অনলাইন ডেস্ক : কুইবেকের চেলসিয়া এলিমেন্টারি স্কুলের একজন শিক্ষিকাকে বলা হয়েছে তিনি আর ক্লাসে পড়াতে পারবেন না। হিজাব পড়ে স্কুলে আসায় তাকে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুইবেকের ‘বিল-২১’ আইন অনুযায়ী ধর্মীয় প্রতিক বহনকারী পোশাক পড়ে কেউ কর্মক্ষেত্রে আসতে পারবে না। ফাতেমা আনোয়ারি নামের ওই শিক্ষিকা গত কয়েক মাস ধরে ওয়েস্টার্ন কইবেক স্কুল বোর্ডের অধিনস্ত চেলসিয়া প্রাইমারি স্কুলে বিকল্প শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু গত মাসে স্কুলের প্রিন্সিপাল তাকে ডেকে নিয়ে বলেন, তিনি আর ক্লাসরুমে যেতে পারবেন না, তাকে শিক্ষকতার পরিবর্তে স্কুলের অন্য কোন কাজ করতে হবে। কেননা তিনি হিজাব পরিধান করেন, কুইবেকের আইনে যা নিষিদ্ধ। স্কুলের প্রধান তাকে আরো জানান, স্কুলের বোর্ডের মানবসম্পদ বিভাগের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফাতেমা বলেন, ‘সত্যি বলতে এটি আমার জন্য বিরাট এক ধাক্কা। আমি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি তিনি (প্রিন্সিপাল) কী বলছেন। সত্যিই আমি কিছু সময়ের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম।
প্রসঙ্গত, কুইবেকের নতুন আইন, যা বিল-২১ নামে পরিচিত, তা অনুযায়ী শিক্ষকসহ কিছু বেসামরিক কর্মচারী ধর্মীয় প্রতীক পরিধান করে কর্মক্ষেত্রে আসতে পারেন না। আইনটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি রিট হয়েছে। সেগুলোর শুনানি চলছে। ইংলিশ স্কুল বোর্ড আপাতত আইনটি প্রয়োগ না করার আবেদন করেছিল। কিন্তু কুইবেক কোর্ট অব আপিল তা প্রত্যাখান করে বলেছে যে, রিটগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিল-২১ বলবত থাকবে।
ফাতেমা আনোয়ারি বলেন, হিজাব আমার পরিচয়ের অংশ। আমি একজন মুসলিম আমার পরিচয় প্রকাশের অধিকার আমার আছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে একটি বিতর্কিত আইনের সাথে ধর্মীয় প্রতীককে জড়ানো হলো।
এদিকে ফাতেমাকে শ্রেণিকক্ষে নিষিদ্ধের প্রতিবাদ করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তারা শিক্ষক হিসাবে ফাতেমার প্রশংসা করে তাকে অবিলম্বে ক্লাসে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। অনেক অভিভাবক বিল-২১-এর সমালোচনা করে বলেন, ফাতেমার মত একজন দক্ষ শিক্ষকের অপসারণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ নয় বিতর্কীত আইনটিই দায়ী। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকও মত ব্যক্ত করেন। সূত্র : সিবিসি