অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জনই শিশু। তীব্র পানি সংকটের মুখে এসব শিশু ও স্থানীয়রা পানি আনতে এসেছিলেন, তখনই তারা প্রাণ হারান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই মর্মান্তিক ঘটনার তথ্য স্থানীয় বাসিন্দা ও চিকিৎসা সূত্রের বরাতে জানিয়েছে।
রোববার (১৩ জুলাই) দিনভর গাজার বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯২ জন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই মারা গেছেন ৫২ জন। ইসরায়েল বর্তমানে পুরো গাজার জনগোষ্ঠীকে জোর করে দক্ষিণাঞ্চলে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সামরিক অভিযান আরও জোরদার করছে। এই পরিস্থিতিতেই ঘটেছে শিশুদের ওপর এই ভয়াবহ হামলা।
মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। এদের মধ্যে ৬ জনই শিশু। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, শিশুরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল পানি সংগ্রহের জন্য। প্রচণ্ড তৃষ্ণার মুখে তারা বাধ্য হয়েছিল ঝুঁকি নিয়েই সেই পানিকেন্দ্রে আসতে। ঠিক তখনই ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে হামলা চালায়।
আল জাজিরা–র গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, গাজার অধিকাংশ পানির উৎস এখন বন্ধ বা দূষিত। জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় পানিশোধন কেন্দ্রগুলো অচল হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেক মানুষ দূষিত উৎস থেকেও পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি ত্রাণকেন্দ্রগুলোতেও পর্যাপ্ত পানি নেই।
এই হামলার আগের দিন, শনিবার (১২ জুলাই), গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলের বোমা বর্ষণে আরও অন্তত ১১০ জন নিহত হন। এর মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন রাফাহ শহরে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’–এর একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে, যেখানে তাঁরা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে এই জিএইচএফ গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। কিন্তু এর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই সংস্থার আশপাশে হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৮০০ জন ফিলিস্তিনি। মানবিক সহায়তার স্থানেও ইসরায়েলি আগ্রাসন থেমে নেই।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলা ও অবরোধে গাজায় অন্তত ৬৭ জন শিশু শুধুমাত্র ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে। প্রতিদিন অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে নতুন নতুন শিশু মৃত্যুর শিকার হচ্ছে।
তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা






