অনলাইন ডেস্ক : যথাযথ সরকারি সাহায্য ও সহযোগিতা না পাওয়ায় কানাডা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে ভ্যাকসিন উৎপাদনকারি কোম্পানি প্রোভিডেন্স থেরাপেটিকস। প্রতিষ্ঠিানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্র্যাড সোরেনসন জানিয়েছেন, তারা কানাডার বাইরে ব্যবসা করাই ভাল হবে বলে মনে করছেন। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ব্যাপক চাহিদা সত্তে¡ও ফেডারেল সরকার তাদেরকে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত সহায়তা না দেয়ায় তারা এমনটা মনে করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সঠিক সময়ে সরকারের কাছ থেকে সঠিক সহায়তা না পাওয়ায় হতাশা ব্যাক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত ভ্যাকসিন খুবই মানসম্মত। আমরা মানবদেহে আমাদের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগও করেছি। ফলাফল খুবই সন্তোষজনক। এছাড়া আমাদের কারিগরি ও লোকবল দিয়ে আমরা এবছরের শেষ নাগাদ ৫০ মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদন করতে পারব বলে সরকারকে জানিয়েছিলাম। অ্যালবার্টার মুখ্যমন্ত্রী জেসন কেনি প্রোভিডেন্সের উদ্যোগের প্রশংসা করেছিলেন এবং মেনিটোবা আমাদের কাছ থেকে ২০ লাখ ডোজ টিকা কিনবে বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু ফেডারেল সরকারের অসহযোগিতায় এসব কিছুই এখন অতীত। আমরা কানাডায় আর ব্যবসা করছি না।’

ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি প্রোভিডেন্স থেরাপেটিকসের এই প্রধান নির্বাহী আরো বলেন, তারা তাদের কার্যক্রম কানাডা থেকে সরিয়ে সাউদার্ন হ্যাম্পশায়ারে নেয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে হয়তো আমরা আমাদের কার্যক্রম ভালভাবেই চালাতে পারব। সেখানে হয়তো এত সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে না।

সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কানাডা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আমাকে কতটা কষ্ট দিচ্ছে তা বলে বোঝাতে পারব না। কিন্তু এছাড়া আমাদের অন্য কোন উপায় ছিল না। আমি আশা করছি কানাডার বাইরে সবকিছু আরো ভাল হবে।
স্থানান্তর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। মেনিটোবার অর্ডারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি চূড়ান্ত হলে ক্যালগিরিতে তাদের অংশিদারি প্রতিষ্ঠান তা উৎপাদন ও সরবরাহ করবে।

সরকারের অসহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর কাছে ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে ১৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। সহায়তা দূরে থাক আজ পর্যন্ত আমাদের আবেদন পত্রটি পাওয়ার কথাই তিনি স্বীকার করেন নি। ব্রাড সোরেনসন আরো বলেন, সরকারের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছিলাম। সরকার তা এগিয়ে না নিয়ে বিপরীত দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরকারের বিজ্ঞান ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, ভ্যাকসিনের অর্থায়নের বিষয়টি একদল বিশেষজ্ঞ দেখাশোনা করে। তাদের অণুমোদন ছাড়া এখাতে অর্থ বরাদ্দ সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রোভিসেন্সকে গত গ্রীষ্মে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল এবং ৪.২ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউট।

প্রসঙ্গত কানাডায় যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন উৎপাদন করে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে প্রোভিডেন্স। সূত্র : রেডিও কানাডা