অনলাইন ডেস্ক : গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে আবারও ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারালেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার (৩ জুন) গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, ত্রাণ নিতে আসা লোকদের মধ্যে কয়েকজন চলাচলের নির্ধারিত পথ থেকে সরে গেলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। তবে ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন বলে জানানো হয়েছে। এর মাত্র একদিন আগেই, একই ধরনের ঘটনায় আরও তিনজন নিহত হন। আর রোববার (১ জুন) নিহত হয়েছিলেন কমপক্ষে ৩১ জন ফিলিস্তিনি।
এই ঘটনার কিছু ঘণ্টা আগেই ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজার উত্তরে লড়াইয়ে তাদের তিনজন সেনা নিহত হয়েছেন।

হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে গাজায় ব্যাপক সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, যার ফলে অঞ্চলটির বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত বিতর্কিত সংগঠন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাইরে গিয়ে। জিএইচএফ দাবি করেছে, তারা আজ সকালে ২১টি ট্রাকের মাধ্যমে নিরাপদে খাবার বিতরণ করেছে।

তবে জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলো এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছে, এটিকে আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা সরাসরি ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি। বরং কিছু ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তি নির্ধারিত পথ থেকে সরে যাওয়ায় তাদের উদ্দেশে প্রথমে সতর্কতামূলক এবং পরে প্রাণঘাতী গুলি চালানো হয়।

এই ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা মানুষের প্রাণহানি অত্যন্ত মর্মান্তিক। তিনি ঘটনার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সংঘাত দিন দিন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, যেখানে ত্রাণ নিতে গিয়েও নিরাপদ নয় ফিলিস্তিনিদের জীবন।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স