সুহেল ইবনে ইসহাক, টরন্টো, কানাডা: কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অন্টারিও, কুইবেক এবং আলবার্টায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে যা জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি প্রদেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
কানাডার বৃহত্তম প্রদেশ অন্টারিওতে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। এই কড়াকড়ি অনেকেই সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না। এজন্য ক্ষমাও চেয়েছেন অন্টারিও প্রিমিয়ার ডাগফোর্ড।
ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কোভিড পজিটিভ হওয়ায় মায়ের বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন তিনি। কোভিডে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যাটা উল্লেখ করতে গিয়ে পেছন দিকে ঘুরে চোখ মুছে নেন ডাগ ফোর্ড।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি বুঝতে পারছি, আমাদের সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নাগরিকদের ক্ষুব্ধ করেছে, আহত করেছে। আমি শুধু বলতে চাই, আমরা একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি, সেটা ভুল হয়েছে। আমরা ভুল করেছি। সেজন্য ক্ষমা চাই।’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছিল লকডাউনের। কিন্তু মানুষকে ঘরে রাখার জন্য পুলিশকে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ ছিলো না। প্রভিন্সিয়াল কনজারভেটিভ সরকার পুলিশকে বাড়তি ক্ষমতা দিয়েছিলেন- বাড়ির বাইরে আসা যে কোনো গাড়ি বা ব্যক্তিকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রয়োজনে জরিমানা করার।

শহরের খেলার মাঠে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সুপারিশও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ছিল না। কিন্তু প্রভিন্সিয়াল সরকার শহরের সব খেলার মাঠ, পার্কে বাচ্চাদের খেলনায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। ফলে সরকারকে সমালোচনার মুখে পরতে হয়। অবশ্য প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অনেক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তারপরও রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের তুমুল সমালোচনার মুখে প্রিমিয়ার ডাগফোর্ড নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চান।

অন্যদিকে ফেডারেল সরকার ভ্যাকসিন বিতরণে অন্টারিওকে সহায়তার প্রস্তাব দিলেও ডাগফোর্ড তা ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং আরো কঠোর কোভিড বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। এরই মধ্যে স্টে-অ্যাট-হোম আদেশের মেয়াদ আরো দুই সপ্তাহের জন্য বাড়িয়েছেন তিনি।
স¤প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নতুন ভ্যারিয়েন্ট ও ভ্যাকসিনের মধ্যকার লড়াইয়ে আমরা হেরে যাচ্ছি। আমরা অনেক পেছনে পড়ে গেছি। শক্ত মনোবল নিয়ে থাকলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”

নতুন বিধিনিষেধে আন্তঃপ্রদেশ যাতায়াত, উন্মুক্ত স্থানে জমায়েত এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ও সব অনাবশ্যক নির্মাণকাজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে বাধ্য করতে পুলিশকেও সাময়িকভাবে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।