শাহনুর চৌধুরী : কানাডায় মূল্যস্ফীতি গত ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল রেকর্ড ৪.৪%। গৃহায়ন, যাতায়াত ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবন-যাত্রার ব্যয়ের এই রেকর্ড বৃদ্ধি বলে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন।
স্ট্যাটিসটিকস কানাডা গত বুধবার জানিয়েছে, যাতায়াত খাতে মূল্য সূচক বেড়েছে ৯%, যার মূল কারণ গ্যাসোলিনের (পেট্রল) অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি। এই অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানিটির মূল্য গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। এর সাথে নতুন গাড়ির মূল্যবৃদ্ধি ও যাতায়াত খরচের সূচক ঊর্ধ্বমুখী করেছে। পরিসংখ্যান এজেন্সিগুলোর হিসেব অনুযায়ী এ বছর নতুন গাড়ির মূল্য ৭.২% বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ট্যাটিসটিকস কানাডার মতে সেমি কন্ডাক্টর চিপের স্বল্পতা, খুচরা যন্ত্রাংশের সীমাবদ্ধতা ও মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে যাতায়াত খরচের উপর চাপ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে গৃহায়ন ও আবাসন খরচ বেড়েছে ৪.৮% এবং খাদ্য ও পানীয় খরচ বেড়েছে ৩.৯%। সব ধরনের খাবারেরই দাম বাড়তি। তবে গোশতের দাম বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৫ সালের পর এবার এই পণ্যটির দাম রেকর্ড ৯.৫ শতাংশ বেড়েছে।
গত মঙ্গলবার টরন্টোতে মার্টিন রোলিন নামে একজন ক্রেতা সিবিসিকে জানান, গোশতের দাম আমার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আমি এই পণ্যটি কেনা বাদ দিয়েছি। তিনি বলেন, মুরগির দাম বেড়েছে ১০%, গরুর গোশতের বেড়েছে ১৩%, আর শুকরের গোশতের দাম বেড়েছে ৯%। ক্রেতাদের ঝুড়িতে এখন সবচেয়ে সস্তা যে পন্যটি ঠাঁই পাচ্ছে তা হলো সবজি। টাটকা সবজির দাম গত বছরের তুলনায় এবার ৩.২% কমেছে।
আবাসন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির মূল কারণ, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি। কানাডায় গতমাসে বাড়ির দাম বেড়েছে ১৮.৩%। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাড়ির গড় দাম ৯ লাখ ৬১ হাজার ডলার থাকলেও এ বছরের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ডলারের বেশি। এর মধ্যে কন্ডো অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম ৭ লাখ সাড়ে ৮ হাজার ডলার, টাউন হাউজের দাম ৯ লাখ ৯ হাজার ডলার এবং সেমি এটাচড বাড়ির দাম ১১ লাখ ১৫ হাজার ডলার। এছাড়া ডিটাচড বাড়ির দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ২৬ হাজার ডলারে। টরন্টো রিজিওনাল রিয়েল এস্টেট বোর্ড (বি আর আর ইবি) জানিয়েছে, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের এই মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, কানাডায় জীবন-যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির দুর্ভোগ দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। মহামারির পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপি এই মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়ায় তারা এই আশঙ্কা করছেন। সূত্র : সিবিসি






