশুদের দারিদ্রমুক্ত করা হলে কানাডার সব শিশুকে দারিদ্র মুক্ত করতে আরো ৫৪ বছর লাগবে। তারা সরকারকে শিশুদের দারিদ্র বিমোচনে সব ধরনের অবহেলা পরিত্যাগ করে আর্থিক সহায়তাসহ সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের দাবি জানান। সূত্র : সিবিসি