অনলাইন ডেস্ক : জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের না-ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আট বছর পূর্ণ হলো রোববার। ২০১২ সালের এই দিনে নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মরদেহ দেশে আনার পর তাকে গাজীপুরে নুহাশপল্লীর লিচুতলায় সমাহিত করা হয়। অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে হুমায়ূনতীর্থ নুহাশপল্লীতে এতিম ও অনাথ শিশুদের খাওয়ানো হবে হুমায়ূনের পছন্দের খাবার। নুহাশপল্লীর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, পিরুজালী ও এর আশপাশের এতিমখানার অন্তত সাড়ে তিনশ’ এতিমসহ সহস্রাধিক মুসল্লিকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের বন্ধুবান্ধব, স্বজনরাও থাকবেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় উপস্থিত থাকতে পারছেন না হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং তার দুই ছেলে নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন।

উপন্যাসে নিজের প্রতিভার বিস্তার ঘটালেও হুমায়ূন আহমেদের শুরু কবিতা দিয়ে। এরপর নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন প্রতিভা ও সাফল্যের স্বাক্ষর। তিনি বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির জনকও বটে। হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

তার ডাকনাম কাজল। বাবা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। খ্যাতিমান লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্য লেখক।

১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই হুমায়ূন আহমেদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প, কবি, লীলাবতী, গৌরীপুর জংশন, এইসব দিনরাত্রি। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। টিভি নাট্যকার হিসেবেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। আশির দশকের মাঝামাঝি তার প্রথম টিভি নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’ তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

১৯৭৩ সালে গুলতেকিন খানকে বিয়ে করেন হুমায়ূন আহমেদ। এই দম্পতির চার ছেলেমেয়ে। তিন মেয়ে নোভা, শীলা ও বিপাশা আহমেদ এবং ছেলে নুহাশ হুমায়ূন। দীর্ঘ ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৩ সালে তিনি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই ছেলে নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন।