সম্প্রতি প্রকাশিত কানাডায় থাকা বাঙালিদের গ্রন্থ নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পনেরো জন লেখক এবং গ্রন্থসমূহের উপস্থাপকদের সাথে অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. দিলীপ চক্রবর্তী, টরন্টোর প্রাক্তন পোয়েট লরিয়েট বিশিষ্ট কবি এ. এফ. মরিৎজ, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাস এবং এনআরবি টেলিভিশনের সিইও ও সাপ্তাহিক বাংলামেইলের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিন্টু, এবং অনুষ্ঠানের পরিচালক সামিনা চৌধুরী। ছবি কাজী সারওয়ার

অনলাইন ডেস্ক : গত ২ জুলাই কানাডায় থাকা পনেরো বাঙালি কবি-লেখকের স¤প্রতি প্রকাশিত নতুন বই নিয়ে অভিনব এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় টরন্টোর বাঙালি অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ এলাকার ৯ ডজ রোডের লিজিয়ন হলে। কমিউনিটির জ্যেষ্ঠ পণ্ডিতজন ড. দিলীপ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এই আয়োজনে বাঙালি লেখকদের অভিনন্দিত করেন টরন্টোর প্রাক্তন পোয়েট লরিয়েট বিশিষ্ট কবি এ. এফ. মরিৎজ। এনআরবি টেলিভিশন এবং সাপ্তাহিক বাংলামেইলের উদ্যোগে ব্যারিস্টার ওমর আল হাসানের পৃষ্ঠপোশকতায় এই আয়োজনে আরও কথা বলেন বিশিষ্ট লেখক, গবেষক এবং এই আয়োজনের প্রধান পরিকল্পনাকারী সুব্রত কুমার দাস এবং এনআরবি টেলিভিশনের সিইও ও সাপ্তাহিক বাংলামেইলের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিন্টু।

সাহিত্যানুরাগী বাচিকশিল্পী সামিনা চৌধুরীর পরিচালনায় এই আয়োজনে যে কবি-লেখকদের নতুন বই নিয়ে উদযাপন করা হয় তাঁরা হলেন- অতনু দাশ গুপ্ত, আকবর হোসেন, এলিনা মিতা, জসিম মল্লিক, জাকারিয়া মুহম্মদ ময়ীন উদ্দিন, তাসমিনা খান, দেবাঞ্জনা মুখার্জী ভৌমিক, ননীগোপাল দেবনাথ, বাদল ঘোষ, মামুনুর রশীদ, রোকসানা পারভীন শিমুল, শহীদ খোন্দকার, সুপর্ণা মজুমদার, সূচনা দাস, এবং স্বপন বিশ্বাস। হ্যালিফ্যাক্স থেকে গদ্যকার অতনু দাসগুপ্ত এবং অটোয়া থেকে অনুবাদক সুপর্ণা মজুমদারের আগমন এই আয়োজনকে যেন আলাদা একটি মাত্রা দান করেছিল। দ্বিতীয় প্রজন্মের লেখক সূচনার ইংরেজি বইটিও ছিল অনেকের মনোযোগের কেন্দ্রে।

হলভর্তি দর্শকের এই অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ও পরিচালনায় ছিলেন সামিনা চৌধুরী। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত তিন মাস ধরে অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত পনেরো বই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা লেখেন সামিনা। সেগুলো সাপ্তাহিক বাংলা মেইল এবং বাংলা কাগজে প্রকাশিত হয়। সামিনার এই উদ্যোগ সুধী সমাজে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

টরন্টোর বাঙালি সমাজের পণ্ডিতজন বলে খ্যাত লেখক ড. দিলীপ চক্রবর্তী কানাডায় থাকা বাঙালিদের সাহিত্যচর্চারকে প্রসারিত করতে গৃহিত এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেন। বিপুল সংখ্যক গ্রন্থের প্রকাশে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। নতুন বই এবং লেখকদের নিয়ে এই আয়োজনকে অভুতপূর্ব বলে উল্লেখ করেন ইংরেজি সাহিত্যের প্রবীন এই অধ্যাপক।

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন কবি এ. এফ. মরিৎজ। টরন্টো মেগাসিটির সাহিত্যাঙ্গনে বাঙালিদের সরব উপস্থিতিতে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ করা যেতে পারে এর আগেও এনআরবি টেলিভিশনের লাইভ প্রোগ্রামে কানাডায় থাকা বাঙালিদের নতুন বই নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন বহুল পরিচিত সাহিত্য উদ্যোক্তা সুব্রত কুমার দাস। কোভিডের পর এবার সেই আয়োজন হল সকলের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে। স¤প্রতি প্রকাশিত সুব্রত কুমার দাসের আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘উৎস থেকে পরবাস’-এর সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ছিলেন কবি ও গদ্যকার দেবাঞ্জনা মুখার্জী ভৌমিক।

স্বাগত বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম মিন্টু কানাডায় বাংলা ভাষা চর্চা এবং বাংলা ভাষায় পত্রিকা প্রকাশে তাঁর দীর্ঘ যুদ্ধের কথা তুলে ধরেন। তিনি দার্ঢ্য কণ্ঠে ঘোষণা করেন কানাডায় থাকা বাঙালি লেখকদের পাশে তিনি ও তাঁর পত্রিকা আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। দীর্ঘ পরিকল্পনার এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে সহযোগিতায় ছিলেন ব্যারিস্টার ওমর আল হাসান।

নতুন বই নিয়ে উপস্থাপনাকারী লেখক ও শিল্পীরা হলেন অনুপ সেনগুপ্ত , আবু সাঈদ নাঈম, করবী মৈত্র, চয়ন দাস, জান্নাতুল নাইম, জোয়াসিম ভিক্টর গোমেজ, ডি কস্তা লিনা এগ্নেস, নাসিমা আকতার মিতা, ফ্লোরা নাসরিন ইভা, মনীষ পাল, রণি মজুমদার, রাজীব চন্দ্র, রুমা মোদক, রেশমা মজুমদার শম্পা এবং সুজিত কুসুম পাল।

উল্লেখ করা যেতে পারে এনআরবি টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারে উপস্থাপনায় ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহবুব ওসমানী।

অনুষ্ঠানে এ. এফ. মরিৎজের একটি কবিতার বাংলা অনুবাদ সবার সামনে পাঠ করেন কবিতাটির অনুবাদক লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী মম কাজী।