অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ফের গণহত্যা শুরু করতে অজুহাত খুঁজছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এমনটাই অভিযোগ করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।
আঙ্কারায় এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগুস সাখনার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান বলেন, সারা বিশ্বের সামনেই এই অন্যায় চলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এখনই ইসরায়েলের ওপর কঠোরভাবে চাপ বাড়ানো।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান আরও বলেন, “টেকসই শান্তির আশাকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের অবশ্যই যুদ্ধবিরতি মেনে চলা উচিত।”
অন্যদিকে এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাখনা বলেন, “গাজার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ”। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইসরায়েলের ওপর এখন শক্ত চাপ প্রয়োগ করা জরুরি।”
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে সাখনা জানান, এস্তোনিয়া সবসময় দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে সমর্থন করে আসছে। তিনি বলেন, তালিন জাতিসংঘের ফিলিস্তিন-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং নিউইয়র্ক ঘোষণার পক্ষভুক্ত দেশ।
সাখনা জানান, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) ও অন্যান্য সংগঠনের মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠাচ্ছে এস্তোনিয়া। তার মতে, টেকসই শান্তি প্রক্রিয়া বজায় রাখতে তুরস্কের পাশাপাশি অন্য দেশগুলোরও ইসরায়েলের ওপর চাপ বজায় রাখা প্রয়োজন।
ফিদান বলেন, শারম আল-শেখ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে। যুদ্ধবিরতিকে স্থায়ী রূপ দিতে আঙ্কারা এখন সংশ্লিষ্ট সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে কাজ করছে।
তিনি বলেন, “শারম আল-শেখে স্বাক্ষর করা ছিল সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতীক। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও অন্যান্য গ্যারান্টর রাষ্ট্রের স্বাক্ষর সেই ঘোষণাকে ঐতিহাসিক বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”
ফিদান জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখতে কাজ চলছে, তবে ইসরায়েল এখনো পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা ঢুকতে দিচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, এই বিষয়ে ইসরায়েলকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া।
তুরস্কের মানবিক সহায়তার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এএফএডি ও তুর্কি রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারা রাফাহ সীমান্তে কাজ করছেন। ৯০০ টন সহায়তাসামগ্রী বহনকারী আমাদের জাহাজ ১৭ অক্টোবর মিসরের আল-আরিশ বন্দরে পৌঁছেছে। শিগগিরই পরবর্তী সহায়তা মিশনের প্রস্তুতিও শেষ হবে।”
তিনি আরও জানান, ফিলিস্তিনি আহতদের চিকিৎসার জন্য তুরস্কে আনার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাজার পুনর্গঠনে আমরা সর্বশক্তি নিয়োজিত রাখব। ধৈর্য আর ঐক্যের মাধ্যমে গাজা আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।
