অনলাইন ডেস্ক : গত ২১শে অক্টোবর, শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কানাডায় সব ধরনের পিস্তল ও রিভলভার জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্রের কেনা বেচা এবং হস্তান্তরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন। বিগত কয়েক বছরে সারা দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারে বেশ কিছু প্রাণহানির ঘটনার জন্য কানাডার ফেডারেল সরকার এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, কানাডায় ক্রমাগত অস্ত্র ব্যবহারে যে সব সহিংসতা ঘটে চলেছে, তা সাধারণ মানুষ থেকে দেশের নীতি নির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলেছে। অতি স¤প্রতি, বেশ কয়েকজন পুলিশ হত্যার ঘটনা এই ভাবনাকে আরও বেশি আতংকিত করে তুলেছে। দেশের এই সব খুন এবং সহিংসতা দূর করার জন্য বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক দল লিবারেল পার্টির পক্ষ থেকে গত মে মাসে কানাডার পার্লামেন্টে বিল-২১ উত্থাপন করা হয়। যার মূল বক্তব্য হচ্ছে, বিদেশ থেকে এক হাতে ব্যবহার্য অস্ত্র আমদানীতে নিষেধাজ্ঞাসহ কানাডার বাজারে এর সব ধরনের কেনা বেচা এবং হস্তান্তরে সাময়িকভাবে বন্ধকরণ।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাঁর এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘যেখানে হ্যান্ডগান জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হত্যার ঘটনা ঘটছে, সেখানে এই সহিংসতা এবং মৃত্যু বন্ধ করার জন্য এই বিল অনুমোদনের কোন বিকল্প নেই। আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’ কানাডার পাশের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত অস্ত্রের সহিংসতার তুলনায় যদিও কানাডার সহিংসতা অনেক কম, তবুও দেশের সাধারণ জনগণ, সচেতন মহল এবং সরকারকে এই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ১৫০০ মডেল এর ঝুকিপূর্ণ অস্ত্র এবং এআর-১৫ রাইফেল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বিল-২১ সম্পর্কে অনেকেই খুবই ইতিবাচক মন্তব্য করলেও আলবার্টা প্রভিন্স এর সরকার এর সমালোচনা করে উল্লেখ করেছে, এই বিল পাশ হলে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অটোয়া থেকে জারীকৃত পূর্বের বিল এর সাথে এটা সাংঘর্ষিক হতে পারে।
কানাডার পাবলিক সেফটি মন্ত্রী মারকো মেন্ডিসিনো বলেন, প্রধানমত্রী অস্ত্রের কেনা বেচার উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন, এটা এই মুহূর্তে খুব বেশী প্রয়োজনীয়। এর ফলে অস্ত্র আর সুলভ অবস্থায় থাকবে না এবং এই সুলভ অবস্থায় না থাকার ফলে, এর অপব্যবহার হবে না। তিনি এই বিলটিকে কানাডার সমাজে সহিংসতা দূর করার জন্য খুবই কার্যকরী এক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর এমন নিষেধাজ্ঞা জারীর ফলে সমজের শান্তিপ্রিয় অনেক মানুষ কানাডার সমাজে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। কারণ, ইদানিং প্রতিনিয়ত কানাডা বিশেষ করে টরন্টোর মত জনবহুল শহরের বিভিন্ন নেবরহূডে গুলির শব্দ শোনা যায় বা গুলিবিদ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে থাকে। এক জরীপে দেখা গেছে, যারা হ্যান্ডগান জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সহিংসতা সৃষ্টি করছে, তাদের সিংহভাগের বয়স হচ্ছে ত্রিশ বছরের নীচে। হাতের কাছে অস্ত্র থাকার ফলে তারা অধিকাংশ সময়ে আবেগপ্রবণ হয়ে মানুষ হত্যার মত কাজ করে ফেলে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, অস্ত্র সবার কাছে সুলভ না হলে কানাডার সমাজে সহিংসতা অনেক কমে যাবে।