অনলাইন ডেস্ক : গ্যাসের দাম প্রতি লিটারে ২ ডলারের কাছাকাছি চলে যাওয়ায়, যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য গাড়ি চালান তারা এর কষ্ট তীব্রভাবে অনুভব করছেন। তারা বলছে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এখন তাদের উপার্জন একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে।
ট্যাক্সি ড্রাইভার এবং ওইসব চালক যারা রাইড-হেইলিং বা ফুড ডেলিভারি অ্যাপের জন্য কাজ করে তাদের গ্যাসের মূল্য নিজের পকেট থেকে ব্য্য করতে হয়; এ ব্যয়টি গত এক বছরে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।

কানাডা পরিসংখ্যান অনুসারে, গত জুনে টরন্টোতে গ্যাসের গড় খুচরা মূল্য ছিলো প্রতি লিটার ১ দশমিক ৩৩ ডলার।
গত বুধবার টরন্টোর ইউনিয়ন স্টেশনের বাইরে ট্যাক্সি ড্রাইভার আলী পৌরহাশেম বলেন, “গ্যাসের মূল্য বাড়ায় আমাদের খরচ প্রায় শতভাগের বেশি বেড়েছে।”
একটি ট্যাক্সি কোম্পানি সিবিসি নিউজকে নিশ্চিত করেছে যে, ২০১৯ সালের তুলনায় রাস্তায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম গাড়ি রয়েছে।
তারা এও বলেছে যে, এর পেছনে অন্যান্য কারন থাকতে পারে, তবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে চালকরা এ কাজে ফিরছেন না।

রাইড-হেইলিং অ্যাপের ড্রাইভার এবং ডেলিভারি কর্মীরা বলছেন যে, যদিও উবার-এর মতো কোম্পানিগুলো চালকদের প্রতিটি ট্রিপের জন্য ৩৫ বা ৫০ পয়সা ফুয়েল ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে, তা সত্তে¡ও এটি তাদের ক্রমবর্ধমান খরচ মেটাতে তেমন কোন ভূমিকা রাখবে না এবং কেউ কেউ এখন কাজ ছেড়ে দেয়ার কথা বিবেচনা করছে।

চালিয়ে যাওয়া কঠিন :
করোনা মহামারী ট্যাক্সি শিল্পে আঘাত হানা সত্বেও কনসার্ট, খেলাধুলা এবং অন্যান্য শহরের ইভেন্টগুলি আবার শুরু হওয়ার সাথে সাথে ব্যবসা আবার ফিরে এসেছে। তবে সমস্যা হল চালকরা এখন গ্যাসের জন্য প্রিমিয়াম পরিশোধ করছেন।

“আমাদের এটির জন্য অর্থ প্রদান করতে হবে কারণ আমাদের ব্যবসার জন্য আমাদের গ্যাসের প্রয়োজন,” বলছিলেন, ২৬ বছর ধরে ট্যাক্সি চালনো পৌরহাশেম। শহর থেকে সাহায্য পেতে চান বলেও জানান তিনি? ড্রাইভার মোহাম্মদ ভূঁইয়ার গাড়ির ট্যাঙ্কটি ভরতে আগে খরচ হতো ৬০ ডলার, এখন এ ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে ১২০ ডলার হয়েছে। মোহাম্মদ ভূঁইয়া গত কয়েক বছরে তার সহকর্মী চালকদের এ ব্যবসা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে দেখেছেন। “তাদের অধিকাংশই – তারা ইতিমধ্যে চলে গেছে,” বলেন ভূঁইয়া।
বেক ট্যাক্সি অপারেশন ম্যানেজার ক্রিস্টিন হাবার্ড বলেন, চালকরা মহামারীর আঘাত থেকে তাদের অবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন, তবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাবার্ড বলেন, প্রাক-মহামারীতে তাদের রাস্তায় প্রায় ১৮০০ গাড়ি ছিল। এই সংখ্যা এখন ১১০০ এর কাছাকাছি। তিনি বিশ্বাস করেন যে পতনটি বিভিন্ন কারণে হয়েছে — উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্যাক্সি ড্রাইভারদের জন্য বীমা পাওয়া কতটা কঠিন এবং এটি কতটা ব্যয়বহুল। কিন্তু গ্যাসের দাম বৃদ্ধি আরেকটি প্রতিবন্ধক।

ড্রাইভার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বাধীন পরিচালনার পরিবর্তে উবারের মতো কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মচারী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।