অনলাইন ডেস্ক : ঘোষণা অনুযায়ী বিপন্ন গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলতে শুরু করেছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির সংবাদ অনুযায়ী, শনিবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বিমান থেকে গাজা শরণার্থী শিবির অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী ফেলতে শুরু করেছে।এদিন দেশটির তিনটি সামরিক বিমানে ৩০ হাজারের বেশি ‘তৈরী খাবারের’ প্যাকেট ফেলা হয় বলে জানায় বিবিসি।

আমেরিকার সঙ্গে এই আকাশ থেকে এই ত্রাণ ফেলার কর্মসূচিতে সহায়তা করছে জর্ডানের বিমানবাহিনী।আগামী কয়েক দিনে আকাশ থেকে এই প্রাণ থাকার কার্যক্রম চালু রাখবে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সদর দপ্তর থেকে শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়,সি-১৩০ পণ্যবাহিনী বিমান থেকে গাজার সীমানরেখা ধরে ৩৮ হাজারের বেশি খাবার প্যাকেট ফেলা হয়েছে।এতে উল্লেখ করা হয়,দেশটির এই ত্রাণ সামগ্রী ফেলার কার্যক্রম গাজায় দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের কাছে অপ্রতুল আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য বর্ধিতকরণ প্রচেষ্টার অংশ। এর আগে বিপর্যস্ত গাজাবাসীর উদ্দেশ্য একই উপায়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে যুক্তরাজ্য,জর্ডান,ফ্রান্স ও মিশর।

যদিও গাজায় সেবা প্রদানকারী আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো আকাশ থেকে ত্রাণ ছোঁড়ার এই পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।এর বদলে অধিক ও সমভাবে সংকটে থাকা মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ট্রাকে করে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর কার্যক্রমে জোর দিতে বলেছে এসব সংস্থা।

প্রথম থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে জোর সমর্থন দিয়ে আসছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন অস্ত্র, অর্থ ও নজিরবিহীন কূটনৈতিক সমর্থনে গত কয়েক মাস ধরে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ,বাস্তচ্যুত হয়েছে ২০ লক্ষ গাজাবাসী।

আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গ করে ইসরায়েলের ধারবাহিকভাবে চালানো এসব হামলায় তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে বাস্তব গাজাবাসীর জীবনে।

তবে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বর্বরতা যেন আগের সব সীমাকে ছাড়িয়ে যায়। এদিন গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা অসহায় মানুষের লক্ষ্য করে নির্বিচার গুলি চালায় ইসারেয়েলি সেনা সদস্যরা।যাতে প্রাণ হারান ১১২ জন।এতদিন নীরব থাকা ইউরোপের দেশগুলো এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন।নিরপরাধ মানুষের উপর এ ধরণের আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য বলে ফ্রান্স,যুক্তরাজ্যশ আরও কয়েকটি দেশ ইসরায়েলের কাছে এর নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু ব্যাখ্যা ও চায়।

এই ঘটনায় বরাবরের মতো ইসরায়েলের সরাসরি সমালোচনা না করলেও আকারে-ইঙ্গিতে নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সেদিনই দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা কার্যক্রম চালানোর কথা বলেন।