Home সাহিত্য চাবতী

চাবতী

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;&NewLine;<p><strong>আকতার হোসেন<&sol;strong><br> ওর হাতে এক কাপ চা না খেলে যেন সকালটাই শুরু হতে চায় না। প্রতিদিন তাই ধোঁয়া ওড়ানো গরম চা নিয়ে সকলের ঘুম ভাঙ্গায় সে। নিজে কখনো চা খায়নি। জানেও না চায়ের স্বাদ কেমন তবুও তার হাতের এক কাপ চায়ের জন্য পাগল সংসারের লোক। <br> চাবতী যদি চা বানাতে ভুলে যায় তাহলে এই বাড়ির লোকগুলো না খেয়ে মরে যাবে। <br> চাবতী গতরাতে তার মাকে স্বপ্নে দেখেছিল। মায়ের কথা ভাবতে গিয়ে অনেকক্ষণ আনমনা হয়ে বসে ছিল চুলার পাশে। ঠিক তখনই চা পুড়ে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল। <br> দুধ পানি আর চা এই তিন উপকরণ একসাথে মিশিয়ে সে জ্বাল দেয়। গাছ থেকে একটা লেবুর পাতা ছিঁড়ে এনে টগবগে পানিতে ছেড়ে দিয়ে অপেক্ষা করে চায়ের কাক্সিক্ষত রঙটি পেতে। সব শেষে দু চারটা গুয়ামুড়ি মিশিয়ে ছেঁকে নেয় চা। গুয়ামুরিকে এ বাড়িতে বলা হয় মৌরি। এইতো তার চায়ের বাহাদুরি। <br> তা দু’একদিন তো স্বাদ ভিন্ন হতেও পারে। দুধ পুড়ে গন্ধ বেড়িয়েছে বলে দিলেই হয়। কিন্তু সে মনে মনে ভবতে থাকে চা তো দুনিয়ার সবাই বানায়। চা বানিয়ে ক’জনের নাম হয়েছে চাবতী&excl; আমি এই নামের বদনাম হতে দিব না। <br> চাবতী জানে মাছ পচে গেলে তাতে লেবু পাতা দিতে হয়। সে ধরেই নিলো আজ সকালের চাও পচে গেছে। সেকারণে লেবুর পাতা ছিঁড়ে আনতে চলে যায় বাড়ির শেষ সীমানায়। আসার সময় একটা সাপ ওর পাশ কেটে চলে যায়। সাপ দেখে ভয় পেলেও চেঁচামেচি না করে ফিরে আসে রান্না ঘরে। এরপর আচ্ছা করে কয়েকটা লেবুর পাতা ছিঁড়ে দেয় চায়ের পাতিলে।<br> প্রতিদিনের মত যার যার ঘরে গিয়ে চাবতী চা দিয়ে আসে। বড় মিয়াকে চায়ের সাথে এক বাটি মুড়িও দিতে হয়। খালি পেটে তিনি চা খেতে পারেন না। গ্যাস্ট্রিক আলসার আছে। <br> চা শেষ করে এতক্ষণে সবার উঠানে চলে আসার কথা। কিন্তু কাউকে উঠানে দেখা গেল না। অথচ যার যার ঘর থেকে এখন কাপগুলো নিয়ে আসত হবে। যারা স্কুলে যাবে তাঁদের নাস্তা দিতে হবে। বড় মামাকে গরম ভাত রান্না করে দিতে হয় প্রতি সকালে। তিনি বাসি খেতে পারে না। ছোট মামীর জন্য হলুদ বাটতে হবে। রোজ সকালে হলুদ মেখে তার গোসল করার অভ্যাস। এসব কাজ এক হাতেই করতে হয় চাবতীকে। <br> দুপুরের মধ্যে বাড়িতে পুলিশ চলে আসে। চাবতীকে হাতকড়া পড়িয়ে তারা থানায় নিয়ে যায়। একে একে পাঁচটা লাশ তোলা হয় ভ্যান গাড়িতে। আলামত হিসেবে নেওয়া হয় চায়ের পাতিল ও খালি কাপগুলো। <br> চোখ ফুলিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চাবতী যখন উঠানে এসে দাঁড়ায় তখন কতগুলো বাচ্চা ছেলে একটা সাপকে ধাওয়া করতে করতে নিয়ে যায় বাড়ির পেছনের জঙ্গলে। <br> থানায় এসে চাবতী জবানবন্দি দিতে শুরু করেছে। যিনি ইনস্পেক্টর&comma; তিনি খুব নরম সুরে প্রশ্ন করেন&comma; <br> তুমি কী শুধুই রান্নাবান্না কর নাকি ওরা তোমাকে স্কুলেও ভর্তি করে দিয়েছে&quest;<br> চাবতী বলে&comma; মা মারা যাবার আগে বড় মিয়াকে বলেছিল মেয়েটার বাবা নাই। অল্প বয়সে মারা গেছে। ওর বাবা সারাজীবন আপনাদের বাড়িতে রাখালের কাজ করছে। আমিও বেশিদিন বাঁচবো না। যদি মইরা যাই আমার মেয়েটারে আপনি স্কুলে ভর্তি কইরা দিয়েন। আমার মেয়ে বই হাতে স্কুলে যাইব এই দৃশ্য উপর থাইকা দেইখা আমি খুশি হমু। কিন্তু বড় মিয়া আমারে স্কুলে ভর্তি করে নাই। <br> ইনস্পেক্টর জিজ্ঞেস করে তোমার বয়স কত&quest; <br> নড়াচড়া করতে করতে চাবতী উত্তর দেয় এগারো। <br> ইনস্পেক্টরের হাত ব্যস্ত। মুখে মুখেই আবোলতাবোল প্রশ্ন করে যাচ্ছে।<br> কতদিন থেকে চা বানাও&quest; <br> ছোট কাল থেকে<br> এমন সময় থানার মধ্যে হৈ চৈ শুরু হয়ে যায়। সাপ সাপ সাপ। <br> ইনস্পেক্টর সবে মাত্র তার প্যান্টের চেইন খুলেছিল। বন্ধ করারও সময় পেল না। সেও দিকবেদিক দৌড়াতে শুরু করে। <br> ব্যথা উপশমের জন্য চাবতী নিজের হাত দিয়ে বুকের বাম পাশটা ডলতে থাকে। সেই কখন থেকে তার চোখ গড়িয়ে চায়ের পানির মত গরম জল পড়ছে। এতক্ষণে সে একটু সোজা হয়ে বসতে পারল। <&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version